ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর, ২০২৫ ০৯:৪০ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ২২ বার
বাংলাদেশের দ্রুত বিকাশমান ই-কমার্স এবং ডিজিটাল পেমেন্ট ইকোসিস্টেমে গ্রাহক আস্থা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ‘সেন্ট্রাল লজিস্টিকস ট্র্যাকিং প্ল্যাটফর্ম (সিএলটিপি)’ এর বাস্তবায়ন ও কার্যকারিতা নিয়ে এক নীতিনির্ধারণী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আব্দুন নাসের খানের সভাপতিত্বে মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) ডাক ভবনে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতাধীন এটুআই এর তত্ত্বাবধানে সিএলটিপি প্ল্যাটফর্ম প্রস্তুত করা হয়েছে এবং এর প্রাথমিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব ডাক অধিদপ্তরের ওপর ন্যস্ত করা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্ত অনুসারে, সিএলটিপি প্ল্যাটফর্ম থেকে ডেলিভারি নিশ্চিতকরণের নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত কোনো ই-কমার্স পণ্যের বিলির বিপরীতে মার্চেন্টের অনুকূলে অর্থছাড় করা যাবে না। পূর্বে প্রযুক্তির দুর্বলতার কারণে পরিশোধ সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহকে দৈবচয়ন ভিত্তিতে গ্রাহকদের ফোন করে ডেলিভারির তথ্য যাচাই করতে হতো, কিন্তু সিএলটিপি এই ম্যানুয়াল প্রক্রিয়ার অবসান ঘটিয়ে সকল লেনদেনে স্বয়ংক্রিয় ও নির্ভরযোগ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।
তিনি আরও বলেন, প্ল্যাটফর্মটি এমনভাবে ডিজাইন করা হচ্ছে, যাতে এসক্রো বাবদ আটকে থাকা অর্থ কোনোভাবেই সমষ্টিগতভাবে উত্তোলন করা না যায় এবং প্রতিটি গ্রাহকের ঠিকানায় বিলি নিশ্চিতকরণের পরেই অর্থছাড় হয়। বিমান টিকিটের মতো ভার্চুয়াল পণ্য বিলির ক্ষেত্রেও গ্রাহকের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সিএলটিপি একটি সুনির্দিষ্ট প্রসেস ফ্লো ডিজাইন করছে।
এই প্ল্যাটফর্মের সফল এবং সর্বজনীন বাস্তবায়নের গুরুত্ব তুলে ধরে সভায় জানানো হয় যে, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে জারিকৃত ‘জাতীয় লজিস্টিক্স নীতি ২০২৫’ এবং বাংলাদেশ ব্যাংক জারিকৃত ‘মার্চেন্ট অ্যাকোয়ারিং ও এসক্রো নীতিমালা ২০২৩’ এর সুস্পষ্ট ধারার ভিত্তিতে অনলাইন মাধ্যমে পণ্য ও সেবা ক্রয় ও বিক্রয়কারী সকল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে ‘সেন্ট্রাল লজিস্টিক্স ট্র্যাকিং প্ল্যাটফর্ম’-এ সকল ই-কমার্স, কুরিয়ার, পেমেন্ট গেটওয়ে এবং ভার্চুয়াল সেবা বিক্রয়কারীদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কোনো বিকল্প নাই। প্ল্যাটফর্মটি যে বিজনেস প্রসেস অনুসরণ করে, তার প্রতিটি ধাপ ডাক অধিদপ্তরের কাজের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত হওয়ায় প্ল্যাটফর্মটির ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব ডাক অধিদপ্তরের ওপর ন্যস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্ল্যাটফর্মটি বাস্তবায়নের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক, মেইলিং অপারেটর ও কুরিয়ার লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সাথে ডাক অধিদপ্তর নিয়মিত সমন্বয় সাধন করবে।
এই উদ্যোগ বাংলাদেশের ডিজিটাল কমার্স খাতে স্বচ্ছতা, নিরাপত্তা এবং গ্রাহক আস্থার নতুন মানদণ্ড প্রতিষ্ঠা করবে।
সভায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, এনবিআর, আইসিটি বিভাগ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, কুরিয়ার সার্ভিস, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন ও প্রতিষ্ঠানসমূহ, ব্যাংক ও পেমেন্ট গেটওয়ে প্রতিনিধিসমূহ এবং মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস সমূহের শীর্ষস্থানীয় প্রতিনিধিসহ ডাক অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।