ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

মিছিল-স্লোগানে মুখর রংপুরে বিএনপির সমাবেশস্থল

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর, ২০২২ ১২:০৪ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৪০৬ বার


মিছিল-স্লোগানে মুখর রংপুরে বিএনপির সমাবেশস্থল

ভোর থেকে মিছিল আর স্লোগান মুখর রংপুরে বিএনপির সমাবেশস্থল। অনেকে হেঁটে দলবল নিয়ে আসছেন, অনেকে আসছেন শত শত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় চেপে। রংপুর শহরে প্রবেশের সব পথ দিয়েই আজ শনিবার সকাল থেকে মিছিল আসছে বিএনপির সমাবেশস্থলের দিকে।

 

রংপুরে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের আগে গতকাল শুক্রবার থেকে দুই দিনের জন্য পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয় জেলা মোটর মালিক সমিতি। এ কারণে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়লেও বিএনপির কর্মীরা দলেবলে নানা উপায়ে সমাবেশস্থলে আসেন। পথে তাঁদের কোথাও কোনো বাধা দেওয়া হয়নি বলে জানান তাঁরা।

 

শনিবার দুপুর ২টায় রংপুর কালেক্টর ঈদগাহ মাঠে সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে বলে মঞ্চ তৈরি করেছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।

 

বিকল্প পরিবহন ব্যবস্থা ব্যবহার করে শুক্রবার বিকাল থেকে এ বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন জেলা থেকে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী সমাবেশস্থলে পৌঁছাতে শুরু করেন।

 

সমাবেশের একদিন আগে শুক্রবার সকাল থেকে রংপুর ও সারাদেশের মধ্যে বাস যোগাযোগ বন্ধ থাকলেও আশেপাশের ৮টি জেলার বিএনপি নেতাকর্মীদের মাইক্রো বাস, অটোরিকশা, থ্রি-হুইলার ও  মোটরসাইকেলসহ ছোট যানবাহনে করে নগর সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় আসতে দেখা গেছে।

 

বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, শনিবার তাদের ক্ষমতাসীন দলের প্রতিপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্ভাব্য বাধা ও হয়রানি এড়াতে তারা রংপুর শহর ও এর আশপাশের এলাকায় আগাম অবস্থান নিয়েছেন।

 

শুক্রবার ঢাকা থেকে মাত্র কয়েকটি বাস রংপুরে আসলেও সকাল থেকে কোনও বাস রংপুর বাস টার্মিনাল থেকে কোনও গন্তব্যে ছেড়ে যেতে দেখা যায়নি। এতে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ধর্মঘটের কারণে রংপুরগামী আন্তঃজেলা বাস চলাচলও বন্ধ রয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে অন্য জেলার বাসগুলো রংপুরে প্রবেশ করতে পারেনি।

 

মহাসড়কে থ্রি-হুইলারসহ অবৈধ যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ এবং প্রশাসনিক হয়রানি বন্ধের দাবিতে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পরিবহন ধর্মঘট পালন করেছে রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতি।

 

তবে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন অভিযোগ করেছেন, তাদের দলীয় সমাবেশে লোকজন যাতে আসতে না পারে সেজন্যই এই ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়েছে।

 

তিনি বলেন, পরিবহন ধর্মঘট ও ক্ষমতাসীন দলের তৈরি করা অন্য সব বাধা উপেক্ষা করে রংপুর বিভাগের আটটি জেলার লাখ লাখ মানুষ শনিবার তাদের কর্মসূচিতে অংশ নেবে।

 

গত সপ্তাহে খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের আগেও একই ধরনের হরতাল কার্যকর করা হয়েছিল, তবে দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী বাধা অতিক্রম করে কর্মসূচিতে অংশ নেন।

 

বিএনপি তার চলমান আন্দোলনের গতি অব্যাহত রাখার অংশ হিসেবে ২৭ সেপ্টেম্বর ১০টি বিভাগীয় শহরে ধারাবাহিক জনসভার কর্মসূচি ঘোষণা করে।

 

সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্যসহ সিনিয়র নেতারা বক্তব্য দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

 

আয়োজকরা জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির নিন্দা, ভোলা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও যশোরে পুলিশের দ্বারা পাঁচ দলের নেতাকর্মীর মৃত্যু এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করতেই এই সমাবেশ।

 

বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছিল যে আগামী সাধারণ নির্বাচন কোনও রাজনৈতিক সরকারের অধীনে হবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হতে হবে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীনরা বর্তমান সংবিধানে সে সুযোগ নেই বলে প্রত্যাখান করে আসছে।

 

শনিবারের সমাবেশটি হবে বিভাগীয় পর্যায়ে বিএনপির চতুর্থ সমাবেশ। এরআগে প্রথমটি চট্টগ্রামে, দ্বিতীয়টি ময়মনসিংহে এবং তৃতীয়টি খুলনায় করেছে দলটি।

 

২০২৩ সালের শেষের দিকে বা ২০২৪ সালের সালের প্রথম দিকে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া পরবর্তী নির্বাচনের জন্য সমর্থন জোগাতে অন্যান্য বিভাগীয় শহরেও অনুরূপ সমাবেশের পরিকল্পনা করেছে বিএনপি।

 

আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগরীতে গণসমাবেশের মধ্য দিয়ে বিভাগীয় সমাবেশ শেষ করবে বিএনপি।


   আরও সংবাদ