ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২০ মে, ২০২২ ০৮:৩৬ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৪১৪ বার
রুশ সেনাবাহিনী ডনবাস অঞ্চলে আরো এলাকা দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইউক্রেন সৈন্যদের জোরালো প্রতিরোধের মুখে সেই প্রচেষ্টা বার বার থমকে যাচ্ছে।
রাশিয়ার এক সাঁজোয়া ট্রেন মেলিটোপোল শহরের উদ্দেশে রওনা হলেও অন্তর্ঘাত হিসেবে রেললাইন উড়িয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা ওলেক্সি আরেস্তোভিচ।
মারিউপোল শহরের ওপর মোটামুটি নিয়ন্ত্রণ কায়েম করলেও জোরালো ইউক্রেনিও প্রতিরোধের মুখে পড়ছে রুশ সৈন্যরা। জি-সেভেন অর্থমন্ত্রীরা ইউক্রেনের জন্য আরো সহায়তার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
দেশের বাকি অংশে রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ চালিয়ে গেলেও মারিউপোল শহরে পেরে উঠছে না ইউক্রেনের যোদ্ধারা।
রাশিয়ার দাবি, আরো প্রায় ৭০০ ইউক্রেনিও যোদ্ধা আত্মসমর্পণ করেছে। তবে রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা ডেনিস পুশিলিনের সূত্র অনুযায়ী, ইউক্রেনের উচ্চপদস্থ কমান্ডাররা এখনো আজোভস্টাল ইস্পাত কারখানায় আত্মগোপন করে রয়েছেন। ইউক্রেন এখনো প্রকাশ্যে মারিউপোলের যোদ্ধাদের পরিস্থিতি সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেনি।
সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ওলেক্সান্ড্র মোটুজাইনিক বলেন, সামরিক বাহিনীর সদস্যদের উদ্ধার করতে রাষ্ট্র যাবতীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে। প্রকাশ্যে সে বিষয়ে মুখ খুললে গোটা প্রক্রিয়া বিপন্ন হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
মারিউপোল শহরের মেয়র ভাদিম বোইচেঙ্কোর সূত্র অনুযায়ী ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, রেড ক্রস ও জাতিসঙ্ঘের উদ্যোগে যোদ্ধাদের উদ্ধারের বিষয়ে সংলাপ চলছে।
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে স্বাভাবিক পরিস্থিতির স্বীকৃতি হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বুধবার থেকে আবার দূতাবাসের কাজ শুরু করেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, রাশিয়ার বিবেকহীন হামলার মুখে ইউক্রেনের মানুষ নিজেদের দেশকে রক্ষা করেছে। ফলে দূতাবাসে আবার মার্কিন পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। তবে আপাতত হাতে গোনা কয়েকজন কূটনীতিক কাজ শুরু করবেন। কনসুলার বিভাগ এখনো খোলা হবে না। ব্রিজেট ব্রিংক নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে মার্কিন সেনেটের অনুমোদন পেয়েছেন।
উল্লেখ্য, ক্যানাডা, ব্রিটেন ও অন্য কয়েকটি দেশও সম্প্রতি কিয়েভে দূতাবাস আবার খুলেছে।
ইউক্রেনের একটা বড় অংশে পরিস্থিতি আপাতত স্বাভাবিক হলেও চলমান যুদ্ধের ফলে সে দেশের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে। শ্রমিক ও কর্মীরাও যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য হওয়ায় কৃষিকাজ ও উৎপাদন কমে গেছে। ফলে বাজেট সঙ্কট দেখা দিচ্ছে। এ অবস্থায় ইউক্রেনকে সহায়তা করতে বৈঠকে বসছেন জি-সেভেন অর্থমন্ত্রীরা। জার্মানির ক্যোনিগসভিন্টার শহরে বৃহস্পতিবার তারা আরো ব্যাপক উদ্যোগ নিতে চান।
মার্কিন অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন বলেন, এখনো পর্যন্ত ইউক্রেনকে যে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক সহায়তা দেয়া হয়েছে, তা এমনকি স্বল্পমেয়াদী ভিত্তিতেও যথেষ্ট নয়। তিনি অ্যামেরিকার সহযোগীদের উদ্দেশে ইউক্রেনের জন্য আরো আর্থিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন।
জার্মান অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়ান লিন্ডনার ইউক্রেনকে দেউলিয়া হওয়া থেকে বাচানোর আশ্বাস দিয়েছেন। ইউরোপীয় ইউিনয়ন ইউক্রেনের জন্য আর্থিক সহায়তা ৯০০ কোটি ইউরো পর্যন্ত বাড়ানোর অঙ্গীকার করেছে।
ইউক্রেন সঙ্কটের ফলে বিশ্ব অর্থনীতির উপর চাপ সম্পর্কেও অর্থমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধানরা আলোচনা করছেন। মূল্যস্ফীতি থেকে শুরু করে মন্দার আশঙ্কা তাদের দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে তুলছে। কাঁচামাল সঙ্কটের ফলে উৎপাদন প্রক্রিয়াও ব্যহত হচ্ছে। ফলে চাহিদা সত্ত্বেও যথেষ্ট জোগান সম্ভব হচ্ছে না।
সূত্র : ডয়চে ভেলে