নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৬৩৯ বার
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:- ঝিনাইদহ মহেশপুর সীমান্তে গত ৬ মাসে দালালসহ ৫০৮ জন নারী পুরুষ বিজিবির হাতে আটক হয়েছে। দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হলে মহেশপুর সীমান্তে অবৈধ পারাপার বেড়ে যায়। পার্শ্ববর্তী যশোর, সাতক্ষীরা জেলার সীমান্তে প্রশাসনের অভিযান জোরালো হলে দালাল চক্র নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। এ সময় মহেশপুর দালাল সিন্ডিকেট সক্রিয় অবস্থানে থাকলে উভয় দেশ থেকে অবৈধ পারাপার বৃদ্ধি পায়। এ পারাপারই করোনা বিস্তারের কারণ বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীল সূত্র।
বিজিবি ও অন্যান্য সূত্র জানিয়েছে, গত ৬ মাসে ভারত থেকে ১৬০ জন নারী পুুরুষ আসার পথে এবং ৩৪৪ জন যাওয়ার পথে বিজিবির হাতে আটক হয়েছে। এ সময় ৪ জন দালালও আটক হয়। আটকৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পাসপোর্ট আইনে মহেশপুর থানায় মামলা হয়। ভারত থেকে আসা ব্যক্তিদের ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয় ঝিনাইদহ পিটিআই স্কুলে ও মহেশপুর মহিলা কলেজে। এ সকল ব্যক্তির করেনা পরীক্ষা করে একাধিক ব্যক্তির শরীরে পজেটিভ রিপোর্ট আসে। এরপর থেকে মহেশপুর সীমান্তবর্তী অঞ্চলে করোনা রোগী বৃদ্ধি পেতে থাকে।
একপর্যায়ে ভারতীয় ভেরিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ে। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ অনেকেই আক্রান্ত হন। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হাসিবুস সাত্তার জানান, সীমান্তের অবৈধ পারাপারই এ অঞ্চলে করোনা বিস্তারের মূল কারণ। মহেশপুর ৫৮ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্নেল কামরুল আহসান বলেন, এ সীমান্ত দিয়ে যারা পার হয় তার সীমিত সংখ্যক মানুষকে আমরা আটক করতে সক্ষম হই। দালালদের মাধ্যমে অনেকেই পার হয়ে যায়। সীমান্তে বিজিবি কঠোর অবস্থানে থাকলেও অনেক সময় নারীরা দালালের হাতে নির্যাতনসহ লুটপাটের কার হয়।
এ বিষয়ে মহেশপুর থানায় মানবপাচার ও ধর্ষণ চেষ্টা অভিযোগে মামলাও হয়েছে। এ বিষয়ে বিভিন্ন সূত্র ও ভিকটিমদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দালালরা নারীদেরকে রাতের আঁধারে ছত্রভঙ্গ করে তাদের উপর পাশাবিক নির্যাতন চালায়। কিন্তু মুখ খুলে আইনের মুখোমুখি হতে চায় না। যার কারণে দালালরা পার পেয়ে যায়। মহেশপুর থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম জানান, এ সীমান্তে আটককৃতদের মধ্যে ১৮ জন এখনও মহেশপুর মহিলা কলেজে হোম কোয়ারেন্টাইনে আছে এবং পাসপোর্ট আইনে মামলা হয়েছে দু’শতাধিক।
একটি বেসরকারি মানবপাচার প্রতিরোধ সংস্থার প্রতিনিধি রোমানা আফরোজ জানান, সীমান্তে আটককৃত নারীরা দালালদের দ্বারা নির্যাতিত হয় এবং এর মধ্যে অনেক পাচারের ভিকটিম রয়েছে যা নির্ণয় করা হয়নি। সকলকেই আসামি হিসেবে কোর্টে চালান দেওয়া হয়।