ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৬০২ বার
২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে দেশে সব স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর করোনা মহামারী অব্যাহত থাকায় ধাপে ধাপে বাড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটির মেয়াদও। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি অফিস ও আদালত থেকে শুরু করে প্রায় সব কিছুই স্বাভাবিক হয়েছে। কিন্তু বছরপূর্ণ হলেও সচল হয়নি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। এ নিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে। তবে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ২৯ মার্চ পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। ধারণা করা হচ্ছে, কোভিড-১৯ পরিস্থিতির অবনতি না হলে এরপর স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরবে। তবে এর আগে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের টিকাদান নিশ্চিত করতে চায় সরকার।
দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে গত বছরের ৮ মার্চ। এর ১০ দিন পর প্রথম মৃত্যু হয় করোনায়। এর আগের দিন থেকেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এর পর দফায় দফায় এই ছুটি বাড়ানো হয়। আগামী ৩০ মার্চ থেকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা থাকলেও সম্প্রতি সংক্রমণ বেড়ে গেছে। সবশেষ গত দু’দিনে ২৬ জন করে মারা গেছেন করোনায়। সংক্রমণ শনাক্তও আবার হাজারের বেশি হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে স্কুল ছুটি বাড়ানো হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক।
তবে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবেকদের অনেকে বলছেন, এক বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার চরম ক্ষতি হয়েছে। প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থীর পড়াশোনা বিঘ্নিত হয়েছে গত এক বছর। সংক্রমণ পরিস্থিতিতে গত বছরের প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষা, জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা বাতিল করা হয়।
গত বছরের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষাও হয়নি। পরীক্ষা না নিয়েই এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়নের ফল গত জানুয়ারিতে ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়াও প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে বার্ষিক পরীক্ষা ছাড়াই শিক্ষার্থীদের পরের শ্রেণীতে উত্তীর্ণ করা হয়েছে। চলতি বছরের এসএসসি ও দাখিলসহ সমমানের পরীক্ষা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। তা ছাড়া এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষারও সময় ঘনিয়ে আসছে। এর মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া সম্ভব না হলে শিশু-কিশোরদের শিক্ষাজীবন মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
যদিও করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি থাকলেও ‘অনলাইন শিক্ষা’ কার্যক্রম চালু রেখেছে সরকার। স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চলমান আছে। কিন্তু গ্রামীণ শিক্ষার্থীরা এর সুফল খুব একটা নিতে পারছে না। কওমী মাদাসাগুলো অবশ্য আগেই খুলে দেয়া হয়েছে। এসব মাদরাসায় শিক্ষাকার্যক্রম স্বাভাবিক গতিতেই চলছে। মাদরাসাগুলো খুলে দেয়ার পর করোনার কোনো প্রভাব এসব ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লক্ষ্য করা যায়নি।