ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

মেসির হ্যাটট্রিক, বলিভিয়ার জালে ৬ গোল আর্জেন্টিনার

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর, ২০২৪ ০৯:৪২ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৫৩ বার


মেসির হ্যাটট্রিক, বলিভিয়ার জালে ৬ গোল আর্জেন্টিনার

৩৩৩ দিন পর আর্জেন্টিনার মাটিতে লিওনেল মেসির ম্যাচ। ফরোয়ার্ড লাইনে তাঁর সঙ্গী লাউতারো মার্তিনেজ, হুলিয়ান আলভারেজ। আর্জেন্টিনার মঞ্চ ঐতিহাসিক এস্তাদিও মনুমেন্তাল। এই মনুমেন্তালে রীতিমত বলিভিয়ার জন্য আর্জেন্টিনা হয়ে উঠল ‘মনুমেন্টাল’। লাউতারো-মেসি-আলভারেজ ত্রয়ী ছড়িয়ে গেলেন মুগ্ধতা, আর লিওনেল মেসি আবারো ৮৫,০০০ মানুষের সামনে প্রমাণ করে গেলেন, ৩৭ বছর বয়সেও ফিট থাকলে বিশ্বকাপজয়ী, কোপা আমেরিকাজয়ী মেসি এখনো জাদুর মোহে আটকে রাখেন পুরো স্টেডিয়াম–মেসি এখনো চমৎকার। লাতিন অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে ঘরের মাঠে আর্জেন্টিনা বলিভিয়াকে বিধ্বস্ত করেছে ৬-০ গোলে

 

বুয়েনস আইরেসে রিভার প্লেটের ঘরের মাঠে ঝড়ের একটা পূর্বাভাস কিন্তু দিয়েই রেখেছিলেন আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি। জানিয়েছিলেন একসঙ্গে মেসি, আলভারেজ, লাউতারোকে শুরু করানোর কথা জোরালোভাবে ভাবছেন তিনি। মেসির সঙ্গে এর আগে সবসময়ই কখনো লাউতারো, কখনো আলভারেজ ম্যাচে শুরু করেছেন, দ্বিতীয়ার্ধে উঠে গিয়ে আরেকজন নেমেছেন। তিনজনই একসঙ্গে ম্যাচে শুরু করলেন, স্কালোনির টোটকা কাজ করবে তো?

 

বরং সে সন্দেহর মেঘ দূরে সরিয়ে দিয়ে এই তিনজন রীতিমত মুগ্ধতা ছড়িয়ে গেছেন প্রথমার্ধে। প্রথম তিন গোল সমানভাবে যেমন ভাগ করে নিয়েছেন নিজেদের নামে, তেমনি একে অপরের গোলেও রেখেছেন অবদান। মেসি আর ম্যাচের প্রথম গোলের কথাই ধরুন না। ১৮ মিনিটে লাউতারো আগ্রাসীভাবে প্রেস করে মার্সেলো সুয়ারেজের থেকে বল কেড়ে নিলেন। এরপর মেসির কাছে বল, ভিসকারাকে ফাঁকি দিয়ে বাঁ পায়ের চমৎকার এক ফিনিশ।

 

এরপর ৪২ মিনিটে আলভারেজের পালা। গোলের খাতায় নাম লিখিয়েছেন আরো কিছুক্ষণ পরে, তবে যে সুযোগ তৈরি করে দিয়েছিলেন তখন, সেটা একটা গোল পাওয়ার মতই মূল্যবান। লেফট ফ্ল্যাংকে অনেকটা নিচে নেমে সূক্ষ্ম একটা পাসিং অ্যাঙ্গেল বের করে খুঁজে নিলেন মেসিকে। দুই ডিফেন্ডারকে পেছনে ফেলে চাইলে মেসিই গোলটা করতে পারতেন। কিন্তু বাড়িয়ে দিলেন লাউতারোকে। আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় গোলের মিনিট তিনেক পরে আবার গোল। এলএমটেন আর এল তোরোর পর এবার এলো এল আরানিয়ার পালা। মেসির ফ্রি কিকটা নিয়েছিলেন আলভারেজের নেওয়া দৌড়টা দেখেই। আলতো করে বলটা ছুয়ে ডান পা দিয়ে আলভারেজ বলটা পাঠিয়ে দিয়েছেন জালে। প্রথমার্ধে আর্জেন্টিনার তিন আক্রমণত্রয়ী থেকে তিনে তিন। 

 

লাউতারো, আলভারেজ সেখানে থেমে গেলেও তখনো বাকি ছিল ‘মেসি ম্যাজিক’। মাঝে থিয়াগো আলমাদা মাঠে নামার মিনিটখানেক পরে চমৎকার এক গোল পেয়েছেন। পারেদেস থেকে মলিনা, মলিনা থেকে আলমাদা– দ্রুত লয়ে তিন টাচের মধ্যেই গোল। কিন্তু ম্যাচের সুন্দরতম গোল তখনও বাকি ছিল। সে দুটো গোল এলো মেসির পা থেকেই।

 

৮৫ মিনিটে পালাসিওস থেকে মেসি বল পেলেন ‘মেসি জোন’-এ, যেখান থেকে বার্সেলোনার হয়ে, আর্জেন্টিনার হয়ে অসংখ্য গোল তিনি করেছেন। বলিভিয়ার একজন, দুইজন, তিনজনকে শুধু পাশ কাটিয়ে গিয়ে বক্সে ঢুকে শট নিলেন ডান পায়ে। আর্জেন্টিনার পঞ্চম, আর ম্যাচে মেসির দ্বিতীয় গোল। ঠিক তিন মিনিট পরই আলবিসেলেস্তেদের জার্সিতে অভিষেক হওয়া নিকো পাজের সঙ্গে ওয়ান-টু করে বামের হাফ স্পেইস থেকে চলে এলেন আবারও সেই ‘মেসি জোনে’। মেসির নেওয়া বাম পায়ের শট এক ডিফেন্ডার আর গোলকিপারকে পাশ কাটিয়ে জালে। মেসি পূর্ণ করলেন তাঁর ৫৮ তম হ্যাটট্রিক, দেশের হয়ে দশম। আলবিসেলেস্তেদের জার্সি গায়ে ছুয়েছেন ১১২ গোলের মাইলফলকও। সঙ্গে ছয় গোল নিয়ে তিনিই এখন লাতিন অঞ্চলে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে সর্বোচ্চ গোলদাতা।

 

মনুমেন্তালে ‘পারফেক্ট’ এক রাতে দারুণভাবে আন্তর্জাতিক বিরতি শেষ করলো আর্জেন্টিনা। সেই সঙ্গে ১০ ম্যাচ থেকে ২২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থানটা পাকাপোক্ত করলো লিওনেল স্কালোনির দল।

 


   আরও সংবাদ