ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয় পর্যবেক্ষণের আহ্বান

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ২৪ জুন, ২০২৩ ০৮:৩৭ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৩১৩ বার


আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয় পর্যবেক্ষণের আহ্বান

বাংলাদেশ সফরে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জেনারেল জাঁ পিয়ের ল্যাক্রোয়ারকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণ করার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। একইসঙ্গে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘনে যারা জড়িত তারা যেন জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে যেতে না পারে সেটিও নিশ্চিতের আহ্বান জানায় যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

 

 

শুক্রবার (২৩ জুন) এক বিবৃতিতে এ কথা জানায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

 

 

বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ দীর্ঘ তিন দশক ধরে জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে বাহিনী প্রদান করছে। শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশ সবথেকে বড় অবদান রাখে।

 

 

অতীতে বাংলাদেশি নিরাপত্তা বাহিনী- বিশেষ করে র্যপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) দ্বারা সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি আমলে নিলে এটি বেশ উদ্বেগজনক। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, বর্ডার গার্ড এবং পুলিশ নিয়ে গঠিত র্যাব অফিসারদের বিরুদ্ধে গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে রাজনীতিক, মানবাধিকারকর্মী, ভিন্নমতাবলম্বী ও প্রতিবাদকারীদের লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে।

 

 

অতীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল, তখন তারা গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবার, মানবাধিকার রক্ষাকারী এবং সুশীল সমাজের বিরুদ্ধে হুমকি, ভয়ভীতি এবং হয়রানির প্রচারণা শুরু করেছিল বলে জানা গেছে। র্যাব অফিসারদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের এই অভিযোগগুলি বিবেচনা করে, জাতিসংঘের উচিত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে র্যাব সদস্যদের নেওয়া স্থগিত করে। র্যাব ছাড়াও বাংলাদেশের অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর দ্বারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে।

 

 

বিবৃতিতে বলা হয়, গত বছরের ডিসেম্বরে যখন হাজার হাজার মানুষ শাসক দলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে রাস্তায় নেমেছিল তখন বাংলাদেশি পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালায়। এই ঘটনায় একজন নিহত এবং প্রায় ৬০ জন আহত হয়। পুলিশ এবং সেইসঙ্গে বেসামরিক আইন প্রয়োগকারী সৈন্যরা সন্দেহভাজনদের নির্যাতন করেছে, যৌন হেনস্থাসহ বিভিন্ন ধরনের শারীরিক নির্যাতন করেছে এবং হত্যা করেছে বলে জানা গেছে।

 

 

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, শান্তিরক্ষী বাহিনীতে সদস্যদের অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে মানবাধিকার লঙ্ঘনসংক্রান্ত বিষয় যাচাই-বাছাই করে জাতিসংঘ। এই যাচাই-বাছাই শুধু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের মধ্যে সীমিত রাখা উচিত হবে না। বাংলাদেশে নিরাপত্তা বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্তদের মুক্তি দেওয়ার রেকর্ড রয়েছে।

 

 

বাংলাদেশকে এসব মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা আমলে নিয়ে অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের যেন নিজ দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ইতিহাস না থাকে, তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সফরে জাঁ পিয়ের ল্যাক্রোয়াকে মূল নজর দিতে হবে বাংলাদেশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মানবাধিকারসংক্রান্ত বিষয়ে।

 

 

বর্তমানে ৭ হাজার ৪৩৬ জন বাংলাদেশি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের সাথে নিযুক্ত আছেন। এই শান্তিরক্ষীদের মধ্যে সেনাবাহিনী ২০টি, নৌবাহিনী দুটি, বিমান বাহিনী চারটি এবং পাশাপাশি পুলিশ তিনটিসহ জাতিসংঘের ১৪টি মিশন ও কার্যক্রমে কাজ করছে।

 

 

প্রসঙ্গত, জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা প্রধান ল্যাক্রোয়া ২৫-২৬ জুন বাংলাদেশ সফর করবেন।


   আরও সংবাদ