আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ মার্চ, ২০২২ ২১:৫৩ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৫৬৯ বার
চার কোটি ৪০ লাখ মানুষের একটি গণতান্ত্রিক দেশে হামলার মাধ্যমে যখন ভ্লাদিমির পুতিন ইউরোপের শান্তি ছিন্নভিন্ন করে দিলেন, তখন তার দাবি ছিল যে, আধুনিক ও পশ্চিম-ঘনিষ্ঠ ইউক্রেন রাশিয়ার নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
কিন্তু চার সপ্তাহ ধরে বোমাবর্ষণ, হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু আর লাখ লাখ মানুষের ঘরবাড়ি হারিয়ে শরণার্থী হওয়ার পর প্রশ্ন রয়ে গেছে, যুদ্ধের পেছনে রাশিয়ার উদ্দেশ্য আসলে কী? এ থেকে বেরিয়ে আসার কোনো পথ কি আছে?
কেন হামলা চালালেন ভ্লাদিমির পুতিন?
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা চালানোর আগে ভ্লাদিমির পুতিন হয়তো ভেবেছিলেন যে, তিনি সহজেই যুদ্ধে জয় পাবেন, কিন্তু তা হয়নি। তিনি এমনকি একে হামলা বা যুদ্ধ বলে মানতেও রাজি হননি, এর নাম দিয়েছিলেন ‘স্পেশাল মিলিটারি অপারেশন’ বা বিশেষ সামরিক অভিযান।
তবে এটা পরিষ্কার যে, একে তিনি রাশিয়ার ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় বলে দেখেছেন।
রাশিয়ার বৈদেশিক গোয়েন্দা দফতরের প্রধান সের্গেই নারাস্কিন বলেছেন, ‘রাশিয়ার ভবিষ্যৎ এবং বিশ্বে রাশিয়ার অবস্থান এখন ঝুঁকিতে পড়েছে।'
রাশিয়ার নেতা ভ্লাদিমির পুতিনের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল ইউক্রেন দখল করে নেয়া এবং এর শাসন ক্ষমতায় পরিবর্তন আনা, যাতে তারা আর কখনো পশ্চিমা সামরিক জোট নেটোতে যোগ দেয়ার আগ্রহ না দেখায়।
ভ্লাদিমির পুতিন রাশিয়ার জনগণের উদ্দেশ্যে দেয়া বক্তব্যে বলেছেন, তার উদ্দেশ্য হচ্ছে, ‘ইউক্রেনের নিরস্ত্রীকরণ এবং নাৎসি মুক্ত করা।' তার দাবি, এর মাধ্যমে আট বছর ধরে ইউক্রেনের সরকারের নির্যাতন ও গণহত্যা থেকে মানুষজনকে মুক্ত করা হচ্ছে। ইউক্রেন দখল করে রাখা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। আমরা গায়ের জোরে কোন কিছু বা কাউকে অপসারণ করতে চাই না।
কিন্তু ইউক্রেনে কোনো নাৎসি নেই বা গণহত্যার কোনো ঘটনাও ঘটেনি। বরং ইউক্রেনের শত শত নগর ও শহরের ওপর নিষ্ঠুরভাবে শক্তি প্রয়োগ করছে রাশিয়া। ইউক্রেনের মানুষজনও ঐক্যবদ্ধভাবে রাশিয়ার এই দখলদারিত্বের প্রতিবাদ করছে।
বোমাবর্ষণ চলছেই কিন্তু সর্বশেষ শান্তি আলোচনা থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে, রাশিয়া আর ইউক্রেনের সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে আগ্রহী নয়। বরং তারা এখন ইউক্রেনকে নিরপেক্ষ একটি দেশ হিসাবে দেখতে ইচ্ছুক।
ইউক্রেনকে কেন নিরপেক্ষ দেশ হিসেবে দেখতে চায় রাশিয়া?
সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর, ১৯৯১ সালে ইউক্রেন স্বাধীনতা পাওয়ার পর থেকে দেশটি ক্রমেই পশ্চিমা দেশগুলোর ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছে-বিশেষ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও নেটোর। রাশিয়ার নেতা ভ্লাদিমির পুতিন সেটির পরিবর্তন চান।
সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনকে তিনি ‘ঐতিহাসিক রাশিয়ার বিচ্ছিন্নতা' বলে দেখেন।
তিনি দাবি করেন, রাশিয়া আর ইউক্রেনের মানুষ ‘এক জাতি'। তিনি ইউক্রেনের ইতিহাস অস্বীকার করে জোর দিয়ে বলেছেন, ‘ইউক্রেন কখনোই প্রকৃত রাষ্ট্র ছিল না।'
২০১৩ সালে রাশিয়া পন্থী ভিক্টর ইয়ানুকোভিচের ওপর তিনি চাপ তৈরি করেছিলেন যেন তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর না করেন। সেই ঘটনার জের ধরে প্রতিবাদ বিক্ষোভ শুরু হলে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন।
সেই বছরই ইউক্রেনের দক্ষিণের এলাকা ক্রাইমিয়াকে সংযুক্ত করে পাল্টা জবাব দেয় রাশিয়া। সেই সাথে পূর্বাঞ্চলের দু’টি এলাকায় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিদ্রোহে সমর্থন দেয়। সেই থেকে ইউক্রেনের বাহিনীর সাথে আট বছর ধরে লড়াই চলছে, যে লড়াইয়ে ১৪,০০০ মানুষের প্রাণ গিয়েছে।
এ নিয়ে একটি যুদ্ধবিরতি হয়েছিল। ২০১৫ সালে মিনস্ক শান্তি চুক্তি, কিন্তু তা কখনোই কার্যকর হয়নি।
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার আগে আগে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত দুটি এলাকাকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে ওই শান্তি চুক্তি ছিঁড়ে ফেলেন প্রেসিডেন্ট পুতিন।
সৈন্য পাঠানোর সময় তিনি নেটোর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন যে, ‘জাতি হিসাবে আমাদের ঐতিহাসিক ভবিষ্যতকে' হুমকিতে ফেলেছে। কোনো রকম তথ্য প্রমাণ ছাড়াই তিনি দাবি করেন, নেটো দেশগুলো ক্রাইমিয়ায় যুদ্ধ ডেকে আনতে চায়।
যুদ্ধ থেকে বেরিয়ে আসার কী কোনো পথ আছে?
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের একজন পরামর্শক মিখাইলো পোডোলায়াক বিশ্বাস করেন, আগামী কয়েকদিন মধ্যেই একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। কারণ রাশিয়ার সৈন্যরা তাদের বর্তমান অবস্থানে আটকে গেছে।
আলোচনায় উভয় পক্ষই ইতিবাচকভাবে কথা বলছে।
পোডায়ালাক বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তার দাবি দাওয়ার বিষয়ে নমনীয় হয়েছেন।
যুদ্ধের শুরুতে রাশিয়ার নেতা চেয়েছিলেন যেন ক্রাইমিয়াকে রাশিয়ার অংশ হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া হয় এবং বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত দু’টি এলাকার স্বাধীনতাকে মেনে নেয়া হয়। সংবিধান সংশোধন করে ইউক্রেনকে এই নিশ্চয়তা দিতে হবে যে, তারা কখনো নেটো বা ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দেবে না।
তবে রাশিয়া সমর্থিত বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত লুহানস্ক এবং দোনেৎস্ক-এর ভবিষ্যৎ কি হবে, তা নিয়ে এখনো কোনো সমঝোতা হয়নি। কিন্তু দুই পক্ষ যদি বিষয়টি নিয়ে পরবর্তীতে আলোচনা করতে চায়, তা নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না।
রাশিয়ার আচরণে মনে হচ্ছে যে, ইউক্রেনের সরকারকে উৎখাত করে বেলারুশের মতো সেখানে পুতুল সরকার বসাতে পারবে না, সেটা তারা মেনে নিয়েছে।
যুদ্ধের শুরুতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদামির জেলেনস্কি বলেছিলেন, ‘শত্রুরা আমাকে এক নম্বর লক্ষ্যবস্তু করেছে, আমার পরিবার দুই নম্বর লক্ষ্যবস্তু।'
কার্নেগি মস্কো সেন্টার এবং আরপোলিটিক এর বিশ্লেষক তাতিয়ানা স্তানোভায়া বলছেন, ‘মনে হচ্ছে ভ্লাদিমির পুতিনকে দাবি-দাওয়ার অনেক ছোট তালিকায় সম্মত হতে হবে।'
কারণ রাশিয়া এখন ইউক্রেনকে তার সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীসহ অস্ট্রিয়া বা সুইডেনের মতো একটি ‘নিরপেক্ষ, নিরস্ত্র' দেশ হিসাবে মেনে নেয়ার বিষয়ে বিবেচনা করছে। দু’টি দেশই ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য।
অস্ট্রিয়া নিরপেক্ষ দেশ, তবে সুইডেন নয়। সুইডেন যদিও কোনো জোটভুক্ত নয়, তবে সেদেশে নিয়মিত নেটোর সামরিক মহড়া হয়ে থাকে।
রাশিয়া সরল বিশ্বাসে আলোচনা করছে, এমনটা সবাই মনে করেন না। ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, মস্কোকে আগে ‘যুদ্ধবিরতি' ঘোষণা করতে হবে। কারণ মাথার ওপর বন্দুক ধরে রেখে আপনি আলোচনা চালাতে পারেন না।
ইউক্রেনের দাবি কী?
ইউক্রেনের চাওয়া পরিষ্কার, যুদ্ধবিরতি এবং ইউক্রেন থেকে রাশিয়ার সৈন্য প্রত্যাহার, বলছেন প্রেসিডেন্টের পরামর্শক মিখাইলো পোডোলায়াক। সেই সাথে ইউক্রেনের নিরাপত্তার ব্যাপারে আইনি নিশ্চয়তা দিতে হবে যে, ইউক্রেনের ওপর যেকোনো হামলা তারা প্রতিরোধ করবে এবং আক্রান্ত হলে ইউক্রেনের পক্ষে অবস্থান নেবে।
আন্তর্জাতিক আইন বিষয়ক অধ্যাপক ও জাতিসঙ্ঘের সাবেক মধ্যস্থতা বিশেষজ্ঞ মার্ক ওয়েলার বলছেন, ‘রাশিয়ার সৈন্যদের যুদ্ধ-পূর্ব অবস্থায় ফিরিয়ে নেয়ার দাবি শুধুমাত্র ইউক্রেনের একার নয়, পশ্চিমা দেশগুলোও এই দাবি করছে। তারা কেউ রাশিয়ার আরেকটি ঠাণ্ডা যুদ্ধের শিকার হতে চায় না।'
রাশিয়ার হামলার পর নিজেদের অবস্থান নরম করেছে ইউক্রেনও। দেশটির প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, ‘ইউক্রেন এখন উপলব্ধি করছে যে, নেটো তাদের সদস্য হিসাবে নেবে না। এটাই সত্যি আর এটা মেনে নিতে হবে।'
পোডোলায়াক বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট যাতে এই বিষয়ে আরো আলোচনা করতে পারেন এবং (চুক্তিতে) স্বাক্ষর করতে পারেন, আমরা সেসব নথিপত্র তৈরি করতে কাজ করছি। অবশ্যই এটা একপর্যায়ে আসবে, কারণ যুদ্ধের সমাপ্তি টানার এটাই একমাত্র উপায়।'
নেটোর সাথে কি সমঝোতা করবেন পুতিন?
পশ্চিমা দেশগুলো এবং ৩০টি দেশের সামরিক জোটের প্রতি অপছন্দের কথা দ্বিগুণ প্রকাশ করেছেন রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট। তিনি হয়তো ইউক্রেনের সাথে সমঝোতার কথা চিন্তা করতে পারেন। কিন্তু তিনি মনে করেন, পশ্চিমা দেশগুলোর উদ্দেশ্য একটাই-রাশিয়ার সমাজে বিভক্তি বাড়ানো, শেষ পর্যন্ত তা ধ্বংস করে দেয়া।
যুদ্ধ শুরুর আগে তিনি দাবি করেছিলেন, নেটোকে ১৯৯৭ সাল পূর্ব অবস্থায় ফিরে যেতে হবে এবং পূর্ব ইউরোপে যে বিস্তার ঘটেছে, তা ফিরিয়ে নিতে হবে। সেই সাথে ১৯৯৭ সালের পর যেসব দেশ নেটোতে যোগ দিয়েছে, সেসব দেশ থেকে সৈন্য ও সামরিক স্থাপনা সরিয়ে নিতে হবে।
রাশিয়ার সীমান্ত এলাকায় কোনো মারণাস্ত্র মোতায়েন করা যাবে না। মধ্য ইউরোপ, পূর্ব ইউরোপ এবং বাল্টিক দেশগুলো এই আওতায় পড়বে।
প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, ১৯৯০ সালে পশ্চিমা দেশগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, নেটো এক ইঞ্চিও বিস্তার ঘটাবে না, কিন্তু তা করেছে।
সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের ঠিক আগে আগে তৎকালীন সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্বাচেভকে এই প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। যার মাধ্যমে আসলে পূর্ব জার্মানি প্রসঙ্গে বলা হয়েছিল। পরবর্তীতে গর্বাচেভ বলেছিলেন, নেটোর বিস্তার প্রসঙ্গে সেই সময় কোনো আলোচনা হয়নি।
লক্ষ্য অর্জনের জন্য ইউরোপীয় শহরগুলোকে নষ্ট করতে ভ্লাদিমির পুতিনের ইচ্ছার প্রত্যক্ষদর্শী হওয়ার পর তার ব্যাপারে পশ্চিমা নেতাদের আর কোনো বিভ্রান্তি নেই।
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ বিশ্বাস করেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন পুরো ইউরোপ দখলে নিতে চান। আর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাকে একজন যুদ্ধাপরাধী বলে বর্ণনা করেছেন।
যুদ্ধ শুরুর আগে রাশিয়া দাবি করেছিল, যুক্তরাষ্ট্রের সকল পারমাণবিক অস্ত্র তাদের দেশের সীমানার ভেতর নিয়ে যেতে হবে। স্বল্প আর মধ্যম পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সীমিতকরণের বিষয়ে আলোচনা শুরুর প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সেই সাথে আন্তঃ মহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের বিষয়ে নতুন একটি চুক্তি হবে। কিন্তু এসব বিষয়ে কোনো আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা এখন খুবই ক্ষীণ।
সব মিলিয়ে নতুন করে আবার স্নায়ু যুদ্ধের আশঙ্কা করছেন তাতিয়ানা স্তানোভায়া।
তিনি বলছেন, ‘আমার মনে হচ্ছে, পশ্চিমা দেশগুলোর নতুন হুমকি মোকাবেলার প্রস্তুতি নেয়া শুরু করা উচিত, যার মাধ্যমে হয়তো ধারণার চেয়েও অনেক বেশি সামরিকীকরণ এবং আগ্রাসন আমরা দেখতে পাবো।'
রাশিয়ার জন্য পরবর্তীতে কী অপেক্ষা করছে?
ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর পশ্চিমা দেশগুলো যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, তাতে হতবাক হয়ে গেছেন ভ্লাদিমির পুতিন।
তিনি জানেন, নেটো সদস্যরা কখনোই ইউক্রেনে আসবে না। কিন্তু যে মাত্রায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, তা হয়তো তিনি ভাবেননি। এসব নিষেধাজ্ঞা এর মধ্যেই রাশিয়ার অর্থনীতিতে নাটকীয় প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। ফলে প্রেসিডেন্ট পুতিন ক্ষেপে গেছেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডা রাশিয়ার অর্থনীতিকে নানাভাবে লক্ষ্যবস্তু করেছে-
রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্পদ জব্দ করা হয়েছে এবং অনেকগুলো ব্যাংককে আন্তর্জাতিক লেনদেন ব্যবস্থা সুইফট থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে।
রাশিয়ার তেল ও গ্যাসের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বছরের মধ্যেই রাশিয়া থেকে গ্যাসের আমদানি দুই তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনতে লক্ষ্য ঠিক করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। যুক্তরাজ্য ২০২২ সাল শেষ হওয়ার আগেই রাশিয়ার তেলের ওপর নির্ভরশীলতা বন্ধ করতে চায়।
রাশিয়ার নর্ড স্ট্রিম-২ গ্যাস পাইপলাইনের অনুমোদন স্থগিত করেছে জার্মানি।
রাশিয়ার বিমানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডা।
প্রেসিডেন্ট পুতিন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ ও অনেক ব্যক্তির ওপর আলাদাভাবে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
ইউক্রেনের সাথে কোনো শান্তি চুক্তিই এসব নিষেধাজ্ঞার অবসান ঘটাতে পারবে না। ভ্লাদিমির পুতিন নিজেও সেটা জানেন। বরং রাশিয়ার যারা যুদ্ধের বিরোধিতা করছে, তিনি তাদের ওপর চড়াও হয়েছেন।
রাশিয়ায় যুদ্ধ বিরোধী বিক্ষোভকারী প্রায় ১৫,০০০ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। স্বাধীন সব গণমাধ্যমকে চুপ করিয়ে দেয়া হয়েছে।
রাশিয়ায় এখন কার্যকর কোনো বিরোধী নেই। তারা হয় বিদেশে পালিয়ে গেছেন অথবা বিরোধী নেতা অ্যালেক্সি নাভালিনি সংক্রান্ত মামলায় কারারুদ্ধ হয়েছেন।
‘রাশিয়ার জনগণ সবসময়েই নোংরা ও বিশ্বাসঘাতকদের সাথে সত্যিকারের দেশপ্রেমিকদের পার্থক্য করতে জানে’ বলেছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
সূত্র : বিবিসি