ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১১ মে, ২০২২ ১০:০২ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৪৭২ বার
রেটিনার রক্তনালীজনিত সমস্যার মধ্যে ডায়াবেটিসের পরেই রক্তনালীর ব্লকজনিত সমস্যার অবস্থান। রক্তনালী ব্লক শিরা এবং ধমনী দু’টিতেই হতে পারে। সেটি আবার রেটিনার প্রধান শিরা বা ধমনী অর্থাৎ সেন্ট্রাল রেটিনাল আর্টারি এবং সেন্ট্রাল রেটিনাল ভেইন ব্লক হতে পারে অথবা কোনো শাখা অথবা ক্যাপিলারি বা ভেনিউলে ব্লক হতে পারে। হার্টের রক্তনালীর ব্লকের ব্যাপারে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত। রেটিনার রক্তনালীর ব্লকও একই প্রক্রিয়ায় হয়ে থাকে। রেটিনার রক্তনালী ব্লক হওয়ার প্রক্রিয়া ও এর প্রভাব- দেহের বিভিন্ন অঙ্গে রক্তনালীর ব্লকের প্রক্রিয়া প্রায় একই রকম।
জমাট রক্ত বা ব্লাড ক্লটকে বলা হয় থ্রোমবাস; জমাট লিপিড বা কোলেস্টেরেলকে বলা হয় এমবোলাস। থ্রোমবাস বা এমবোলাস যে কোনোটি যখন শিরা বা ধমনীকে কোনো জায়গায় ব্লক করে দেয় তখন ওই জায়গায় রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হয়ে অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এটিকে বলা হয় স্ট্রোক। মস্তিষ্কের মতো রেটিনাতেও স্ট্রোক হতে পারে। নার্ভ সেল বা নিউরনকে বেঁচে থাকার জন্য নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহ আবশ্যক। সাময়িক রক্ত বা অক্সিজেন সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় নার্ভ সেল বা নিউরন নষ্ট হয়ে যায়। দেহের যেকোনো স্নায়ু একবার নষ্ট হয়ে গেলে সেটি স্থায়ীভাবে নষ্ট হয়ে যায়। এর আর পুনর্গঠন সম্ভব নয়।
রেটিনাতে রক্তনালী ব্লক বা স্ট্রোক দুই ধরনের-
- শিরা ব্লক বা আর্টারিয়াল অক্লুশন-সেন্ট্রাল রেটিনাল আর্টারি বা এর কোনো শাখা ব্লক হতে পারে।
- ধমনী ব্লক বা ভেনাস অক্লুশন-সেন্ট্রাল রেটিনাল ভেইন ব্লক বা এর কোনো শাখা ব্লক হতে পারে।
রেটিনার রক্তনালী ব্লকের কারণ-
- শিরা ব্লক হওয়ার প্রধান কারণ হলো থ্রোমবাস বা জমাট রক্ত বা ব্লাড ক্লট এবং জমাট লিপিড ও কোলেস্টেরেল এমবোলাস। থ্রোমবাস ও এমবোলাসের প্রধান উৎস হলো হার্ট বা বার্ট বাল্ব এবং শিরায় এথিরোসেক্লরোসিস।
- ধমনী বন্ধ হওয়ার প্রধান কারণ হলো শিরায় এথিরোসেক্লরোসিস। এথিরোসেক্লরোসিসের কারণে শিরার গা পুরু ও শক্ত হয়ে যায় এবং এটি ধমনীকে সরাসরি চেপে ধরার কারণে ধমনী বন্ধ হয়ে যায়।
- রিস্ক ফেক্টর বা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা- রক্তনালী বন্ধ হওয়ার অনেক রিস্ক ফেক্টরের মধ্যে নিম্নোক্ত কয়টি উল্লেখযোগ্য-
- এথিরোসেক্লরোসিস
- বার্ধক্য-
- উচ্চ রক্তচাপ
- হাইপার-লিপিডেমিয়া বা উচ্চমাত্রায় কোলেস্টেরেল
- ডায়াবেটিস
- ধূমপান
- জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি সেবন
- গ্লোকুমা।
- রক্তের নিজস্ব সমস্যা যেমন থেলাসেমিয়া বা সিকলসেল এনিমিয়া, লিউকেমিয়া ইত্যাদি।
- রেডিওথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াতেও এই সমস্যাটি দেখা দিতে পারে।
উপসর্গ
- হঠাৎ এক চোখে দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে। সাধারণত প্রাপ্ত বয়স্কদের বেলায় এটি দেখা যায়।
- ব্যথা থাকে না।
- রেটিনার রক্তনালীর ব্লক শনাক্তকরণ-
- ফান্ডাস ফ্লোরেসেন এনজিওগ্রাম বা চোখের এনজিওগ্রাম
- চিকিৎসা ও প্রতিরোধে করণীয়-
- এটি একটি চোখের ইমারজেন্সি। দ্রুত চিকিৎসা না হলে দৃষ্টি স্থায়ীভাবে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
- রিস্ক ফেক্টরের যত্ন নেয়া। বিশেষ করে ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, হাইপার কোলেস্টেরেলেমিয়া ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
- চোখে এন্টি ভিজিএফ ইনজেকশন দিতে হতে পারে।
- লেজার চিকিৎসায় অনেক সময় উপকার পাওয়া যায়।
- এসপিরিন জাতীয় ওষুধের প্রয়োজন হতে পারে।