আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল, ২০২২ ১১:০১ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৪৭৬ বার
২০২১ সালে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্ষিক প্রতিবেদন মঙ্গলবার প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিপীড়ন ও দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও ব্যাপকভাবে দায়মুক্তি ভোগ করে আসছে বলে খবর রয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক নিপীড়ন, হত্যা ও দুর্নীতির খুব কম সংখ্যক ঘটনায় তদন্ত ও বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বলছে, বাংলাদেশের সংবিধানে একটি সংসদীয় পদ্ধতির সরকার ব্যবস্থা রয়েছে; যার অধিকাংশ ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ন্যাস্ত।
২০১৮ সালের সংসদীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনা এবং তার আওয়ামী লীগ দল টানা তৃতীয়বার পাঁচ বছরের মেয়াদে জয়লাভ করে।
ব্যালট-বাক্স ভর্তি এবং বিরোধী পোলিং এজেন্ট ও ভোটারদের ভয় দেখানোসহ অনিয়মের কারণে এই নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের দ্বারা অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ ও র্যাব ছাড়াও সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি) দায়িত্ব পালন করে থাকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে রয়েছে। এই বাহিনীর ওপরে বেসামরিক কর্তৃপক্ষ ব্যাপকভাবে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নানা ধরনের নিপীড়ন চালিয়ে থাকেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতায়নের সময়সীমায় বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের দাবি করা হয়েছে।
এগুলো হলো - বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, বেআইনি বা নির্বিচারে হত্যা, গুম, সরকারের পক্ষ থেকে বা তার এজেন্টদের দ্বারা নাগরিকদের নির্যাতন, অমানবিক বা অবমাননাকর আচরণ বা শাস্তির নির্যাতন বা মামলা, কারাগারে জীবনের জন্য হুমকি সৃষ্টিকারী পরিবেশ, নির্বিচারে গ্রেফতার বা আটক, রাজনৈতিক বন্দী, অন্য দেশে অবস্থানরত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিশোধ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় বাধা, ব্যক্তিগত গোপনীয়তার ওপর স্বেচ্ছাচারী বা বেআইনী হস্তক্ষেপ, একজন ব্যক্তির দ্বারা অভিযুক্ত অপরাধের জন্য পরিবারের সদস্যদের শাস্তি, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বা সহিংসতার হুমকি, সাংবাদিকদের অযৌক্তিক গ্রেফতার বা বিচার, বাকস্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের ওপর গুরুতর বিধিনিষেধ, ইন্টারনেট স্বাধীনতার উপর গুরুতর নিষেধাজ্ঞা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা এবং সমিতির স্বাধীনতার সাথে উল্লেখযোগ্য হস্তক্ষেপ, যার মধ্যে রয়েছে সংগঠন, তহবিল বা বেসরকারি সংস্থা ও সুশীল সমাজ সংগঠনের ওপর বিধিনিষেধমূলক আইন।
এ ছাড়া শরণার্থীদের চলাফেরার স্বাধীনতার উপর বিধিনিষেধ, উদ্বাস্তুদের সাথে দুর্ব্যবহার, রাজনৈতিক দলগুলোর উপর গুরুতর এবং অযৌক্তিক বিধিনিষেধ, সরকারি দুর্নীতি; দেশীয় মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে হয়রানি বা সেগুলোর ওপর বিধিনিষেধ, লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতার জন্য তদন্তের অভাব এবং জবাবদিহিতার অভাব, যার মধ্যে গৃহনির্যাতন এবং অন্তরঙ্গ সঙ্গীর সহিংসতা, যৌন সহিংসতা, শিশু নির্যাতন, বাল্য ও জোরপূর্বক বিয়েসহ এবং অন্যান্য ক্ষতিকারক চর্চাগুলো রয়েছে।
ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর সদস্যদের ওপর সহিংসতা ও হুমকি, লেসবিয়ান, গে, উভকামী, ট্রান্সজেন্ডার, কুইয়ার, বা ইন্টারসেক্স ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সহিংসতার হুমকি, প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে সম্মতিমূলক সমলিঙ্গের যৌন আচরণকে অপরাধী করে এমন আইনের অস্তিত্ব বা ব্যবহার, স্বাধীন ট্রেড ইউনিয়ন এবং শ্রমিকদের সংগঠনের স্বাধীনতার উপর উল্লেখযোগ্য বিধিনিষেধ এবং শিশুশ্রমের সবচেয়ে খারাপ রূপের অস্তিত্ব।