ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

ঢাকার রাস্তায় লাঠিয়াল

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর, ২০২১ ০৮:২৬ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৪৯৮ বার


ঢাকার রাস্তায় লাঠিয়াল

৪ ডিসেম্বর, রাত ১১টা। দোলাইরপাড় মোড়ে লাঠি হাতে আগ্রাসী তিন তরুণ। ঢাকার কেরানীগঞ্জে পণ্য নামিয়ে ট্রাক নিয়ে জুরাইন হয়ে নারায়ণগঞ্জ ফিরছিলেন চালক মোস্তফা। ট্রাক থামাতে লাঠিয়াল তিন তরুণের ইশারা। ভীত চালক থামালেন ট্রাক। চালকের কাছে তারা চাইলেন ১০০ টাকা 'সিটি টোল'। এই চাঁদা দিতে না চাইলে চালকের সঙ্গে তরুণ দলের চলে বচসা। লাঠিয়ালরা ট্রাকের চাবি কেড়ে নিতে চাইলে তাদের হাতে ৫০ টাকা গুঁজে দিয়ে চালক টান দেন গাড়ি।

ঘটনাস্থল থেকে ট্রাক অনুসরণ করে একটু এগিয়ে কথা হয় চালক মোস্তফার সঙ্গে। তিনি বলেন, 'এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যেতে ঢাকার রাজপথ পার হওয়ার সময় পণ্যবাহী ট্রাক-কাভার্ডভ্যান থেকে সিটি টোল নেওয়ার নিয়ম নেই। তার পরও দিতে হলো। নিয়মিতই চলছে এই নৈরাজ্য।'

রাজধানীর পথে পথে পণ্যবাহী ট্রাক-কাভার্ডভ্যান থামিয়ে দিন-রাত এভাবেই চলছে সিটি টোলের মোড়কে চাঁদাবাজি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকার সড়কে এই চাঁদাবাজি না চললেও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকার কমপক্ষে ৩৬ পয়েন্টে লাঠিয়াল বাহিনী তুলছে টাকা। দাবি করা টাকা দিতে না চাইলে গাড়িতে চালানো হয় হামলা। চালক-হেলপারের ওপর নেমে আসে নির্যাতনের খÿ। কয়েকটি স্পটে এই চাঁদাবাজির সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নেতারা জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। এই চাঁদার টাকার একটি অংশ পুলিশের হাতে যাচ্ছে বলেও তথ্য মিলেছে।

বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের নেতারা পণ্যবাহী গাড়ি থেকে সিটি টোলের নামে চাঁদাবাজির বিষয়টি অনেক আগে থেকেই বিরোধিতা করে আসছেন। এই প্রেক্ষাপটে গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিষয়টি তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও জানিয়েছেন। ডিএসসিসির মেয়রকেও দেওয়া হয়েছে চিঠি। চিঠিতে বলা হয়েছে, ডিএসসিসির বিভিন্ন পয়েন্টে পণ্যবাহী গাড়ি থামিয়ে জোর করে নেওয়া হচ্ছে ৫০ থেকে ১৫০ টাকা।

বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির তথ্য বলছে, ট্রাক-কাভার্ডভ্যানসহ দেশে মোট পণ্যবাহী যানবাহনের সংখ্যা তিন লাখ ৫৭ হাজার ৪৯২টি। তবে প্রতিদিন কত পণ্যবাহী গাড়ি ঢাকায় ঢোকে, সেই হিসাব তাদের কাছে নেই। ফলে প্রতি মাসে আনুমানিক কত টাকা চাঁদা তোলা হচ্ছে, সেটির সঠিক হিসাব করা যায়নি।

তবে বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম খান বলেন, 'ডিএসসিসি এলাকায় প্রতিদিন গড়ে ৮ থেকে ১০ হাজার ট্রাক-কাভার্ডভ্যানের চালককে চাঁদাবাজির মুখে পড়তে হচ্ছে। সেই হিসাবে মাসে চাঁদা দিতে হচ্ছে আনুমানিক দুই কোটি টাকা।'

দিন হাজিরায় তরুণরা তোলে টাকা :দিন কিংবা রাত- যারা গাড়ি থামিয়ে টাকা তোলে, তাদের বেশিরভাগই তরুণ। দিন হাজিরায় তারা তোলে চাঁদার টাকা। গত ৪ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে শনির আখড়ার দনিয়া কলেজের সামনের সড়কে সাত-আটজন ট্রাক থামিয়ে টাকা তুলছিল। তাদের বয়স ১৭ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। নাম জানতে চাইতেই একজন বাদে অন্যরা সটকে পড়ে। যাকে পাওয়া গেল নাম তার রাফি। সে এই প্রতিবেদককে বলে বসল, 'টাকা তোলার সময় ডিস্টার্ব না করে চলে যান।' কত টাকা হাজিরা- জানতে চাইলে সে জানায়, কারও ৪০০, কারও ৫০০ টাকা। রাত ১০টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত তারা ওই এলাকায় চাঁদা তোলে। ১৩ ডিসেম্বর দুপুর ১টার দিকে হানিফ ফ্লাইওভারের শনির আখড়া পাড়ের ফ্লাইওভার টোল কাউন্টারের অদূরে গাড়ি থেকে টোল আদায়ের দায়িত্বে থাকা মাসুদ জানায়, তার হাজিরা ৪০০ টাকা।

নিয়ম ভেঙে স্পটভিত্তিক সাব-ইজারাদার নিয়োগ :রাজধানীতে চলাচলকারী সিএনজিচালিত অটোরিকশা, পিকআপ, বাস, লেগুনাসহ আরও কয়েকটি ছোট যানবাহন থেকে টোল আদায়ের নির্দেশনা রয়েছে ডিএসসিসির। টোল আদায়ের এই প্রক্রিয়াকে চালকরা 'সিটি টোল' নামে চেনে।

ডিএসসিসি থেকে এক বছরের জন্য সিটি টোলের যে ইজারা দেওয়া হয়েছে, সেই কার্যাদেশের একটি কপি সমকালের হাতে এসেছে। সেটিতে দেখা যায়, গত ১২ নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের ১১ নভেম্বর পর্যন্ত এক বছরের জন্য '৭-ইলেভেন এন্টারপ্রাইজ' নামে প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মো. আফতাব উদ্দিনকে পাঁচ কোটি টাকার চুক্তিতে ইজারাদার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যানবাহনের ধরন এবং কোন কোন স্থান থেকে সিটি টোল আদায় করা যাবে, তা নির্ধারণ করে দেওয়া আছে। তবে সেই কার্যাদেশের কোথাও পণ্যবাহী ট্রাক-কাভার্ডভ্যান থেকে টোল আদায়ের নির্দেশনা নেই। নির্দেশনায় ২০টি পয়েন্ট থেকে নির্ধারিত যানবাহন থেকে সিটি টোল আদায়ের কথা বলা আছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এর বাইরে অবৈধভাবে আরও ১৬টি পয়েন্টে সব যানবাহন থেকে টোল আদায় করা হচ্ছে।

সমকাল অনুসন্ধানে জানতে পেরেছে, ইজারাদার আফতাব উদ্দিন ইজারা নেওয়ার পর সিটি টোল আদায়ে এলাকাভিত্তিক সাব-ইজারাদার নিয়োগ দেন। তিনি যাদের নিয়োগ দিয়েছেন, তারা আবার বসিয়েছেন স্পটভিত্তিক সাব-ইজারাদার। প্রতিদিন স্পটভেদে ৬ থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত মূল ইজারাদারকে দেন সাব-ইজারাদাররা। ইজারাদার আফতাব উদ্দিন যাত্রাবাড়ী, গোলাপবাগ, ডেমরা ও সায়েদাবাদ এলাকায় সাব-ইজারাদার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন সায়েদাবাদের পরিবহন নেতা বাবুকে। তার কাছ থেকে যাত্রাবাড়ী এলাকায় সাব-ইজারা নিয়েছেন শামীম ও ফারুক। তাদের কাছ থেকে যাত্রাবাড়ী মোড়ে টাকা তোলার দায়িত্ব পেয়েছেন বিবিরবাগিচার জামাল। তিনি বলেন, 'শামীম ও ফারুকের কাছ থেকে আমি যাত্রাবাড়ী মোড়ে সিটি টোল আদায়ের দায়িত্ব নিয়েছি। আমার লোকজন টাকা উঠায়।' তবে তার লোকজন ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান থেকে টোল আদায় করে না বলে দাবি করেন তিনি।

দনিয়া কলেজের সামনের স্পটে টাকা তোলার দায়িত্ব নিয়েছেন নাদিম। হানিফ ফ্লাইওভারের শনির আখড়ার পাড়ের ঢালে ফ্লাইওভারের কাউন্টারের অদূরের স্পটটি প্রতিদিন ২৫ হাজার টাকা দেওয়ার চুক্তিতে নিয়েছেন সায়মুন নামের এক যুবক। কাজলা ব্রিজের স্পটটি নাইমের।

ইজারাদার আফতাব উদ্দিনের কাছ থেকে জুরাইন রেলগেট ও দোলাইরপাড় এলাকায় সিটি টোল তোলার সাব-ইজারা নিয়েছেন ৫৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আরিফ হোসেন। এ ছাড়া কদমতলী ও শ্যামপুর এলাকার আরও আটটি স্পট তার নিয়ন্ত্রণে। তিনি এসব স্পটে টাকা তোলার জন্য তিনজন সাব-ইজারাদার নিয়োগ দিয়েছেন। এর মধ্যে জুরাইন কমিশনার রোড, মাদ্রাসা রোড, বউবাজার, নিউ আলীবহর ও মাতুয়াইল মেডিকেল এলাকায় ৫২ নম্বর ওয়ার্ড জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক বাবুল আহমেদ মিন্টু, পোস্তগোলার মোড়ে শ্যামপুর থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আদম আলী এবং রায়েরবাগ ও শনির আখড়ার একাংশের সাব-ইজারাদার ৬০ নম্বর ওয়ার্ড শ্রমিক লীগ নেতা হাবিব।

৫৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আরিফ হোসেন সাব-ইজারা নেওয়ার কথা স্বীকার করে জানান, দুটি স্পট থেকে তিনি টাকা ওঠান। অন্য আট স্পটের তিনজনের কাছ থেকে টোলের টাকা তুলে ইজারাদার আফতাবের কাছে পৌঁছে দেন তিনি। ট্রাক-কাভার্ডভ্যান থামিয়ে টোল আদায়ের কোনো নিয়ম আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি অফিসে লোকজন আছে, পরে কথা বলি জানিয়ে ফোন কেটে দেন।

পোস্তগোলা মোড়ের সাব-ইজারাদার শ্যামপুর থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আদম আলী বলেন, 'পোস্তগোলা মোড়ে আমার লোকজন ডিএসসিসির নির্ধারিত সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও অটোরিকশা থেকে টাকা ওঠায়।' ৫২ নম্বর ওয়ার্ড জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক বাবুল আহমেদ মিন্টুর দাবি, ডিএসসিসির নির্ধারিত যানবাহনের বাইরে তার লোকজন ট্রাক-কাভার্ডভ্যান থেকে টাকা ওঠায় না।

জয়কালী মন্দির ও গুলিস্তানে সাব-ইজারা নিয়েছেন পরিবহন নেতা আবদুর রহমান। সেখানেও ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান থেকে সিটি টোল আদায় করা হয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'প্রতিদিন নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকার চুক্তিতে মাসুদ (আফতাব উদ্দিন) ভাইয়ের কাছ থেকে সাব-ইজারা নিয়েছি।'

ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানের চালকদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয় না দাবি করে গত শনিবার ইজারাদার আফতাব উদ্দিন বলেন, 'ট্রাক-কাভার্ডভ্যান সিটি টোলের আওতার বাইরে। এসব গাড়ি থেকে তোলা টাকা তারা আমাকে দেয় না। আমি তাদের নিয়োগ দেওয়ার সময় ১০০ টাকার স্ট্যাম্পে লিখিত নিয়েছি- ট্রাক থেকে টাকা নিলে এবং অবৈধ কোনো কিছু করলে তা তাদের নিজ জিম্মায় থাকবে। এতে আমার কোনো সংশ্নিষ্টতা নেই। যদি কেউ এ ধরনের কাজ করে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে জানানো হবে।'

সেই ৩৬ পয়েন্ট :ডিএসসিসি এলাকার অন্তত ৩৬ স্পটে ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানের চালকদের কাছ থেকে সিটি টোল তোলা হচ্ছে। সেগুলো হলো- ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার, কোনাপাড়া, যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা, কাজলা ব্রিজ, শনির আখড়ায় দনিয়া কলেজের সামনে, হানিফ ফ্লাইওভারের শনির আখড়া পাড়ের ফ্লাইওভার কাউন্টারের একশ গজ দূরে, দোলাইরপাড়, গোলাপবাগ, পোস্তগোলা, শ্যামপুর, জুরাইন রেলগেট, কমিশনার রোড, বউবাজার, মাদ্রাসা রোড, নিউ আলীবহর, মাতুয়াইল, রায়েরবাগ, ধলপুর, মানিকনগর, কমলাপুর, খিলগাঁও রেলগেট, সায়েদাবাদ, হাটখোলা, ইত্তেফাকের মোড়, মতিঝিল শাপলা চত্বরের দক্ষিণ পাশ, ফকিরাপুল, জয়কালী মন্দির, গুলিস্তান স্টেডিয়ামের দক্ষিণ পাশ, গুলিস্তানে হানিফ ফ্লাইওভারের ঢাল, গুলিস্তান মাজার, ফুলবাড়িয়া, আলুবাজার, বাবুবাজার, ভিক্টোরিয়া পার্ক, বেড়িবাঁধ সেকশন ও দৈনিক বাংলার মোড় এলাকা।

পুলিশকেও দিতে হয় টাকা :৪ ডিসেম্বর রাত পৌনে ১২টার দিকে দোলাইরপাড় মোড়ের অদূরে তিন তরুণকে ট্রাক থামিয়ে চাঁদা তুলতে দেখা যায়। তাদের দলনেতা মোশাররফ সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সংবাদকর্মীর পরিচয় গোপন রেখে কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি জানান, প্রতি রাতে ওই স্থানে টাকা তুলতে মোট খরচ হয় কমপক্ষে দুই হাজার ৬০০ টাকা। তার হাজিরা ৫০০ টাকা। অন্য তিনজনের কারোর হাজিরা ৪৫০ টাকা, কারোর ৪০০ টাকা। যাত্রাবাড়ী ও শ্যামপুর থানার পুলিশ রাতে ৪০০ টাকা নিয়ে যায়। এ ছাড়া রাতে দোলাইরপাড়ে টহলে আসা পুলিশ সদস্যকে চা পানের জন্য দিতে হয় ১০০ টাকা। এই টাকা 'বনফুল' নামে লিখে রাখেন তিনি। দোলাইরপাড় মোড়ে 'বনফুল' নামে একটি দোকানের সামনে টহল পুলিশ দাঁড়ায় বলে এই নাম লেখেন তিনি। কদমতলী থানায় রাতে টহল পুলিশকেও দিতে হয় টাকা। এই থানা এলাকা ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ওয়ারী বিভাগের আওতায়। এই বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার শাহ ইফতেখার আহমেদ বলেন, 'কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' ট্রাক-কাভার্ডভ্যান থামিয়ে প্রকাশ্যে লাঠিয়াল বাহিনীর চাঁদাবাজির বিষয়ে তিনি বলেন, 'ট্রাক-কাভার্ডভ্যান থেকে সিটি টোল আদায়ের কথা কোথাও বলা নেই। এর পরও টাকা ওঠানো হচ্ছে। এ ধরনের চাঁদাবাজির ঘটনায় তিনটি মামলা হয়েছে। ট্রাক মালিক সমিতির নেতাদের বলেছি, রাস্তায় ট্রাক থামিয়ে কেউ চাঁদা দাবি করলে টাকা না দিয়ে পুলিশকে খবর দেবেন।'

চাঁদা না দিলে চালানো হয় হামলা :বিভিন্ন স্পটে চাঁদার টাকা দিতে না চাইলে কখনও কখনও মারধর করা হয় ট্রাক-কাভার্ডভ্যানের চালক ও হেলপারকে। এ রকম কয়েকটি ঘটনায় সম্প্রতি কদমতলী, যাত্রাবাড়ী ও ওয়ারী থানায় আলাদা তিনটি মামলা হয়েছে। এই তিন মামলার একটির অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। অন্য দুটির একটি তদন্ত চলছে, আরেকটির দুই পক্ষ আপস করায় আদালত চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে।

পরিবহন নেতারা যা বলছেন :বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিক-শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের আহ্বায়ক রুস্তম আলী খান বলেন, 'পণ্যবাহী গাড়ি থেকে আগে কখনও সিটি টোলের টাকা তোলা হয়নি। এক বছরেরও কিছু সময় আগে এই চাঁদাবাজি শুরু হয়। তা এখনও চলছে। বিষয়টি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। টোলের নামে চাঁদা বন্ধ না হলে আমরা ঢাকায় পণ্যবাহী গাড়ি প্রবেশ বন্ধ করে দেব। কোনো পণ্য আমাদের গাড়িতে ঢাকায় ঢুকবে না।'

যা বলছে ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ :এ ব্যাপারে ডিএসসিসির পরিবহন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক বিপুল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, 'ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান সিটি টোলের আওতার বাইরে। এসব যানবাহন থেকে টোল আদায়ের কথা বলা হয়নি। যদি কেউ টোলের নামে এসব যান থেকে টাকা ওঠায়, এটি অবৈধ। এ ছাড়া কোনো গাড়ি থামিয়ে টোলের টাকা ওঠানোর নিয়ম নেই। সাব-ইজারা বা লিজ দেওয়ায় বিষয়টিও নিষিদ্ধ। এ ধরনের কাজের সঙ্গে ইজারাদার জড়িত থাকলে প্রমাণসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

সূত্র : সমকাল


   আরও সংবাদ