ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ৯ অক্টোবর, ২০২২ ১০:০১ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৩৬১ বার
চট্টগ্রাম নগরীতে পথে পথে চলছে চাঁদাবাজি। রিকশা স্ট্যান্ড থেকে শুরু করে বাস স্টেশন। ফুটপাত থেকে স্থায়ী দোকানদার সবাইকে দিতে হয় বিভিন্ন হারে ও খাতে চাঁদা। চাঁদাবাজের তালিকায় ছিঁচকে সন্ত্রাসী থেকে শুরু করে রয়েছে প্রভাবশালী নেতা। বাদ যায়নি পুলিশও। নগরীর ১৫টি খাত থেকে প্রতি মাসে আদায় করা হয় কমপক্ষে ৬০ কোটি টাকা।
সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় বলেন, ‘চাঁদাবাজির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আসলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করি। চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান সব সময় কঠোর।’ এক প্রশ্নের জবাবে সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) মাহতাব উদ্দিন বলেন, ‘পুলিশের নামে চাঁদা আদায় করা হয় এ তথ্য আমার জানা নেই। যদি কেউ অভিযোগ করে তা হলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে সিএমপি।’
জানা যায়, চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন স্পট থেকে দৈনিক এবং মাসিক হারে চলছে চাঁদাবাজি। এ চাঁদাবাজিতে সম্পৃক্ততা রয়েছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে ছাত্র ও যুব সংগঠনের নেতা, স্থানীয় সন্ত্রাসী গ্রুপ এবং প্রভাবশালী নেতা। এ চাঁদাবাজির একটি অংশ যায় আবার পুলিশের ‘থানা খরচ’ নামে।
নগরীর কমপক্ষে ১৫টি খাত থেকে প্রতিদিন আদায় করা হয় প্রায় ২ কোটি টাকা। মাস শেষে এ সংখ্যা দাঁড়ায় ৬০ কোটি টাকা। নগরীতে বৈধ বাজার রয়েছে ত্রিশটি। অবৈধ বাজার রয়েছে আরও শতাধিক। এ ছাড়া নগরীর ৪০০ কিলোমিটার ফুটপাতের মধ্যে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার ফুটপাতে গড়ে উঠেছে ভ্রাম্যমাণ বাজার।
বৈধ-অবৈধ বাজার এবং ফুটপাতে প্রতিদিন বসে কমপক্ষে ১৫ হাজার দোকানদার ও হকার। প্রতি ভ্রাম্যমাণ দোকানদার ও হকারের কাছ থেকে দৈনিক আদায় করা হয় ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা। সব মিলিয়ে গড়ে প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে নগরীর ফুটপাতের হকারদের কাছ থেকে।
চাঁদা আদায়ের অন্য খাত হচ্ছে বাস স্টেশন, অবৈধ টেম্পু স্টেশন, টেক্সি স্টেশন, রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা এবং ভ্যান গাড়ি রাখার স্পট। এ ধরনের এক একটি স্পট থেকে প্রতিদিন আদায় করা হয় ৫০০ থেকে ১০ হাজার টাকা। এ ধরনের স্পট রয়েছে ১০০-এর কাছাকাছি।
এছাড়া এক একটি মিনি চাইনিজ থেকে মাসিক ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার, ব্যাটারিচালিত রিকশা সমিতি থেকে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ, জুয়ার বোর্ড থেকে প্রতিদিন ৫ হাজার থেকে ২০ হাজার, মাদক স্পট থেকে ৫ হাজার টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা, অবৈধ প্লাস্টিক তৈরির কারখানা এবং দোকান থেকে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা, অবৈধ তেল বিক্রি সিন্ডিকেটের কাছ থেকে ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ চাঁদা আদায় করা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জিইসি এলাকার এক ভ্রাম্যমাণ দোকানদার বলেন, ‘প্রতিদিন থানা পুলিশ, ছাত্র সংগঠন এবং সেয়ানা টেক্সের নামে ৫০০ টাকা আদায় করা হয়। কেউ চাঁদা দিতে না চাইলে দোকান ভেঙে দেওয়া হয়। মালামাল লুঠ করে নিয়ে যায়। তাই বাধ্য হয়ে চাঁদা দিতে হয়।’