ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর, ২০২২ ১৮:৩৫ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৪৬৯ বার
সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভার প্রথম নির্বাচন বেশ জমে উঠেছে। আগামী বুধবার (২ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হবে প্রথম পৌরসভা নির্বাচন।
ভোটারদের মতে, নির্বাচনে সাত মেয়র প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফারুক আহমদ (নৌকা)। জগ মার্কায় স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি (বহিষ্কৃত) জালাল উদ্দিন মুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তবে, নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন জগ মার্কার স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মুহিবুর রহমান। তার মতে, নতুন ৩৫ হাজার ৩৮২ ভোটারের মধ্যে তার জগ মার্কায় ৮০ শতাংশ ভোট পড়বে। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে জগের ওই ভোটগুলো নৌকায় স্থানান্তর করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে বিজয়ী করা হবে।
রোববার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে পৌর শহরের রামপাশা রোডস্থ নিজ বাসার সামনে তার প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে মুহিবুর রহমান তার এই শঙ্কার কথা জানিয়েছেন।
নির্বাচনে ৮০ ভাগ ভোট পাওয়ার নিশ্চয়তা জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে মুহিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনের দিন ‘ভোট পড়বে জগে আর বিজয়ী করানো হবে নৌকাকে’। প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের মাধ্যমে এমন কর্মকাণ্ড করা হবে বলে প্রচারণা চালাচ্ছেন নৌকার প্রার্থী, সমর্থক ও আওয়ামী লীগ নেতারা।
এছাড়া তার শেষ নির্বাচনী জনসভা করতে থানা পুলিশকে আগে জানালেও থানার ওসি গাজী আতাউর রহমান নৌকার প্রার্থীকে প্রাধান্য দিয়ে তার বাসার সমানে জনসভার অনুমতি দিয়েছেন। এজন্য একই সময়ে ৩১ অক্টোবর সোমবার বিকেল ৩টায় পৌর শহরের জানাইয়া খেলার মাঠে পথ-সভা করতে হচ্ছে তাকে।
বিশ্বনাথ থানার ওসি গাজী আতাউর রহমান বলেন, নৌকা ও জগ মার্কার মেয়র প্রার্থীদের নির্বাচনী অফিস পাশাপাশি স্থানে। একই সময়ে দু’পক্ষের সভা হলে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে। তাই দু’পক্ষকে দুই জায়গায় পথ-সভা করতে স্থান নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।
ওসমানীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের দিন কোথাও আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে দেয়া হবে না।
ভোট স্থানান্তরের কোনো সুযোগ নেই জানিয়েছেন ইউএনও নুসরাত জাহান এবং রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলমঙ্গীর হোসেন। তারা বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে সব প্রকার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে। কেউ গুজব ছড়ালে তাতে কান না দেয়ার জন্য সব প্রার্থী ও ভোটারদের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন তারা
এদিকে উপজেলা বিএনপির সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পর এবার বহিষ্কার হয়েছেন জালাল উদ্দিন। তিনি বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র পদপ্রার্থী।
রোববার সন্ধ্যায় বিএনপির কেন্দ্রীয় সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির সভাপতি জালাল উদ্দিনকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়।
এর আগে বিকেলে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে জালাল উদ্দিনকে বহিষ্কারের বিষয়টি চিঠিতে জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী জালাল উদ্দিনের বহিষ্কারের তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। গত ১৬ অক্টোবর উপজেলা বিএনপির সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে বিশ্বনাথ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হন জালাল উদ্দিন। দল থেকে বহিষ্কার এড়াতে তিনি আগেভাগেই শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে দলীয় পদ থেকে পদত্যাগের আবেদন করেছেন বলে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।
আগামী ২ নভেম্বর বিশ্বনাথ পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে তিনি হ্যাঙ্গার প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন। এ বিষয়ে জালাল উদ্দিন রোববার রাতে বলেন, আমি আগেই অব্যাহতি চেয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর আবেদন করেছি। তবে দল থেকে বহিষ্কারের বিষয়টি আমার জানা নেই।
বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। তবে এমন ঘোষণা সত্ত্বেও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন বিএনপি নেতারা। জালাল উদ্দিনও নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন।