ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ৯ অক্টোবর, ২০২৩ ১১:৫০ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ১৭৩ বার
মডেল নম্বর বললেই চলে। চুরি করে ঠিকই মোটরসাইকেল খুঁজে বের করে এক দল; আরেক দলে থাকে চোরদের ডিলার। তারাই মূলত চাহিদাপত্র পাঠায় চোর চক্রের কাছে। রাজধানী থেকে চুরি হওয়া মোটরসাইকেলের বেশিরভাগই চলে যায় মুন্সীগঞ্জের একটি নির্দিষ্ট গ্রামে। চোর চক্রের এমন দুই সদস্যকে ধরা ছাড়াও তাদের কাছ থেকে ১১টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এদের কাছ থেকে জানা গেছে, মোটরসাইকেল চুরির চাঞ্চল্য তথ্য।
ঢাকা শহরের কয়েকটি স্থানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, একটি মোটরসাইকেল চুরি করার আগে রেকি করতে বের হন দুজন। তাও আবার মোটরসাইকেলে চড়েই। সেটিও চুরি করা। টার্গেট করা মোটরসাইকেলের আশপাশে গিয়ে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করেন তারা। পরে সুযোগ বুঝে মাস্টার চাবি দিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে চম্পট দেন তারা।
প্রতিদিন রাজধানী থেকে কী পরিমাণ মোটরসাইকেল চুরি হয় এবং চোর চক্রের সঙ্গে কতজন জড়িত, তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই পুলিশের কাছে। অনেকেই আবার মোটরসাইকেল চুরির পর থানায় অভিযোগও করেন না। এমন তথ্য জানা গেছে পুলিশের কাছে থেকে।
গ্রেফতার হওয়া চোর চক্রের দুই সদস্য গোয়েন্দা পুলিশকে জানায়, তাদের এ চক্রে শুধু চোর নয়, রয়েছে চোরের ডিলারও। এদের একজন শহীদুল। তিনি মুন্সীগঞ্জের এক ডিলারকে মোটরসাইকেলের চাহিদাপত্র পাঠান প্রথম। মডেল নম্বর অনুযায়ী মোটরসাইকেল চুরি করতে মাঠে নামেন রাজু নামের আরেকজন। পরে এসব চোরাই মোটরসাইকেলের ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে পাঠিয়ে দেন মুন্সীগঞ্জের প্রত্যন্ত এক গ্রামে।
সম্প্রতি এ বিষয়টি নিয়ে সময় সংবাদের সঙ্গে কথা হয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি প্রধান) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদের।
তিনি বলেন, একদিকে তারা মোটারসাইকেল চুরি করেন, আবার সেটিকে জায়েজ করার জন্য যা যা দরকার তাই করেন। যেমন চুরি মোটরসাইকেলটি যখন কারও কাছে বিক্রি করবেন ওই মানুষটি তখন জানতে চাইবে এটি নিলাম হয়েছে কিনা। তখন তারা নিলামের একটি কাগজ দেখান অর্থাৎ ভুয়া নিলামের কাগজপত্রও আছে তাদের কাছে। ম্যাজিস্ট্রেটের সাইন নকল করছেন তারা। দেখতে আসলের মতো - এমন কাগজপত্র তৈরি করছে চক্রটি। তারপর বাংকের যে চালান, সেটাও নকল করে বিআরটিতে যায়। সেখানকার নকল কাগজপত্র তৈরি করে মোটরসাইকেলটি বিক্রি করছে এ চোর চক্রটি।
ডিবি প্রধান বলেন, চক্রটি সীমান্তবর্তী এলাকা বিশেষ করে যশোর এবং কসবা দিয়েও মোটরসাইকেল দেশে নিয়ে আসছে। এগুলোকে তারা নাম দিয়েছে প্যাকেট এবং টানা মোটরসাইকেল।
তিনি বলেন, কিছু মোটরসাইকেল তারা ভারত থেকে প্যাকেট করে আনেন; এজন্য নাম দিয়েছে প্যাকেট মোটরসাইকেল। আবার ভারতে ব্যবহার হয়েছে এমন কিছু মোটরসাইকেল আনেন, সেগুলোর নাম দিয়েছে টানা। বিশেষ করে বর্ডার দিয়ে নিয়ে আসছে এসব মোটরসাইকেল। যশোর ও কসবা সীমান্ত বর্ডার দিয়ে তারা এগুলো নিয়ে আসছে। এছাড়াও ঢাকা শহর থেকেও তারা মোটরসাইকেল চুরি করছে। বর্তমানে এসব চোরাই মোটরসাইকেল ক্রেতাদের তালিকা তৈরি করছে বলে জানায় গোয়েন্দা পুলিশ।