ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০ এপ্রিল, ২০২২ ১৫:০১ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৪৮৫ বার
সরকার আন্তর্জাতিকভাবে প্রবল চাপের মুখে পড়ে এক অজানা আতঙ্কে ভূগছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, দুর্নীতিগ্রস্ত এই অবৈধ সরকার দেশকে এমন এক খাদের প্রান্তে নিয়ে গেছে। সেখান থেকে সরে আসার কোনো সুযোগ নাই। এ জন্য বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে রমজানেও মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতারের হিড়িক শুরু করেছে।
অবৈধ সরকার আন্তর্জাতিকভাবে প্রবল চাপের মুখে পড়ে এখন দেশের বিরোধী দলকে উচ্ছেদ করার জন্য মহাপরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করেছে।
রোববার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজভী।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আজ চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির প্রবাসী কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক মিথ্যা মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে গেলে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এছাড়া হবিগঞ্জ জেলাধীন লাখাই উপজেলা বিএনপির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দলের আহ্বায়ক সুমন ভুঁইয়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ গাফ্ফার এবং ঢাকা মহানগর কোতোয়ালী থানা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক মো: গিয়াস সিকদারকে গতরাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এছাড়াও ফেনী জেলাধীন সোনাগাজী উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সোহাগ নুরের ওপর ছাত্রলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে তাকে গুরুতর আহত করেছে। সে এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘হিংসা, সন্ত্রাসবাদ, বিরোধী দলের ওপর নিপীড়ণ-নির্যাতন, নিজেদের স্বার্থসর্বস্বতাসহ হরেক কিসিমের অনাচারে দেশকে ভরিয়ে তুলেছে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা, উদার মনোভাব, সকলের একত্রিকরণ, বিনা বাধায় নিজের পছন্দমতো বিশ্বাস নিয়ে চলার অধিকার হরণ করেছে এই আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী। সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে হিটলারের গ্যাস চেম্বারের ন্যায় বিষাক্ত চেম্বারে ঢুকিয়ে রাখতেই যেন তারা সকল শক্তি প্রয়োগ করছে। আওয়ামী সরকারের সহিংস উন্মত্ততা তাদের শাসনের ছত্রে ছত্রে উপস্থিতি দৃশ্যমান। এরা গণতন্ত্রের চিরকালীন পথরেখার মধ্যে গভীর গর্ত সৃষ্টি করে এক ভয়ংকর স্বৈরাচারের যে বৃত্ত তৈরি করেছে। এই স্বৈরাচারের বৃত্ত এখন সর্বনাশা নাৎসীবাদে আত্মপ্রকাশ করেছে।
রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনা মনে করছেন বিএনপির নিরপরাধ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে নিজের ক্ষমতা কন্টকমুক্ত রাখা যাবে। কিন্তু তার এই ধারণা অমুলক। চারদিকে দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি, দেশের সম্পদ লুণ্ঠনের পথ খুলে দেয়া, বিনা টেন্ডারে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পকেটে জমা করা, ছাত্রলীগ-যুবলীগের মানুষ হত্যায় আওয়ামী শাসকগোষ্ঠীর দারুণ উল্লসিত হওয়া, দুর্নীতি ও হানাহানীতে ক্লেদাক্ত সমাজ নির্মাণ, পানি-বিদ্যুৎ ও জালানী খাতে অস্থিরতা ও অরাজকতা, এর সাথে চলছে গ্রাহকদের পকেট কাটার মহৌৎসব। কিন্তু এসব অপকর্ম করে শেখ হাসিনা তার সাধের ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবেন না। গণতন্ত্রকে হত্যা করে আর ক্ষমতায় থাকা যাবে না।
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘চারিদিকে সরকার পতনের আওয়াজ উঠছে। বিশ্ববিবেক ও জনগণকে ধোকা দিয়ে ও জুলুম নির্যাতন চালিয়ে ক্ষমতা এক্সটেনশনের রাস্তা বন্ধ। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে গণতন্ত্র পূণ:রুদ্ধার হবে এবং দেশে শক্তিশালী একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
রিজভী বলেন, ‘এই আওয়ামী লীগ তত্তাবধায়ক সরকার কায়েমের জন্য দিনের পর দিন হরতাল, ধ্বংসাত্মক জ্বালাও-পোড়াও, কাটো-মারো কর্মসূচি চালিয়েছিল সেই তারাই আবার গায়ের জোরে তা সংবিধান থেকে মুছে দিয়ে ভোট নির্বাচনকেও বাকশালীকরণ করে কলঙ্ক রচনা করেছে। এই কলঙ্কের তীব্রতা এতটাই বেশি যে, তা ছাইচাপা আগুনের মতো আর লুকোনা থাকবে না। তাদের সকল কেলেঙ্কারি উন্মেচিত হয়ে পড়ায় এরা জনদৃষ্টি দিকভ্রান্ত করার জন্যই রমজান মাসেও নতুন করে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
তিনি অবিলম্বে চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির প্রবাসী কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক, হবিগঞ্জ জেলাধীন লাখাই উপজেলা বিএনপির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দলের আহ্বায়ক সুমন ভুঁইয়াসহ গ্রেফতারকৃত নেতৃবৃন্দের মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা প্রত্যাহার এবং তাদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, কৃষক দলের যুগ্ম-সম্পাদক কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।