ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৫৮৬ বার
‘বার্সেলোনাকে অভিনন্দন জানানোর কিছু নেই’—এমন স্লোগান লেখা কয়েকটি ব্যানার টাঙানো হয়েছে প্যারিসের রাস্তায়। অতি উৎসাহী কিছু ভক্ত জেরার্দ পিকের বান্ধবী শাকিরাকে আক্রমণ করেও লিখেছেন কিছু ব্যানার। পিএসজি-বার্সেলোনার আজকের ম্যাচে উত্তেজনার পারদ কতটা চড়ে আছে বোঝা যাচ্ছে এতে। আবার ২০১৭ সালের সেই মহাকাব্যের জন্য প্রত্যাশাটা বাড়ছে বার্সেলোনা ভক্তদেরও। সেবার প্যারিসে ৪-০ গোলে জিতেও ন্যু ক্যাম্পে ৬-১ ব্যবধানে হেরে বাদ পড়েছিল পিএসজি।
ফ্রান্সের দলটির বুক ভেঙেছিলেন নেইমার। আজ বার্সেলোনার বিপক্ষে পিএসজির প্রধান হাতিয়ার হতে পারতেন তিনিই। কিন্তু ২২২ মিলিয়ন ইউরোয় ঠিকানা বদলে প্যারিসে আসা এই ব্রাজিলিয়ান চোটের জন্য মাঠের বাইরে। অনুশীলনে ফিরলেও তাঁর অনুপস্থিতির বিষয়টি গতকাল নিশ্চিত করেছে পিএসজি। মেসি-নেইমারের স্বপ্নের দ্বৈরথ তাই হচ্ছে না, যা স্বস্তির রোনাল্ড কোম্যানের জন্য। ডি ইয়ং তো বলেই ফেললেন,‘ নেইমারের না থাকাটা আমাদের কাজ সহজ করে দিবে।’ তাই ন্যু ক্যাম্পে ১-৪ গোলে হারের ব্যবধান কমানোর স্বপ্নেই প্যারিসের বিমানে চড়েছেন তাঁর শিষ্যরা। এ ছাড়া আজ নকআউট দ্বিতীয় লেগের অপর ম্যাচে অ্যানফিল্ডে লিপজিগের মুখোমুখি লিভারপুল। প্রথম লেগে ২-০ গোলের জয়ে স্বস্তিতে ইয়ুর্গেন ক্লপ। শঙ্কা শুধু অ্যানফিল্ডের সাম্প্রতিক রেকর্ড। লিগে নিজেদের মাঠে টানা ছয় ম্যাচ যে হেরে গেছে লিভারপুল!
কিলিয়ান এমবাপ্পের হ্যাটট্রিকে প্রথম লেগে ৪-১ গোলে বার্সাকে বিধ্বস্ত করেছিল পিএসজি। এর পরও দ্বিতীয় লেগের আগে সতর্ক কোচ মরিসিও পচেত্তিনো, ‘এখনো ৯০ মিনিট বাকি আর বার্সেলোনার অসাধারণ সব খেলোয়াড় আছে। দ্বিতীয় লেগ পুরোটা বাকি।’ বার্সা এখন অবশ্য বদলে যাওয়া এক দল। হুয়ান লাপোর্তা দ্বিতীয় দফা ফিরেছেন প্রেসিডেন্ট হয়ে। ২০০৩ থেকে ২০১০ পর্যন্ত তাঁর সময়েই স্বর্ণযুগ শুরু হয়েছিল কাতালানদের। তা ছাড়া কোপা দেল রে’র প্রথম লেগে ২-০ গোলে সেভিয়ার কাছে হারের প্রতিশোধ মেসিরা নিয়েছেন ৩-০ ব্যবধানে জিতে। আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে এ জন্য।
পরিসংখ্যানও সাহস জোগাতে পারে বার্সেলোনাকে। সর্বশেষ টানা চার ম্যাচ কোনো গোল হজম না করে জিতেছে তারা। এই মৌসুমে প্রতিপক্ষের মাঠে খেলা ২০ ম্যাচে জিতেছে ১৫টিতে। চ্যাম্পিয়নস লিগে জুভেন্টাসের মাঠে ০-২, ডিনামো কিয়েভের মাঠে ০-৪ আর ফ্রেংকভারোসের মাঠে জিতেছিল ০-৩ গোলে। ফিরে এসেছে শিরোপা জয়ের ক্ষুধাও। আজ তাই লড়াই করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন নতুন ক্লাব প্রেসিডেন্ট হুয়ান লাপোর্তা, ‘প্যারিসে যাব লড়াই করতে, যেন মাথা উঁচু করে মাঠ ছাড়তে পারি।’ হাল ছাড়ছেন না রোনাল্ড কোম্যানও, ‘আসলে কোন কিছুই অসম্ভব নয়। আমাদের কার্যকরী ফুটবল খেলতে হবে। সেরা একাদশ আমার মাথায় আছে, খেলোয়াড়দের জানাব ম্যাচের দিন। আমাদের যে ২২ জন খেলোয়াড় আছে তাদের নিয়ে যে কোন ছকেই খেলা যায়। লিওনেল মেসি আছে আমাদের দলে। ও ছন্দে থাকলে সবই সম্ভব। ’
পিএসজিও ছাড় দেওয়ার ক্লাব নয়। ইউরোপিয়ান টুর্নামেন্টে নিজেদের মাঠে টানা ২২ ম্যাচ গোল করেছে তারা। পার্ক দ্য প্রিন্সেসে সর্বশেষ ২০১৫ সালে রিয়াল মাদ্রিদের একমাত্র অর্জন—গোল হজম না করে ফেরা। বার্সার বিপক্ষে আজ নেইমার না থাকলেও কিলিয়ান এমবাপ্পে আছেন দুরন্ত ছন্দে। ন্যু ক্যাম্পে হ্যাটট্রিক করা এই ফরাসি সর্বশেষ ম্যাচে ব্রেস্তের বিপক্ষেও করেছেন জোড়া গোল। তাই বার্সেলোনাকে আরেকটি দুঃস্বপ্ন উপহার দিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের স্বপ্ন দেখতেই পারেন পিএসজি ভক্তরা।