নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৮৬৬ বার
টেকনাফ(কক্সবাজার) প্রতিনিধি : টেকনাফে কয়েকদিনের মাথায় আবারও এক সন্তানের জননীর মৃতদেহর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। হতভাগা গৃহবধূ হচ্ছে সদর ইউনিয়নের মহেশ খালিয়া পাড়ার নুরুল হকের পুত্র আজিজুল হকের দ্বিতীয় স্ত্রী রোকেয়া আকতার প্রকাশ কতইরী (২৫)। পারিবারিক কলহের জেরধরে এক সন্তানের জননী গৃহবধুকে শ্বাশুড় বাড়ির লোকজন কৌশলে হত্যার অভিযোগ করেছেন নিহতের পরিবার।
নিহতের পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, কয়েক বছর পূর্বে মহেশ খালিয়া পারার আজিজুল হকের সাথে হ্নীলা ইউনিয়নের রংগিখালী লামার পাড়ার মমতাজ আহমদ এর কন্যা রোকেয়া আকতার কতইরীর সাথে বিয়ে হয়। এরপর থেকে তাদের সংসারে নিয়মিত কলহ-বিবাদ লেগেই থাকতো। এরই মাঝে সে একাধিক নারীর সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এনিয়ে উভয়ের মধ্যে একাধিক বার শালিশ বৈঠক হয়েছে। রোকেয়া তার অভিভাবকদের প্রায় সময় তাকে হত্যা করতে পারে এমন আশংকা ও প্রকাশ করেছেন। অবশেষে তাকে মৃত্যু অবস্থায় শ্বশুর বাড়ী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ সুত্রে জানা যায়, ৭জুলাই (বুধবার) দুপুর ১টারদিকে খবর পেয়ে টেকনাফ মডেল থানার এসআই রাফির নেতৃত্বে ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে নিহতের পরিবারের লোকজন দাবী করে। এছাড়া নিহত রোকেয়া আকতার প্রকাশ কতইরীর একমাত্র ৬বছরের ছেলেটি ছাড়া স্বামী,শ্বাশুড়-শ্বাশুড়িসহ সকলে পলাতক রয়েছে।
এই ব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার ওসি (অপারেশন) খোরশেদ আলম জানান,খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মৃতদেহ উদ্ধার করে পোস্টমর্টেমের জন্য কক্সবাজার মর্গে প্রেরণ করেছে।
এদিকে নিহতের পরিবারের দাবী, মোহাম্মদ আজিজ টেকনাফ থেকে রোহিঙ্গা বশোংদ্ভুত এক নারীকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর সংসারে মিল না হওয়ায় তাকে তাড়িয়ে দিয়ে রোকেয়াকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে ৬বছরের মোহাম্মদ হোছাইন নামে এক সন্তান রয়েছে। কিন্তু আজিজের মা-বাবা রোকেয়াকে পছন্দ করত না।
এছাড়া সংসারের অন্যান্য বিষয় নিয়ে প্রায় সময় তাদের মধ্যে ঝগড়া-ঝাটি হতো। গত ৩মাস পূর্বে রোকেয়াকে মেয়ে রক্তাক্ত করে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। তা নিয়ে টেকনাফ মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলে স্থানীয় ৩/৪জন লোক এসে সমঝোতার মাধ্যমে রোকেয়াকে স্বামীর ঘরে ফিরে নিয়ে যায়। হঠাৎ সকাল ১১টারদিকে ঐ এলাকার এক মহিলার মাধ্যমে রোকেয়াকে মেরে ফেলে রাখার খবর পেয়ে হ্নীলা ইউপি চেয়ারম্যানের সহায়তায় পুলিশের মাধ্যমে মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। আমরা নৃশংস এই ঘটনার কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার আন্তরিক সহায়তা কামনা করছি।
সাম্প্রতিক সময়ে পারিবারিক কলহের জেরধরে টেকনাফের প্রত্যন্ত এলাকায় গৃহবধুর উপর শ্বাশুড় বাড়ির লোকজন কর্তৃক মারধর, হামলা ও খুনের ঘটনায় সচেতন মহলে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।