ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর, ২০২২ ০৬:৩৭ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৩৬৭ বার
চাঁপাইনবাবগুঞ্জের সোনামসজিদ, সিলেটের তামাবিল ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া শুল্ক স্টেশন আধুনিকায়নে ৩১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প নিয়েছে এনবিআর।
রাজস্ব আদায়ের দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ দেশের তিনটি শুল্ক স্টেশন আধুনিকায়নে উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এগুলো হলো চাঁপাইনবাবগুঞ্জের সোনামসজিদ, সিলেটের তামাবিল ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া।
শুল্ক স্টেশনগুলো আধুনিকায়নে ৩১৩ কোটি টাকা ব্যয়সাপেক্ষ একটি প্রকল্প নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর, যা গত মাসে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন দেয়া হয়।
সূত্র জানায়, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পের আওতায় কাস্টমসের অবকাঠামো তৈরি ও শুল্কায়ন প্রক্রিয়া আধুনিকায়ন করা হবে।
এনবিআরের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের এক কর্মকর্তা বলেন, উল্লিখিত শুল্ক স্টেশনগুলো রাজস্ব আদায়ের দিক থকে গুরুত্বপূর্ণ হলেও শুল্ক স্টেশনের অবকাঠামো খুবই দুর্বল। জনবলেরও ঘাটতি রয়েছে। পূর্ণাঙ্গ শুল্ক স্টেশনের জন্য যা দরকার এসব শুল্ক স্টেশনে তা নেই। অথচ বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড দিন দিন বাড়ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এসব শুল্ক স্টেশন দিয়ে পণ্য আনা-নেয়া সহজ হবে। গতি বাড়বে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে। একইসঙ্গে বাড়বে রাজস্ব আদায়।
বর্তমানে এনবিআরের অধীনে সারাদেশে ৫০টি শুল্ক স্টেশন সক্রিয় রয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেকেরই অবকাঠামো দুর্বল। এনবিআর সূত্র বলেছে, তিনটি শুল্ক স্টেশন আধুনিকায়নের পর অন্যগুলোতেও পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে।
জানা যায়, প্রকল্পের আওতায় যেসব কাজ হবে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- কাস্টম অফিস ও কর্মকর্তাদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ, আধনিক ল্যাব তৈরি, কম্পিউটার ক্রয় ইত্যাদি।
বর্তমানে এসব শুল্ক স্টেশনে ম্যানুয়াল বা প্রচলিত প্রথায় পণ্যের শুল্কায়ন করা হয়। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে শুল্কায়ন প্রক্রিয়া আধুনিক হবে। এতে করে পণ্য দ্রুত খালাস হবে। সহজ হবে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য।
বর্তমানে সারা দেশে কাস্টমসের শুল্ক স্টেশনের মাধ্যমে যে পরিমাণ পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয় তার ৩০ ভাগ এই তিনটি স্টেশনের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। এনবিআরের কর্মকর্তারা বলেন, আধুনিকায়নের কাজ শেষ হলে বাণিজ্যক কর্মকাণ্ড কমপক্ষে ২০ ভাগ বাড়বে।
ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয়সহ ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় ৭টি রাজ্যে প্রবেশের অন্যতম দুয়ার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া শুল্ক স্টেশন। ১৯৯৪ সালে চালু হওয়া এই স্থলবন্দর দিয়ে মাছ, পাথর, সিমেন্ট, ইট, বালি, শুটকি, প্লাস্টিক সামগ্রী, তুলাসহ প্রায় ৪২টি বাংলাদেশি পণ্য ভারতে রপ্তানি হয়।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগের ক্ষেত্রে তামাবিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শুল্ক স্টেশন হলেও এটি চলছে দুর্বল অবকাঠামো ও স্বল্প লোকবল দিয়ে।
কাস্টমস সূত্র বলেছে, এটিকে পূর্ণাঙ্গ শুল্ক স্টেশনে উন্নীত করা হলে রাজস্ব আদায় বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুণ হবে। গত অর্থবছরে তামাবিল শুল্ক স্টেশন থেকে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ হয়। এই শুল্ক স্টেশন দিয়ে ভারত থেকে পাথর ও কয়লা বেশি আসে।
এছাড়া সোনা মসজিদ স্থল বন্দর দিয়ে পাথর, চাল, পেঁয়াজ, শুটকি, ভুট্টাসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি করা হয়। এর মধ্যে বেশি আসে পাথর। এই শুল্ক স্টেশন থেকে মাসে গড়ে ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ হয়।