ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

যেভাবে অর্জিত হয় ‘প্রশান্ত হৃদয়’

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল, ২০২২ ০৮:৩২ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৫০৩ বার


যেভাবে অর্জিত হয় ‘প্রশান্ত হৃদয়’

'জিকির’ একটি আরবি শব্দ। শাব্দিকভাবে স্মরণ করা, ধ্যান করা, তাসবিহ পাঠ করাসহ বহু অর্থে ব্যবহৃত হয়। তবে ইসলামের দৃষ্টিতে, মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে তাঁর সত্তাগত ও গুণগত নামের স্মরণ করাকে জিকির বলা হয়।

জিকির মহত্বপূর্ণ ইবাদাত। আল্লাহ তায়ালার জিকিরের মাধ্যমে আত্মিক পবিত্রতা অর্জিত হয়। হৃদয় প্রশান্ত হয়। ইবাদতে মনোনিবেশ করতে হৃদয়ে উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়। মন্দ কাজের প্রতি অনীহা সৃষ্টি হয়। মহান রবের প্রতি আস্থা, বিশ্বাস ও ভালোবাসা জন্মায়। সেদিকে ইঙ্গিত করে পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই মুমিনরা যখন মহান আল্লাহর জিকির করে তাদের হৃদয়সমূহ নরম হয়ে যায়। যখন তার আয়াতমালা পাঠ করা হয় তখন তাদের ঈমান বৃদ্ধি পায়। আর তারা তো তাদের রবের প্রতি আস্থা রেখে থাকে।’(সূরা আনফাল : ০২) অন্যত্র এসেছে, ‘আর যারা ঈমান এনেছে, তাদের হৃদয় তো মহান আল্লাহর জিকিরের মাধ্যমে প্রশান্ত হয়।’ (সূরা র’দ : ২৮)

জিকির আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়ার নিদর্শন : আল্লাহ যাকে বেশি ভালোবাসেন তাকে এই সৌভাগ্য দান করেন। আর আল্লাহ তায়ালার অসন্তুষ্টির লক্ষণ হচ্ছে জিকিরের সৌভাগ্য নসিব না হওয়া। হজরত আনাস রা: থেকে বর্ণিত, রাসূল সা: বলেছেন, ‘মহান আল্লাহর ভালোবাসার নিদর্শন হলো আল্লাহর জিকিরকে ভালোবাসা। আর আল্লাহর অপছন্দের নিদর্শন হচ্ছে, আল্লাহর জিকির অপছন্দ করা।’ (বায়হাকি, হাদিস : ৪১০)

পুনরুত্থান দিবসে অত্যন্ত ভয়াবহ পরিস্থিতি ঘটবে। সবাই উান্তের মতো ছুটবে। বিভীষিকাময় অবস্থা থেকে কেউ রেহাই পাবে না। তবে সাত শ্রেণীর মানুষকে মহান আল্লাহ নিজ আরশের ছায়াতলে আশ্রয় দেবেন। তাদের মধ্যে এক শ্রেণী হলো আল্লাহর জিকিরকারী। হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত, রাসূল সা: বলেছেন, ‘সাত ব্যক্তি এমন রয়েছে, যাদেরকে আল্লাহ আপন আশ্রয়ে স্থান দিবেন। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, ওই ব্যক্তি যে আল্লাহর জিকির করে এরপর তার উভয় চোখ বিগলিত হয়ে যায়।’ (বুখারি, হাদিস-৬৪৭৯)

জিকিরকারীকে দেখলে আল্লাহর স্মরণ : যাদের হৃদয়ে রয়েছে আল্লাহর প্রতি মুহাব্বত, তারা অনবরত মহান আল্লাহর জিকিরে মত্ত হয়ে থাকেন। তাদের মাঝে গায়েবি নূর ফুটে ওঠে। তাদের দেখলেই মন নরম হয়ে যায়। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা তৈরি হয় ও আল্লাহর কুদরতের স্মরণ জাগ্রত হয়। হাদিসে এসেছে, ‘আল্লাহর নৈকট্যশীল বান্দা তারাই যাদের দেখলে আল্লাহর স্মরণ জাগ্রত হয়।’ (সিলসিলাতুস সহিহাহ, হাদিস : ১৭৩৩)

সব কাজ হবে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য : ক্ষণিকের এই পৃথিবী কারো জন্য চিরস্থায়ী নয়। ধারাবাহিকভাবে ভাবলে; শৈশব, যৌবন ও বার্ধক্য তারপর জীবনের ইতি ঘটে। কিন্তু সবাই তো বার্ধক্যে পৌঁছতে পারে না। পরকালের তুলনায় এ সংসারের সময়কাল অত্যন্ত ক্ষীণ। খুবই নগণ্য সময়ের এই জগত থেকে সবাইকে বিদায় নিতে হবে। মহান আল্লাহর সম্মুখে উপস্থিত হতে হবে। সম্বল হিসেবে থাকবে শুধু আমল। এই পৃথিবীর সব কিছু অন্তঃসারশূন্য যদি সেটা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য না হয়। সেদিকে নির্দেশ করে হাদিসে বর্ণিত রয়েছে ‘মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনমূলক বিষয় ছাড়া পৃথিবী ও পৃথিবীতে থাকা সব কিছু অভিশপ্ত। (আল মারাসিল : -ইমাম আবু দাউদ, হাদিস : ৫১৭)


   আরও সংবাদ