ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৭ জুন, ২০২২ ১১:৩৫ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৪৭৩ বার
যখন আমাদের সবার মনোযোগ অন্যদিকে, দেশে তখন করোনার সংক্রমণ বেড়ে চলেছে। বলতে গেলে খুবই দ্রুত বেগে বাড়ছে সংক্রমণের হার। গতকাল রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনায় দেশে অন্তত ২ জন মারা গেছেন এবং ১ হাজার ৬৮০ জন সংক্রমিত হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ৪ মাসের মধ্যে এই প্রথম ২ দিন ধরে শনাক্তের হার ১৫ শতাংশের বেশি রয়েছে। গত শনিবার করোনায় অন্তত ৩ জন মারা গেছেন এবং ১ হাজার ২৮০ জনের করোনা শনাক্ত হয়।
সাপ্তাহিক হিসাব বিশ্লেষণ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পর্যবেক্ষণ হলো: বিশ্বে বর্তমানে বাংলাদেশে সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি। গত এক সপ্তাহে বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫০ শতাংশ বেড়েছে।
সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার এই চিত্র সম্পর্কে এক বিশেষজ্ঞ বলছেন, আমরা করোনার চতুর্থ ঢেউয়ে প্রবেশ করেছি। এ অবস্থায় আমাদের চিন্তিত থাকা উচিত। এখন প্রশ্ন—দেশের বিপুল সংখ্যক জনগণ যখন টিকা নিয়েছেন, তখন সংক্রমণ কেন বাড়ছে?
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, গত শনিবার যে ৩ জন মারা গেছেন, তাদের মধ্য ২ জনই ২ ডোজ টিকা নিয়েছিলেন। অপরজন এক ডোজ টিকা নিয়েছেন। টিকাপ্রাপ্ত কেউ সংক্রমিত হলে একে 'ব্রেকথ্রু ইনফেকশন' বলা হয়।
সামনের দিনগুলোয় যদি এ রকম হতে থাকে এবং যেখানে দেশের জনসংখ্যার অল্প একটি অংশ বুস্টার ডোজ নিয়েছে, সেখানে জনগণ এখনো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে উদাসীন থাকলে এ বিষয়ে ভাবনার অনেক কিছু আছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেহেতু করোনাভাইরাস ক্রমাগত রূপ পরিবর্তন করছে, তাই কোনো ভ্যাকসিনই এর বিরুদ্ধে আজীবন সুরক্ষার নিশ্চয়তা দিতে পারে না। ২টি ওমিক্রন সাবভ্যারিয়েন্ট ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি দেশকে বিপর্যস্ত করেছে।
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক এ সংক্রমণ বৃদ্ধির পেছনে এই সাবভ্যারিয়েন্ট দায়ী হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভাইরাসের এ নতুন রূপ খুব মারাত্মক যদি নাও হয়, এগুলো অত্যন্ত সংক্রামক। টিকার প্রভাবে বা কেউ একবার সংক্রমিত হলে শরীরে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, তা নির্দিষ্ট সময়ের পর অকার্যকর হয়ে পরে।
এ ক্ষেত্রে আমাদের অবশ্যই টিকা দেওয়ার পরও সবসময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও যত দ্রুত সম্ভব জনসংখ্যার অধিকাংশকে বুস্টার ডোজ দেওয়া উচিত। যদি মহামারি অব্যাহত থাকে, তবে প্রয়োজনে আরও ডোজ দেওয়া যেতে পারে।
বাংলাদেশে একটি সমস্যা হলো—করোনা পরীক্ষার বিষয়ে জনগণের উদাসীনতা। এর আগে, মহামারি যখন মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল, তখন মানুষের পরীক্ষার বিষয়ে আগ্রহ ছিল। পরে আবার, বিশেষ করে টিকা নেওয়ার পর অনেক ক্ষেত্রেই এই আগ্রহ এখন আর দেখা যাচ্ছে না।
এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। করোনার নতুন ঢেউ কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে সরকারকে অবশ্যই পরীক্ষা ও করোনার অন্যান্য আচরণবিধি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে নতুন করে প্রচারণা শুরু করতে হবে। একইসঙ্গে সারা দেশে পরীক্ষা ও টিকাদান কার্যক্রম আরও জোরদার করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাসহ বিশেষ করে মাস্ক পরা ও নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা আবার বাধ্যতামূলক করা উচিত।