ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ৬ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:৪৯ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৩৯১ বার
নভেম্বরে সাধারণ পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট মুদ্রাস্ফীতির হার আরও হ্রাস পেয়েছে। মূলত খাদ্য মুদ্রাস্ফীতির নিম্নমুখী প্রবণতার কারণে এই হার ৮.৮৫ শতাংশ পয়েন্টে নেমে এসেছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান আজ মন্ত্রণালয়ের মাসিক ভোক্তা মূল্য (সিপিআই) সূচক প্রকাশের জন্য এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতাকালে বলেন, নভেম্বরে সাধারণ পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট মূল্যস্ফীতির হার আরও কমে ৮.৮৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরে সাধারণ পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৮.৯১ শতাংশ পয়েন্ট।
পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট খাদ্য মূল্যস্ফীতি নভেম্বরে ৮.১৪ শতাংশে নেমে এসেছে, যা চলতি বছরের অক্টোবরে ছিল ৮.৫০ শতাংশ। অন্যদিকে, পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট নন-খাদ্য মূল্যস্ফীতি অবশ্য অক্টোবরে নিবন্ধিত ৯.৫৮ শতাংশ পয়েন্ট থেকে কিছুটা বেড়ে ৯.৯৮ শতাংশ পয়েন্ট দাঁড়িয়েছে।
সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতি নিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, নভেম্বরে আমরা খুব ভালো খবর পেয়েছি। ডিসেম্বরেও মূল্যস্ফীতি আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে। শীতকালীন সবজির পাশাপাশি আমনের কাঙ্খিত ফলন এবং আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দামের নিম্নমুখী প্রবণতার প্রেক্ষিতে মান্নান তার আশাবাদ পুনর্ব্যক্ত করেছেন যে সমস্ত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও চলতি অর্থবছরে (অর্থবর্ষ২৩) জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭ শতাংশে পৌঁছাবে। জ্বালানি তেলের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার আন্তর্জাতিক বাজার থেকে জ্বালানি তেল সংগ্রহ করে এবং স্থানীয় বাজারে বিক্রির সময় তা দিয়ে কোনো ব্যবসা করে না। অনেকে মুদ্রাস্ফীতির ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা নিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করেছিল, এই অভিযোগ এনে তিনি জানিয়েছিলেন যে, সরকার সিপিআই সূচক গণনার জন্য সূচকগুলো পর্যালোচনা করবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা ব্যর্থ হয়েছে। পরিকল্পনামন্ত্রী উল্লেখ করেন, গত তিন মাসে ধারাবাহিক ভিত্তিতে সাধারণ পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি কমেছে এবং ডিসেম্বরে তা আরও কমবে।
আমন ও সবজির ভালো ফলনের পাশাপাশি বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামের নিম্নমুখী প্রবণতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের দামের বর্তমান পতনের প্রবণতা অবশ্যই স্থানীয় বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তিনি ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমতে থাকলে ভবিষ্যতে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করা হতে পারে। এক প্রশ্নের জবাবে মান্নান বলেন, দেশে সোনা, মাখন, কফিসহ ৪২২টি পণ্যের ওপর ভিত্তি করে মূল্যস্ফীতি গণনা করা হচ্ছে। তিনি বলেন যে এই ধরনের আইটেমগুলোর দামের উত্থান-পতন সামগ্রিক মুদ্রাস্ফীতির প্রবণতার উপরও প্রভাব ফেলে, যার জন্য সিপিআই সূচক গণনার জন্য আইটেমগুলো পর্যালোচনা করা হবে।
অনেকে মুদ্রাস্ফীতিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছেন অভিযোগ করে মন্ত্রী বলেন, কিন্তু তাদের আশা ভেস্তে গেছে, কারন মূল্যস্ফীতি হ্রাসের এই প্রবণতা প্রধানত ‘ভালো ব্যবস্থাপনা’-র ফলেই হয়েছে। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্র পরিচালিত ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) কর্তৃক সাধারণ মানুষের কাছে প্রয়োজনীয় জিনিস বিক্রির পাশাপাশি কিছু প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে শুল্ক ছাড়ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করেছে।
বিবিএসে’র তথ্যে দেখা গেছে যে, গ্রামীণ এলাকায় সাধারণ পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি অক্টোবরে ৮.৯২ শতাংশ পয়েন্ট থেকে নভেম্বরে কিছুটা বেড়ে ৮.৯৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। তবে, নভেম্বরে শহরাঞ্চলে সাধারণ পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট মূল্যস্ফীতির হার অক্টোবরের ৮.৯০ শতাংশ পয়েন্ট থেকে কমে ৮.৭০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। নভেম্বরে জাতীয় মজুরি সূচকের হার ৬.৯৮ শতাংশ পয়েন্টে পৌঁছেছে, যা এবছরের অক্টোবরে ৬.৯১ শতাংশ পয়েন্ট ছিল।