ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১০:৪৯ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৪৮ বার
সিলেট: সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (সিওমেক) হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে হাসপাতালের তিনজন সিনিয়র নার্সসহ আটজনের নামে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুদক সিলেট জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক নিঝুম রায় প্রান্ত বাদী হয়ে মহানগর দায়রা জজ হাবিবুর রহমান সিদ্দিকর আদালতে মামলাটি দাখিল করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- ওই হাসপাতালের সিনিয়র নার্স ও সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নার্সিং অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলোচিত ইসরাইল আলী সাদেক, সিনিয়র নার্স আমিনুল ইসলাম ও সুমন চন্দ্র দেব, হাসপাতালে কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল জনি চৌধুরী, ওসমানী মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান, হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার রওশন হাবিব, নিরাপত্তা প্রহরী আবদুল জব্বার ও সরদার আবদুল হাকিম।
মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, ঘুষ গ্রহণ, সরকারি ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম বিক্রিসহ বিভিন্ন অনিময়-দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়েছে।
মামলার প্রধান আসামি ইসরাইল আলী সাদেক বর্তমানে প্রতারণা মামলায় কারাগারে রয়েছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে- আসামিরা সংঘবদ্ধ দুর্নীতি চক্রের সদস্য। নার্স ইসরাইল, ওয়ার্ড মাস্টার রওশন ও নিরাপত্তাকর্মী জব্বারের কাছে হাসপাতালের শত শত কর্মচারী জিম্মি। হাসপাতালের কর্মচারীদের জিম্মি, প্রতারণা, ঘুষবাণিজ্যসহ দুর্নীতির মাধ্যমে তারা হাজার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন। চাকরি হারানো ও বদলির ভয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস করে না। আসামিদের দুর্নীতি, ঘুষবাণিজ্য, অনিয়ম, অর্থ আত্মসাতের বিরুদ্ধে হাসপাতালের কেউ মুখ খুললে বা আইনের আশ্রয় নিলে আসামিরা তাদের হত্যা করে লাশ গুম করার হুমকি দিত।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, তারা প্রতারণা, চুরি, টেন্ডারবাণিজ্য, হাসপাতালের সরকারি ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম বাইরে বিক্রিসহ বিভিন্ন দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল অর্থসম্পদের মালিক হয়েছেন। আসামিরা হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের পছন্দ মতো বেড পাইয়ে দেওয়া, দ্রুত অস্ত্রোপচার করিয়ে দেওয়ার কথা বলে রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত টাকা নেন।
এছাড়া প্রধান আসামি ইসরাইল আলী সাদেক নিজেকে আওয়ামী লীগের লোক পরিচয় দিয়ে একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী হয়ে ওঠেন। একজন নার্স হয়েও মাত্র কয়েক বছরে অবৈধভাবে শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন সাদেক। তার বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য, যৌন হয়রানি, ভুয়া বিল দিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
সিলেট নগরে ইসরাইল আলী সাদেকের নামে ও দখলে ছয়/সাতটি ভবন, স্ত্রী-সন্তান ও স্বজনদের নামে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ রয়েছে। রোগী পরিবহনের জন্য ইসরাইল আলী সাদেকের ৩৫/৪০টি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে।
মামলার আসামি পুলিশ কনস্টেবল জনি চৌধুরী দীর্ঘ ১০ বছর ওসমানী হাসপাতালে কর্মরত থেকে হাসপাতালের ভেতরে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।
ওসমানী মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান সংঘবদ্ধ দুর্নীতিবাজ চক্রের সদস্য হয়ে অবৈধভাবে লাভবান হয়েছেন। মামলার অন্য আসামিরাও এই অপরাধীচক্রের সহযোগী হয়ে বিপুল অর্থ-সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।