ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১৯:৫৪ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ১৮৮ বার
দীর্ঘ জল্পনা-কল্পনার পর অবশেষে সাময়িক বরখাস্ত হলেন পুলিশের বহুল বিতর্কিত অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশীদ।
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সিনিয়র সচিব মো. মুস্তাফিজুর রহমানের (বিপিএএ) স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, যেহেতু হারুন-অর-রশীদ, পিপিএমকে জনস্বার্থে সরকারি কর্ম থেকে বিরত রাখা আবশ্যক ও সমীচীন সেহেতু, তাকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ (২০১৮ সালের ৫৭ নং আইন) এর ৩৯ (১) ধারার বিধান মোতাবেক অদ্য ১১-৯-২০২৩ তারিখ থেকে সরকারি চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
সাময়িক বরখাস্তকালীন তিনি পুলিশ অধিদপ্তরে সংযুক্ত থাকবেন এবং বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতাপ্রাপ্ত হবেন।
এর আগে ছাত্রলীগ নেতাদের নির্যাতনের ঘটনায় রোববার তাকে রমনা বিভাগ থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ অর্ডার ম্যানেজমেন্টে (পিওএম) সংযুক্ত করা হয়। পরে হারুনকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে (এপিবিএন) বদলি করা হয়।
ছাত্রলীগ নেতাদের নির্যাতনের ঘটনায় সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে দেখা করেন সংগঠনিক সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।
ছাত্রলীগ ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হারুনকে বদলি করে দেওয়ায় সন্তুষ্ট নয় ছাত্রলীগ। এজন্য নেতাকর্মীদের ক্ষোভের কথা ডিএমপি কমিশনারকে জানান সাদ্দাম ও ইনান।
সূত্র জানায়, অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশীদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হচ্ছে। আজই এ সিদ্ধান্ত জানানো হতে পারে।
এর আগে শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর শাহবাগ থানায় ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতাকে পুলিশ নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করে বলে অভিযোগ ওঠে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন- ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ।
ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, এডিসি হারুন শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে আরেক নারী পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে বারডেম হাসপাতালে আড্ডা দিচ্ছিলেন। ওই সময় নারী কর্মকর্তার স্বামী কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যান। নারী কর্মকর্তার স্বামীও একজন সরকারি কর্মকর্তা। তার সঙ্গে এডিসি হারুনের বাগ্বিতণ্ডা হয়। পরে এডিসি হারুন দুই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতাকে শাহবাগ থানায় তুলে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করেন। এরপর অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়লে ওই দুজনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। অবশ্য পুরো ঘটনাই অস্বীকার করেন এডিসি হারুন। তিনি কালবেলাকে বলেন, ‘আমি এসব কিছু জানি না।’
এ ঘটনার পর আহত নাঈমকে প্রথমে ঢামেক হাসপাতাল, এরপর মালিবাগের ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ডেন্টাল বিভাগে ভর্তি করা হয় তাকে।
এদিকে নির্যাতনের অভিযোগে এডিসি হারুনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। প্রত্যাহার করে তাকে পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট ( পিওএম) বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে বলে কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির এক কর্মকর্তা।
এ ছাড়া নির্যাতনের ঘটনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ডিএমপি। এ কমিটিকে আগামী দুদিনের মধ্যে তদন্ত করে ডিএমপি কমিশনার বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।