ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২০ নভেম্বর, ২০২৫ ০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ১৪ বার
বাংলাদেশ গত দুই দশকে স্যানিটেশন খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। কিন্তু এ অর্জনের পাশাপাশি আমাদের এখনো কিছু বড় চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। নগর দরিদ্র, পথচারী, বিশেষত নারী ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য গণশৌচাগার পরিষেবা প্রায় অনুপস্থিত। কিন্তু এ পরিষেবাটি শুধুমাত্র অবকাঠামো নয়, বরং স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, মর্যাদা ও মানবাধিকারের প্রতীক। মানসম্মত ও প্রবেশগম্য গণশৌচাগার নিশ্চিতের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন আবশ্যক।
আজ ১৯ নভেম্বর ২০২৫ বুধবার সকাল ১১:০০ টায়, ধানমন্ডি সাত মসজিদ সড়কস্থ আবাহনী খেলার মাঠের সামনে ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশ, এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট- এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত “সকল উন্মুক্ত গণপরিসরে মানসম্মত ও প্রবেশগম্য টয়লেট নিশ্চিতের আহ্বানে” শীর্ষক মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর পরিচালক গাউস পিয়ারীর সভাপতিত্বে এবং প্রকল্প কর্মকর্তা প্রমা সাহার সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সংস্থার প্রজেক্ট ম্যানেজার নাঈমা আকতার। আরো বক্তব্য রাখেন ধানমন্ডি কচিকন্ঠ হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক এইচ এম নুরুল ইসলাম, লোটাস ন্যাশনাল স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো আব্দুল খালেক, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর হেড অফ প্রোগাম সৈয়দা অনন্যা রহমান, সহকারি প্রকল্প কর্মকর্তা মো মিঠুন, সহকারি প্রকল্প কর্মকর্তা নাজমুন নাহার নিপা এবং ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশের পলিসি অফিসার তালুকদার রিফাত পাশা।
বক্তারা বলেন, বিশ্বজুড়ে প্রায় ৩.৪ বিলিয়নেরও বেশি মানুষের নিরাপদ স্যানিটেশন পরিষেবা ছাড়া জীবনযাপন করে। অনিরাপদ স্যানিটেশন ব্যবস্থা কলেরা, ডায়রিয়া, টাইফয়েড, হেপাটাইটিস-এ’র মতো মারাত্মক রোগের বিস্তারের প্রধান কারণ। প্রতি বছর প্রায় ১,০০০-এর বেশি ৫ বছরের কম বয়সী শিশু মারা যায় শুধুমাত্র অনিরাপদ পানি, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যবিধির অভাবে। একটি নিরাপদ টয়লেট বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে এবং জীবন বাঁচায়।
বক্তারা আরো বলেন, পরিকল্পিত নগরায়নের অভাবে ঢাকা মহানগরী ক্রমাগত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। প্রকল্পগুলোতে গণশৌচাগার নিশ্চিতের বিষয়টি সেভাবে গুরুত্ব পায় না। শৌচাগার তৈরির পাশাপাশি সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণের দিকেও সমান গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। প্রতিটি কমিউনিটিতে তিন থেকে চারটি মানসম্মত ও প্রবেশগম্য গণশৌচাগার নিশ্চিত করা যেতে পারে। পাশাপাশি ঢাকা শহরের সকল গণশৌচাগারের ম্যাপিং করে একটি সফটওয়্যার তৈরি করা যেতে পারে, যার মাধ্যমে নাগরিকগণ সহজেই বুঝতে পারবেন তার আশেপাশে কোথায় শৌচাগার আছে। আজকের কর্মসূচি থেকে সিটি কর্পোরেশনের কাছে আমরা পর্যাপ্ত মানসম্মত ও প্রবেশগম্য গণশৌচাগার তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণের আহ্বান জানাই।
আয়োজন থেকে সকল পথচারীর জন্য পর্যাপ্ত মানসম্মত ও প্রবেশগম্য পাবলিক টয়লেট নিশ্চিতকরণ; এসডিজি গোল ৬-এর স্যানিটেশন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সরকারি বরাদ্দ বৃদ্ধি; সরকারি পর্যায়ে টয়লেট ব্যবহার ও স্যানিটাইজেশন সম্পর্কে ক্যাম্পেইন পরিচালনা; পাবলিক টয়লেট বিষয়ক সুষ্ঠু নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন; সকল উন্মুক্ত গণপরিসরে ব্যবহার উপযোগী টয়লেট নিশ্চিতকরণ; দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেটের ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
আয়োজনে আরো উপস্থিত ছিলেন রায়ের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক, ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুলের শিক্ষকবৃন্দ, ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশ এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ।