আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ জুলাই, ২০২৩ ০৮:৫৯ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ১৬১ বার
বিশ্বজুড়ে প্রতিনিয়ত বাড়ছে ডেঙ্গুর বিস্তার। ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে মশাবাহিত এ রোগটি। করোনা সংক্রমণ, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি, তাপপ্রবাহ, অতিবর্ষণ, ভূমিধস, বন্যার প্রকোপের সঙ্গে সমানতালে বাড়ছে ডেঙ্গু। চলতি বছর বিশ্বজুড়ে এই রোগটি রেকর্ড করতে যাচ্ছে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
সংস্থাটি বলছে, বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ডেঙ্গুতে আক্রান্তদের সংখ্যা। এই মুহূর্তে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন। বৃষ্টিবহুল ও উষ্ণ অঞ্চলে অকল্পনীয় দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে রোগটি।
বর্তমানে ডেঙ্গুর বিস্তার রোধ করা না গেলে চলতি বছরই রেকর্ড সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হবেন। সামনের দিনে আসতে পারে ডেঙ্গু মহামারির ঘোষণা।
শুক্রবার (২১ জুলাই) সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জেনেভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
ডব্লিউএইচওর কন্ট্রোল অব নেগলেক্টেড ট্রপিক্যাল ডিজিজ বিভাগের বিশেষজ্ঞ ড. রমন ভেলাইউধান বলেন, ২০০০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত গত ২২ বছরে বিশ্বজুড়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর হার বেড়েছে আটগুণ। চলতি বছর ২০২৩ সালে তা আরও বাড়বে।
সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউএইচওর বিশেষজ্ঞ বলেন, হাতে থাকা তথ্য অনুসারে বর্তমানে বিশ্বের ১২৯টি দেশে ৫২ লাখ মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। তাদের মধ্যে প্রায় ৩০ লাখ মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশের। আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে বলিভিয়া, প্যারাগুয়ে এবং পেরুতে আক্রান্তদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
তিনি বলেন, সংক্রমণের বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে আক্রান্তদের সংখ্যায় অল্প কিছুদিনের মধ্যে আরও ৪০ লাখ মানুষ যুক্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এশিয়ার দেশগুলো হয়ত ডেঙ্গু রোগের বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে, কিন্তু মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর জন্য এর বিস্তার নিয়ন্ত্রণ বড় একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
সংবাদ সম্মেলনে ডা. রমন ভেলাইউধান বলেন, ডব্লিউএইচওর কাছে আক্রন্ত রোগীদের যে পরিসংখ্যান রয়েছে, তাতে অধিকাংশ রোগীই আক্রান্ত হওয়ার পর জ্বর, মাংসপেশিতে ব্যথা প্রভৃতি উপসর্গে ভুগছেন। অনেকের আবার দেহে কোনো উপসর্গ নেই, কিন্তু প্লাটিলেট আশঙ্কাজনক পর্যায়ে নেমে গেছে। এই আক্রান্তদের মধ্যে অন্তত ১ শতাংশ মারা গেছেন।
ডা. রমন বলেন, ডেঙ্গুর বিস্তারের জন্য প্রয়োজন উষ্ণ আবহাওয়া। এডিস মশা এই রোগের প্রধান বাহন হিসেবে কাজ করে, এডিসের বংশবৃদ্ধির জন্য সবচেয়ে উপযোগী নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া।
ডা. রমন ভেলাইউধান আরও বলেন ঘুমানোর সময়ে মশারির ব্যবহার, বাসাবাড়ি ও অফিস আদালতে পানি জমতে না দেওয়া— এগুলো হয়তো খানিকটা সুরক্ষা দিতে পারে। কিন্তু এই রোগটি ঠেকানোর সবচেয়ে কার্যকর পন্থা হলো এডিস মশা ও সেটির প্রজনন ক্ষেত্র সম্পূর্ণ ধ্বংস করা।
তাই ডব্লিউএইচওর পক্ষ থেকে বিশ্ববাসীকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।