ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

রাশিয়ার খাদ্যচুক্তি বাতিলের প্রভাব পড়ছে এশিয়ায়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক


প্রকাশ: ২২ জুলাই, ২০২৩ ১০:৩৬ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ১৫০ বার


রাশিয়ার খাদ্যচুক্তি বাতিলের প্রভাব পড়ছে এশিয়ায়

কৃষ্ণ সাগরে রাশিয়ার শস্যচুক্তি বাতিলের প্রভাবে এশিয়ায় ধীরে ধীরে খাদ্যমূল্যের দাম বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইউক্রেন থেকে আমদানি কমে যাওয়ায় পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে বিশ্বের অন্য দেশ থেকে সরবরাহ বাড়াতে হবে।

 

 

জানা গেছে, কৃষ্ণ সাগর চুক্তির অধীনে রপ্তানি করা পণ্যের ৪৬ শতাংশের ভোক্তা এশিয়া। যেখানে ইউরোপীয় পশ্চিমা এবং আফ্রিকানরা যথাক্রমে ৪০ শতাংশ এবং ১২ শতাংশ পণ্যের ভোক্তা।

 

 

জাতিসংঘের তথ্যমতে, চীন একক দেশ হিসেবে সবচেয়ে বেশি পণ্য আমদানি করে থাকে। দেশটি প্রতি চার মাসে প্রায় ৭ দশমিক ৭ মিলিয়ন টন পণ্য আমদানি করে। যার মধ্যে ৫ দশমিক ৭ মিলিয়ন টন ভুট্টা, ১ দশমিক ৮ মিলিয়ন টন সূর্যমুখী বীজের দানা, তিন লাখ ৭০ হাজার টন সূর্যমুখী তেল এবং তিন লাখ ৪০ হাজার টন বার্লি।

 

 

সেন্টার ফর গ্লোবাল স্টাডিজ স্ট্র্যাটেজির এশীয় অঞ্চলের প্রধান অকসানা লেজনিয়াক আলজাজিরাকে বলেন, চীনের ভুট্টা আমদানির ৩০ শতাংশ আসে ইউক্রেন থেকে। যা খাবার, রান্নার তেল ও পশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

 

 

কিয়েভ স্কুল অব ইকোনমিকসের গবেষক পাভলো মার্টিশেভ আলজাজিরাকে বলেন, শস্যচুক্তি বাতিলের ফলে এশিয়ার খাদ্য নিরাপত্তার ওপর প্রভাব পড়বে। এ জন্য খাদ্যশস্য, তেলবীজ ও ভেজিটেবল ওয়েলের দাম বেড়ে যাবে। যদিও বর্তমানে এ অঞ্চলে খাদ্যশস্যের সংকট নেই। তারা অন্য অনেক দেশের চেয়ে অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল হওয়ায় পর্যাপ্ত খাদ্যের জোগান রয়েছে।

 

 

মার্টিশেভ বলেন, চীন খাদ্যের জন্য বিকল্প বাজার তৈরি করেছে। তারা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে ২০২২ সালে ব্রাজিলের সাথে ভুট্টা আমদানির চুক্তি করেছে। বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট বিরূপ আবহাওয়া ও রাশিয়ার চুক্তি বাতিলের কারণে এই মাসের শেষের দিকে খাদ্যপণ্যের দাম বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করেন তিনি। যদিও উত্তরাঞ্চলে নতুন ফসল কাটার মওসুমের কারণে এর তেমন কোনো প্রভাব দেখা যায়নি।

 

 

জাকার্তাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (সিএসআইএস) নির্বাহী পরিচালক ইয়োস রিজাল দামুরি বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গমভিত্তিক খাদ্যাভ্যাসের দেশগুলো গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার ইউক্রেনে হামলার পর ১০-১৫ শতাংশ আমদানি কমিয়েছে। ফলে এটা তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

 

 

দামুরি বলেন, এটার প্রত্যক্ষ প্রভাবের চেয়ে পরোক্ষ প্রভাব অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ফলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার যেসব দেশে ইআই নিনো আবহাওয়া চক্রের কারণে ফসল সংগ্রহ ব্যাহত হবে, তারা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিরূপ আবহাওয়ার কারণে তাদের খাদ্য সরবরাহে প্রভাব পড়বে। এ ছাড়া তারা এখনো উচ্চ মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পারেনি।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের জুলাইয়ে রাশিয়া ইউক্রেনের মাঝে যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় কৃষ্ণ সাগরে বছরব্যাপী শস্য রপ্তানির চুক্তি হয়। তবে মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় ১৭ জুলাই থেকে রাশিয়া আন্তর্জাতিক অংশী সম্প্রদায়ের কাছে তাদের ওপর দেওয়া রপ্তানি বিধিনিষেধ তুলে না নেওয়া পর্যন্ত এ করিডোরে শস্য রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেয়। রাশিয়ার দাবি, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দেওয়া শস্য ও সার রপ্তানিতে বিধিনিষেধ তুলে নিলেই করিডোর পুনরায় চালু করা হবে।

 

 

অন্যদিকে ইউক্রেন বলেছে, রাশিয়া সহযোগিতা করুক আর না-ই করুক তারা বিশ্বে শস্য রপ্তানি চালিয়ে যাবে। কেননা বিশ্বকে খাদ্য সংকটে ফেলার একক অধিকার কারও নেই। জাতিসংঘ বলছে, রাশিয়ার এমন পদক্ষেপ বিশ্ব খাদ্য পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করে তুলবে।


   আরও সংবাদ