ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৩ জুলাই, ২০২২ ১৭:২৮ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৪১৬ বার
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করতে করতে বিএনপির দেশবিরোধী চরিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
তিনি বলেন, ‘তারা (বিএনপি) আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও মর্যাদাকে ভূলুণ্ঠিত করতে মরিয়া হয়ে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা প্রত্যাশা করি, একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি নেতৃবৃন্দ দায়িত্বশীল আচরণ করবে এবং জনগণের স্বার্থ পরিপন্থী কর্মকা- পরিহার করবে। অন্যথায়, বাংলাদেশের জনগণ বিএনপিকে ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত করবে।’
ওবায়দুল কাদের আজ শনিবার গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, মনগড়া ও অর্বাচীন বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতেই এই বক্তব্য প্রদান করা হয়।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘জাতির যে কোনো সঙ্কটে সকল রাজনৈতিক দল এগিয়ে আসবে; দুর্যোগ-দুর্বিপাকে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ জনগণের পাশে থাকবে। এটাই গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের প্রধানতম দায়িত্ব। দুর্ভাগ্যজনক হলেও বিএনপি নামক রাজনৈতিক দলটি দুর্যোগ-দুর্বিপাক ও সঙ্কটে জনগণের পাশে না দাঁড়িয়ে সঙ্কটকে পুঁজি করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় এবং জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে পরিস্থিতিকে ভয়াবহতার দিকে ঠেলে দিতে সকল ধরনের অপচেষ্টা চালায়। বিএনপির রাজপথের শক্তি যত হ্রাস পাচ্ছে মিডিয়ার সামনে তাদের নেতাদের হাস্যকর তর্জন-গর্জন ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
তিনি বলেন, বৈশি^ক মহামারি করোনা মোকাবিলায় সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ ও ভিশনারি নেতৃত্বে সফলতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। জাতিসংঘ থেকে শুরু করে কমনওয়েলথ ও বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিশ^সভায় বাংলাদেশের সফলতা প্রশংসিত হয়েছে। জাপানের প্রভাবশালী নিক্কি মিডিয়া গ্রুপ ও লন্ডনের ফাইনান্সিয়াল টাইমস কর্তৃক যৌথভাবে প্রকাশিত ‘নিক্কি কোভিড-১৯ রিকাভারি ইনডেক্স’ অনুযায়ী কোভিড-১৯ মহামারি হতে উত্তরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ১২১টি দেশের মধ্যে ৫ম ও দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের বক্তব্যের মাধ্যমে বিএনপির মানসিক দেউলিয়াত্ব ফুটে উঠেছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম বার বার নির্বাচনে না আসার মতো শিশুসুলভ বক্তব্য প্রদান করে যাচ্ছে। আমরাও বার বার বলেছি, দেশের সাংবিধানিক বিধান অনুযায়ী যথাসময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে জনগণের ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তন হবে।
তিনি বলেন, সংবিধান বহির্ভূত যে কোনো বিধান দেশের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক শাসন ব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত করার নামান্তর। কোনো শর্ত দিয়ে নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে থামিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র ও অগণতান্ত্রিক অশুভ অপশক্তির হাতে রাষ্ট্রক্ষমতার প্রত্যাবর্তন জনগণ মেনে নেবে না। বিএনপি তার অতীত অপকর্মের জন্য জনগণের মুখোমুখি হতে ভয় পায় বলেই তারা সাংবিধানিক পন্থার ব্যত্যয় ঘটিয়ে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তাদের বিদেশি প্রভুদের আজ্ঞাবহ সরকার গঠনের দিবা স্বপ্নে নিমজ্জিত হয়ে আছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি দেশবাসীকে স্বৈরশাসন, দুর্নীতি-লুটপাট, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও উগ্র-সাম্প্রদায়িকতা ব্যতীত জনগণের জন্য কল্যাণকর কোন কিছুই উপহার দিতে পারেনি। হাওয়া ভবন খুলে তারেক রহমানের নেতৃত্বে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশকে পরিণত করা হয়েছিল সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের স্বর্গরাজ্যে।
তিনি বলেন, বিএনপি অবৈধ ক্ষমতাকে নিষ্কণ্ঠক করতে বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের প্রত্যক্ষ মদদ ও পৃষ্ঠপোষকতায় তৎকালীন প্রধান বিরোধী দল আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল। বিএনপি যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই তাদের রাষ্ট্রীয় ফ্যাসিবাদের আগ্রাসী রূপ দেশের জনগণকে দুঃশাসন ও শোষণের যাতাকলে পিষ্ট করেছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির সময় দেশে কোনো উন্নয়ন ও অগ্রগতি হয়নি বলেই আজকে দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন দেখে তাদের গা জ¦ালা করে। এ কারণেই তারা গুজব ও অপপ্রচারের মধ্য দিয়ে বর্তমান সরকারের গৃহীত জনকল্যাণকর মেগাপ্রকল্পসমূহ বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত করতে চায় এবং দুর্নীতির কাল্পনিক অভিযোগ এনে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা চালায়। ইতোমধ্যে পদ্মাসেতুর মতো মেগাপ্রকল্পের সুবিধা পেতে শুরু করেছে দেশের জনগণ। আওয়ামী লীগই এদেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের মধ্য দিয়ে দেশে দারিদ্র্যের হার হ্রাস পেয়েছে।