ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৩ মে, ২০২৩ ১৪:১২ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ১১৭৮ বার
সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ধরণের ওষুধের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে পুলিশের এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে। দেশে উৎপাদিত ওষুধের একটি বৃহৎ অংশের মূল্য নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের এখতিয়ার না থাকায় যৌক্তিক মূল্যের বাধ্যবাধকতা আরোপ ও যথাযথ তদারকির অভাবে ওষুধের মূল্য সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওষুধের কাঁচামাল, বিভিন্ন চিকিৎসা উপকরণ ও ওষুধ আমদানি কমে যাওয়ায় গত এক বছরে দেশে ওষুধের মূল্য প্রায় ৯০ শতাংশ বেড়ে গেছে। একই সঙ্গে গত এক বছরে চিকিৎসা সরঞ্জামের মূল্যও দ্বিগুণ থেকে চার গুণ বেড়েছে। অনতিবিলম্বে অতিপ্রয়োজনীয় ও জীবন রক্ষাকারী ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রেখে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম সই করা প্রতিবেদনটি সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবের কাছে পাঠানো হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে প্রতিবেদনটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ ও পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) কাছে পাঠানো হয়েছে।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘গোয়েন্দা প্রতিবেদনটি সম্পর্কে আমরা অবগত হয়েছি। এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ইতোমধ্যে সকল স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে একটি বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে।’
ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আইয়ুব হোসেন বলেন, ‘সব ওষুধের দাম বৃদ্ধির সময় ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর থেকে মূল্য সনদ নিতে হয়। কিন্তু অধিদফতর অল্প কিছু জেনেরিকের ওষুধের মূল্য নির্ধারণে নিজেদের পূর্ণ মতামত দিতে পারে। অন্য জেনেরিকের ওষুধগুলোর ক্ষেত্রে মূল্য নির্ধারণে অধিদফতরের আওতায় আনাটা আসলে সরকারের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের বিষয়। এক্ষেত্রে অধিদফতরের লোকবলও বাড়াতে হবে। কারণ প্রতিটি ওষুধের মূল্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে একাধিক কমিটির মাধ্যমে অনুমোদন নিতে হবে।’
ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘ওষুধের কাঁচামালের আমদানি মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় দাম বাড়ে। এছাড়া কোম্পানি ভেদেও দামের তারতম্য রয়েছে। আমরা অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থাও নিয়ে থাকি।’
ঔষুধ প্রশাসন অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৪ সালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরকে ১১৭টি জেনেরিকের অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের মূল্য নির্ধারণের এখতিয়ার প্রদান করা হয়। তবে দেশে বর্তমানে প্রায় দেড় হাজার জেনেরিকের ২৭ হাজারেরও বেশি ওষুধ তৈরি হয়। ১১৭টি ছাড়া বাকি সকল উৎপাদিত ওষুধের মূল্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেরাই নির্ধারণ করে। তারা শুধু দামের বিষয়টি ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরকে অবহিত করে। ফলে দেশে উৎপাদিত ওষুধের একটি বৃহৎ অংশের মূল্য নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের এখতিয়ার না থাকায় যৌক্তিক মূল্যের বাধ্যবাধকতা আরোপ ও যথাযথ তদারকির অভাবে ওষুধের মূল্য সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওষুধের মোড়কীকরণ সামগ্রী, পরিবহন ও বিপণন ব্যয়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের মূল্য, ডলারের বিনিময়ে মূল্য ইত্যাদি বৃদ্ধির কারণে সার্বিকভাবে ওষুধের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির সাথে ওষুধের বর্তমান মূল্যবৃদ্ধি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ওষুধের এই অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা গ্রহণ দুরূহ হয়ে পড়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্কয়ার ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ওষুধের সবচেয়ে বেশি মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়া এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালসহ আরও কিছু কোম্পানির ওষুধেরর মূল্য যথেষ্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, অতিপ্রয়োজনীয় ও দৈনন্দিন চিকিৎসাসেবায় ব্যবহৃত হয় এমন ওষুধগুলোর মূল্য বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রতিবেদনে ৪৪টি অতিপ্রয়োজনীয় ও দৈনন্দিন চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় এমন ওষুধের জেনেরিকের নাম উল্লেখ করে আগের ও বর্তমান মূল্য তুলে ধরা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, প্যারাসিটামল ৫০০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট আগে ৭০ পয়সা মূল্য ছিল, বর্তমানে তা এক টাকা ২০ পয়সা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্যারাসিটামল ৫০০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট (র্যাপিড) আগে ৭০ পয়সা ছিল, বর্তমানে ১ টাকা ৩০ পয়সা, প্যারাসিটামল ৬৫০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট (এক্সআর) আগে ১ টাকা ৩১ পয়সা ও বর্তমানে দুই টাকা ২০ পয়সা, প্যারাসিটামল ৬৫০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট (এক্সআর) আগে ১ টাকা ৪ পয়সা ও বর্তমানে দুই টাকা ২৫ পয়সা, প্যারাসিটামল ৮০ মিলিগ্রাম ড্রপস ও ১৫ মিলিলিটার বোতল আগে ১২ টাকা ৮৮ পয়সা ও বর্তমানে ২০ টাকা, প্যারাসিটামল ৮০ মিলিগ্রাম ড্রাপস ও ৩০ মিলিলিটার বোতল আগে ১৮ টাকা ও বর্তমানে ৩০ টাকা, প্যারাসিটামল ১২০ মিলিগ্রাম/৫ মিলিলিটার সাসপেনশন/৬০ মিলিলিটার বোতল আগে ১৮ টাকা ও বর্তমানে ৩৫ টাকা, প্যারাসিটামল ১২০ মিলিগ্রাম/৫ মিলিলিটার সাসপেনশন/১০০ মিলিলিটার বোতল আগে ৩০ টাকা ৮০ পয়সা ও বর্তমানে ৫০ টাকা,
তাছাড়া, মেট্রোনিডাজল ২০০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট আগে ৬০ পয়সা ও বর্তমানে এক টাকা, মেট্রোনিডাজল ২৫০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট আগে ৯২ পয়সা ও বর্তমানে এক টাকা ২৫ পয়সা, মেট্রোনিডাজল ৪০০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট আগে এক টাকা ৩৭ পয়সা ও বর্তমানে এক টাকা ৭০ পয়সা, মেট্রোনিডাজল ৫০০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট আগে এক টাকা ৬৬ পয়সা ও বর্তমানে দুই টাকা, মেট্রোনিডাজল ২০০ মিলিগ্রাম/৫ মিলিলিটার সাসপেনশন/৬০ মিলিলিটার বোতল আগে ২৬ টাকা ও বর্তমানে ৩৫ টাকা, মেট্রোনিডাজল ২০০ মিলিগ্রাম/৫ মিলিলিটার সানপেনশন/১০০ মিলিলিটার বোতল আগে ৩৪ টাকা ৯২ পয়সা ও বর্তমানে ৪৫ টাকায়, মেট্রোনিডাজল ৫০০ মিলিগ্রাম/১০০ মিলিলিটার ইনফিউশন/১০০ মিলিলিটার বোতল আগে ৭৪ টাকা ৩৫ পয়সা ও বর্তমানে ৮৫ টাকায়, এমোক্সিসিলিন বিপি ১২৫ মিলিগ্রাম/১.২৫ মিলিলিটার সাসপেনশন/১৫ মিলিলিটার বোতল আগে ২৬ টাকা ৩৪ পয়সা ও বর্তমানে ২৫ টাকা, এমোক্সিসিলিন বিপি ১২৫ মিলিগ্রাম/৫ মিলিলিটার সাসপেনশন/১০০ মিলিলিটার বোতল আগে ৪১ টাকা ৪০ পয়সা ও বর্তমানে ৭০ টাকা, এমোক্সিসিলিন বিপি ২৫০ মিলিগ্রাম/৫ মিলিলিটার সাসপেনশন-জিএস/১৫ মিলিলিটার বোতল আগে ৬৭ টাকা ৯৪ পয়সা ও বর্তমানে ১০০ টাকা, এমোক্সিসিলিন বিপি ২৫০ মিলিগ্রাম ক্যাপসুল আগে ৩ টাকা ১৫ পয়সা ও বর্তমানে ৪ টাকা, এমোক্সিসিলিন বিপি ৫০০ মিলিগ্রাম ক্যাপসুল আগে ৫ টাকা ৯০ পয়সা ও বর্তমানে ৭ টাকা ৪ পয়সা, এমোক্সিসিলিন বিপি ৫০০ মিলিগ্রাম ইনজেকশন আগে ২৪ টাকা ২০ পয়সা ও বর্তমানে ৫৫ টাকা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে সব ধরণের পণ্যের মূল্য বেড়েছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে। দেশের ২১৩টি ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন দেশ থেকে কাঁচামাল আমদানি করে থাকে। সারা বিশ্বে ওষুধের কাঁচামাল মূল্য বৃদ্ধি পাওয়া ও পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি দেশের ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর অস্বাভাবিক মুনাফা লাভের উদ্দেশ্যে ওষুধের অযৌক্তিক মূল্য বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, একটি কোম্পানির ওষুধের দাম বাড়লে অন্যান্য কোম্পানিও সেই ওষুধের মূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছে। ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো অনেক সময় মুঠোফোনে ফার্মেসি মালিকদের খুদে বার্তায় বা বিপণন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে খেয়ালখুশি মতো ওষুধের দাম বৃদ্ধি করে। গত এক বছর ধরে একাধিক ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরকে না জানিয়েই ওষুধের দাম বাড়িয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
বর্তমানে একজন রোগীর মোট চিকিৎসা ব্যয়ের ৬৫ শতাংশই ওষুধ ক্রয়ে বিক্রি হচ্ছে। স্বাস্থ্য ব্যয় অত্যধিক বাড়ার কারণে বছরে অন্তত ৮৬ লাখ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে নেমে যাচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতির সাথে ওষুধের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে কষ্টসাধ্য করে তুলেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর ২০১৭ সালে হার্টের রিংয়ের (স্টেন্ট) সর্বনিম্ন মূল্য ২৫ হাজার ও সর্বোচ্চ মূল্য ৫০ হাজার নির্ধারণ করে দেয়। সংস্থাটি নির্ধারিত মূল্য তালিকা হাসপাতালের প্রকাশ্য স্থানে টানানোরও নির্দেশনা প্রদান করে। কিন্তু বাস্তবে বিভিন্ন ধরণের হার্টের রিং রোগীদের কাছে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ ৫২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
প্রতিবেদনের তথ্য মতে, ওষুধের মোট উৎপাদন ব্যয়ের অন্তত ১০ শতাংশ অনৈতিকভাবে ব্যয় হয়। চিকিৎসকরা যাতে কোনও নির্দিষ্ট কোম্পানির ওষুধ ব্যবস্থাপত্রে লেখেন সেজন্য কোম্পানিগুলো চিকিৎসকদের নানা অনৈতিক সুবিধা দেয়, এতে অনৈতিক বিপণন ব্যয় বৃদ্ধি পায়। ওষুধের মূল্য বৃদ্ধি করে এই অনৈতিক বিপণন ব্যয় মেটাতে হয়।
ওষুধের মূল্য সমন্বয়ের সুপারিশ
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে ওষুধের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি ঠেকাতে বেশ কয়েকটি সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো— সকল ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ওষুধ শিল্পের কাঁচামাল আমদানির জন্য এলসি খোলার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া, ওষুধ শিল্পের কাঁচামালের ওপর শুল্ক হ্রাস বা প্রত্যাহার, চাহিদামতো ওষুধ উৎপাদন যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় সেদিকে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের নজরদারি বৃদ্ধি, যে সকল ওষুধের চাহিদা বেশি সেগুলোর উৎপাদন ও সরবরাহ বৃদ্ধি করে বাজারে সংকট দূর করা, ফর্মেসিগুলো যেন বেআইনিভাবে মূল্য বৃদ্ধি করতে না পারে সেদিকে তদারকি সংস্থার নজরদারি বৃদ্ধি, জাতীয় ওষুধ নীতি কঠোরভাবে অনুসরণ, সরকার কর্তৃক অতিপ্রয়োজনীয় ওষুধের মূল্য নির্ধারণ এবং নির্ধারণকৃত মূল্যের অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রয় বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ, জীবনরক্ষাকারী ওষুধগুলোর মূল্যের ওপর সরকারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা, ওষুধ শিল্পের কাঁচামাল, ওষুধ ও বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও মূল্য নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের সমন্বয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃক প্রকাশিত নির্দেশক মূল্যের বাইরে যেন কোনও কোম্পানি ওষুধের মূল্য বৃদ্ধি করতে না পারে তা নিশ্চিত করা, বর্তমানে উৎপাদিত প্রায় দেড় হাজার জেনেরিকের সকল ওষুধের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের কর্তৃত্ব বা এখতিয়ার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের ওষুধ উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি করার কথা বলা হয়েছে।
এসব ছাড়াও সুপারিশে দেশের ওষুধের কাঁচামাল উৎপাদন, এককভাবে মূল্য বৃদ্ধির সুযোগ বন্ধ করে সকল অংশীজনের সমন্বয়ে আলোচনার মাধ্যমে যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ, ওষুধ কোম্পানিগুলোর মধ্যে নিজেদের অসুস্থ প্রতিযোগিতা বন্ধ, মোড়ক তৈরিতে ব্যয় হ্রাস ও চিকিৎসকরা ব্যবস্থাপত্রে কোনও নির্দিষ্ট কোম্পানির ঔষুধ লেখার বিনিময়ে ওই কোম্পানির কাছ থেকে কোনও অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করছে কি না তা পর্যবেক্ষণ করা যেতে পারে বলেও প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়।