ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০৯:৩৬ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৭৩ বার
সিলেট: সিলেট ও সুনামগঞ্জে একদিনে চার কৃষক ও এক কিশোরসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তীব্র খরতাপের পর ঝড়ো বৃষ্টি চলাকালে বজ্রপাতে তাদের মৃত্যু হয়।
এর মধ্যে সিলেটের জৈন্তাপুর ২ জন, কানাইঘাটে ২ জন এবং সুনামগঞ্জে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
বজ্রপাতে নিহতরা হলেন, সিলেটের কানাইঘাটে উপজেলার দলইমাটি গ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে নুরুদ্দিন (৬০) ও লক্ষীপ্রসাদ ইউনিয়নের কেওটিহাওর গ্রামের আব্দুল মিয়ার ছেলে কালা মিয়া (২৮), পার্শ্ববর্তী জৈন্তাপুর উপজেলার নিজ জৈন্তাপুর ইউনিয়নের আগফৌদ গ্রামের নূরুল হকের ছেলে নাহিদ আহমদ (১৩),একই ইউনিয়নের ভিত্রিখেল বড়বন্দ গ্রামের কালা মিয়ার ছেলে আব্দুল মান্নন মনই (৪৫) এবং সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার দক্ষিণ বাদাঘাট ইউনিয়নের সিরাজপুর চরপারা গ্রামের মৃত সলতু মিয়ার ছেলে দ্বীন ইসলাম (৬৫)।
কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার বাংলানিউজকে বলেন, বজ্রপাতে মারা যাওয়া দু’জন পেশায় কৃষক। শনিবার দুপুরে ঝড়োবৃষ্টির সময় পৃথকস্থানে বজ্রপাতে তাদের মৃত্যু হয়।
এদিকে, জৈন্তাপুর উপজেলায় পৃথক স্থানে বজ্রপাতে আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। তন্মধ্যে আব্দুল মান্নান মাঠে কাজ করছিলেন। আর নাহিদ বাড়ির পাশেই একটি স্থানে দাঁড়িয়ে থাকাবস্থায় বজ্রপাতে প্রাণ হারান।
জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম (ওসি) বলেন, বজ্রপাতে নিহতদের মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে মরদের সুরতহাল প্রস্তুত করা হয়েছে।
জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালিক রুমাইয়া বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক উল্লেখ করে গণমাধ্যমকে বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতের পরিবারগুলোর তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। বজ্র বৃষ্টি চলাকালে সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার পরামর্শ দেন।
এছাড়া একইদিনে দুপুরে সুনামগঞ্জে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার দক্ষিণ বাদাঘাট ইউনিয়নের সিরাজপুর চরপারা গ্রামে বজ্রপাতে মারা যান দ্বীন ইসলাম।
স্থানীয়রা জানান, ঘটনার সময় নিজ বাড়ির সামনে চারা জমিতে লাকড়ি তুলতে যান দ্বীন ইসলাম। এসময় বজ্রপাতে তিনি ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান।
স্থানীয় ইউপি সদস্য কালাম হোসেন বলেন, বাড়ির সামনে চারা জমিতে রোদে দেওয়া লাকড়ি শুকাতে দিয়েছিলেন দ্বীন ইসলাম। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হওয়াতে শুকনো লাকড়িগুলো তুলতে গেলে আকস্মিক বজ্রপাতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বজ্রপাতে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। আমরা প্রতিবেদন ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো। নিহতের পরিবার সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা পেতে পারেন।
অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু ঠেকাতে করণীয়: মৌসুমের এই সময়ে বজ্রপাত বেশি হয়। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এ বিষয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেটের শাহ মো. সজিব আহমদ বলেন, এ মাসে বজ্রবৃষ্টির আরও পূর্বাবাস রয়েছে। সাধারণত এই সময়ে বজ্রপাতের সম্ভাবনা বেশি। তাই অসচেতনায় যেনো একটি প্রাণ না ঝরে। এজন্য সবাইকে সচেতনতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, বজ্রপাতের মেঘ হয় কালো রঙের। বজ্রপাতের মেঘ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না। এটা দেখলে নিরাপদে যেতে হবে। এটা সিজনাল মেঘ বা বৃষ্টি ভাবার অবকাশ নেই। পূর্বাভাস জানতে আধুনিক প্রযুক্তি না থাকলে আবহাওয়া অফিসের নাম্বারে যোগাযোগ করা যায়। সে পর্যন্ত পৌছানো না গেলেও নিজেরা কালো মেঘ দেখলে নিরাপদে আশ্রয় নেওয়াটা জরুরী। প্রাণ বাঁচাতে একে অন্যকে সচেতন করতে হবে।