ঢাকা, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

মানুষকে কষ্ট দেওয়া হারাম

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৫৪৩ বার


মানুষকে কষ্ট দেওয়া হারাম

পৃথিবীতে শাশ্বত শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে ইসলাম ধর্মের আবির্ভাব হয়েছে। শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনে ইসলাম যুদ্ধ করার কথা বলেছে। অশান্তি আর অন্যায়ের মূলে আঘাত হেনেছে। ইসলাম অন্যায়কে আশ্রয় দেয় না। উৎপীড়নকে সহ্য করে না।

উৎপীড়ন করা গুনাহ

বিনা দোষে কাউকে উৎপীড়ন করা নিকৃষ্ট কাজ। উৎপীড়নকারীকে আল্লাহ অপছন্দ করেন। উৎপীড়নকারীর ঝুলিতে গুনাহ লেখা হয়। উৎপীড়নে আহত মানুষটি অত্যাচার নির্যাতনে ম্রিয়মাণ হয়ে পড়েন। সংকীর্ণ হয়ে যায় তার মন ও মনন। রুদ্ধ হয়ে যায় বেড়ে ওঠার পথ। সমাজের পরতে পরতে সবলরা অধীনদের বিনা কারণে পীড়া দেয়, হেয় করে, অসম্মান করে। ফলে ব্যক্তি হারিয়ে ফেলে চেতনার পুষ্প পল্লবিত আগ্রহ। উৎপীড়ন নিষিদ্ধ করে আল্লাহ বলেন, ‘যেসব লোক বিনা দোষে মুমিন পুরুষ ও নারীকে কষ্ট দেয়। তারা অতি বড় একটা মিথ্যা অপবাদ ও সুষ্পষ্ট গুনাহের বোঝা নিজেদের মাথায় তুলে নেয়।’ (সুরা : আহজাব, আয়াত : ৫৮)

প্রকৃত মুসলমান উৎপীড়ন করে না

বাবা আদম (আ.)-এর আগমনের মধ্য দিয়ে পৃথিবীতে মুসলমান মানুুষের বসবাস শুরু হয়। এক আল্লাহর ওপর বিশ্বাসী হিসেবে আদম (আ.) পৃথিবীর প্রথম মুসলমান ও প্রথম মানুষ। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে ইবরাহিম (আ.) এক আল্লাহর ওপর বিশ্বাসী মানুষের নাম মুসলমান রেখেছেন। সে অর্থে ইবরাহিম (আ.)-কে মুসলমানদের জাতির পিতা বলা হয়। কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘এবং জিহাদ করো আল্লাহর পথে যেভাবে করা উচিত। তিনি তোমাদের  মনোনীত করেছেন। তিনি দ্বিনের ব্যাপারে তোমাদের ওপর কোনো কঠোরতা আরোপ করেননি। এটা তোমাদের পিতা ইবরাহিমের মিল্লাত। আগে থেকেই তিনি তোমাদের নাম রেখেছেন মুসলিম।’ (সুরা : হজ, আয়াত : ৭৮)

মুহাম্মদ (সা.) প্রকৃত মুসলমানের পরিচয় বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে দিয়েছেন। ব্যক্তি মুসলমান হতে হলে এক আল্লাহর ওপর বিশ্বাসের পাশাপাশি উত্তম কাজ করতে হবে। আল্লাহর জন্য মানুষকে ভালোবাসতে হবে। নিজেকে উত্তম আদর্শের বাহুডোরে বাঁধতে হবে। জিহ্বা সংযত রাখতে হবে। অনর্থক কারো ওপর উদ্যত করা যাবে না হাত। মানুষকে কোনোভাবেই কষ্ট দেওয়া ইসলাম সমর্থন করে না। রাসুল (সা.) বলেন, ‘সে-ই মুসলমান, যার জিহ্বা ও হাতের অনিষ্টতা থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে। আর যে আল্লাহর নিষিদ্ধ কাজসমূহ পরিত্যাগ করেছে সে-ই প্রকৃত মুহাজির।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১০)

উৎপীড়নকারী জান্নাতে যাবে না

মানুষ স্বভাবতই সুন্দর ও ভালোকে ভালোবাসে। এক অর্থে মানুষ সুন্দরের পূজারি। মানুষ প্রকৃতই অন্যের ভালোবাসা প্রার্থনা করে, ভালো ব্যবহার আশা করে। ইসলাম মানুষের চাহিদা ও ইচ্ছার প্রতি সম্মান জানিয়ে ঘোষণা করেছে—তুমি অন্যের কাছে যেমন ভালো ব্যবহার আশা রাখো, তুমিও তার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করো। আর অন্যকে উৎপীড়ন না করা পুণ্যের কাজ। জান্নাতে প্রবেশের সুপথ। উৎপীড়ন ব্যক্তিকে জাহান্নামে পৌঁছে দেবে। হাদিসে বিধৃত হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি দোজখ থেকে মুক্তি ও জান্নাত লাভ করতে চায় সে যেন আল্লাহ ও আখিরাতের ওপর বিশ্বাসী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। এবং মানুষের সঙ্গে এমন ব্যবহার করে, যে ব্যবহার সে নিজে অন্যের কাছে আশা করে।’ (সহিহ মুসলিম সূত্রে রিয়াজুস সালেহিন, হাদিস : ১৫৬৬)


   আরও সংবাদ