আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২২ ১০:৩১ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৩৯৯ বার
দৃশ্যত শান্তিরক্ষী মিশনের অংশ হিসেবে এবং আট বছর আগে ভেঙ্গে যাওয়া দুটি প্রজাতন্ত্রকে রক্ষার লক্ষ্যে মঙ্গলবার রাতে রাশিয়ার ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া বহর পূর্বাঞ্চলীয় ইউক্রেনে প্রবেশ করেছে। মস্কো বর্তমানে এই দুটি প্রজাতন্ত্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন রাষ্ট্র বলে স্বীকৃতি দিচ্ছে।
পাশ্চাত্যের কূটনীতিকেরা এবং পূর্বাঞ্চলীয় ডনেস্কের বাসিন্দারা মঙ্গলবার রাতে সেখানে রাশিয়ার ট্যাঙ্কের উপস্থিতি নিশ্চিত করেছেন।
ইউক্রেনকে কেন্দ্র করে কয়েক মাস ধরে চলা ভূ-রাজনৈতিক অচলাবস্থা আরো বিপজ্জনক মোড় নেয়ার প্রেক্ষাপটে এ ঘটনা ঘটছে। এদিকে পাশ্চাত্য দেশগুলো সম্মিলিতভাবে নিন্দায় শামিল হচ্ছে এবং অন্যান্য দেশের সরকার তাদের কূটনীতিকদের কিয়েভ ত্যাগ করে পোলিশ সীমান্তের কাছে পশ্চিমাঞ্চলীয় লেভিভে সরে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। এর মধ্য দিয়েই তাদের ক্রবর্ধমান আশঙ্কাব্যক্ত হচ্ছে যে ইউক্রেন সীমান্তে মোতায়েনরত রুশ বাহিনীকে ইউক্রেনের রাজধানী দখলের নির্দেশ হয়তোবা শিগগিরই দেয়া হবে।
অস্ট্রেলিয়া সর্বশেষ দেশ হিসেবে তাদের মিশন সরিয়ে নিলো। তারা যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও অন্যদের মতো তাদের, রাষ্ট্রদূত ও মিশনকর্মীদের নিরাপদে পাশের পোল্যান্ডে সরিয়ে নিচ্ছে।
নির্ধারিত সময়ের দু'ঘন্টা পরে টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি ইউক্রেনের জনগণকে পুনরায় আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, তার দেশ সুরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে, আরো রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের নিজেকে রক্ষা করার অধিকার রয়েছে।
জেলেন্সকি বলেন, 'আমরা আমাদের ভূমিতে, আমরা কারো জন্য বা কোনো কিছুতে ভীত নই।'
পাশ্চাত্যের দেশগুলোর নেতারা রাশিয়ার হুমকির জবাব কিভাবে দেয়া হবে এবং কী করে তাদের পদক্ষেপের সমন্বয় ঘটানো যায় তা নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। তাদের এখনো আশা যে কূটনীতির মাধ্যমে এর সুরাহা হতে পারে। ইইউ কর্মকর্তারা ভাবছেন, পুতিনকে ফুসলিয়ে কিংবা নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়ে সংযত করা যেতে পারে; তবে কূটনৈতিক পদ্ধতি যে কাজ করবে সে আশা দ্রুতই ম্লান হয়ে আসছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানায়, যারা এই অবৈধ কাজে নিয়োজিত তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। ন্যাটোর মহাসচিব জেন্স স্টলটেনবার্গ রাশিয়াকে পূর্বাঞ্চলীয় ইউক্রেনের সঙ্ঘাতে মদদ জোগানোর জন্য এবং আরো হামলার অজুহাত খোঁজার জন্য দোষারোপ করেন।
বিচ্ছিন্ন প্রজাতন্ত্রগুলোকে স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে পুতিন বলেছেন, ইউক্রেন রাশিয়ার ইতিহাসে একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং পূর্বাঞ্চলীয় ইউক্রেন প্রাচীন রাশিয়ার একটি অঞ্চল।
পুতিন তার ভাষণে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোকে নির্লজ্জভাবে ইউক্রেনকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করার জন্য দোষারোপ করেন। তিনি কোনো রকম প্রমাণ ছাড়াই এ রকম দাবিও উত্থাপন করেন যে ইউক্রেন পরমাণু অস্ত্র নির্মাণের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, যা তারা রাশিয়াকে হামলা করতে ব্যবহার করতে পারে।
সীমান্ত বরাবর ইউক্রেনের সেনাবাহিনীকে গোলাগুলি বা আর্টিলারি বোমা হামলার জবাব না দেয়ার কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকেরা বলছেন যে এই পরিস্থিতি গত সপ্তাহে নাটকীয়ভাবে আরো ঘনীভূত হয়েছে। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন, রাশিয়া আরো বড় মাপের অভিযান চালাতে সঙ্ঘাতকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।
সূত্র : ভয়েস অফ আমেরিকা