ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

জিলকদ মাসের গুরুত্ব

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ৪ জুন, ২০২২ ১১:২০ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৪৮১ বার


জিলকদ মাসের গুরুত্ব

হিজরি সনের ১১তম মাস জিলকদ। হজের তিন মাসের দ্বিতীয় মাসও এটি। ইসলামে নিষিদ্ধ যে চার মাস রয়েছে তার মধ্যেও একটি এ জিলকদ মাস। ইসলামের ইতিহাসে বিভিন্ন কারণে এ মাস অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রিয় নবী সা: জীবনে যে কয়টি ওমরাহ করেছেন তার সব ক’টি করেছেন এ জিলকদ মাসে। এ মাসেই সংঘটিত হয়েছিল হুদায়বিয়ার সন্ধি ও বাইয়াতে রিদওয়ান। 
রমজান-পরবর্তী ঈদের মাস শাওয়াল ও হজের মাস জিলহজের আগের মাস হওয়ায় জিলকদ মাসটি অনেক তাৎপর্যপূর্ণ। জিলকদ মাসটির প্রকৃত নাম হলো জুল-আল-কাআদাহ। আর এর অর্থ হলো- বসা বা স্থিত হওয়া এবং বিশ্রাম নেয়া। রজব থেকে শাওয়াল মাস পর্যন্ত চারটি মাস মুমিন মুসলমান ধারাবাহিক ইবাদতে ব্যস্ত সময় পার করে।

ইবাদতের প্রস্তুতিমূলক বিশ্রাম
জিলকদ মাসের প্রকৃত আরবি নাম হলো ‘জুলকাআদাহ’। ফারসিতে ‘জিলকাআদা’; উর্দুতে ‘জিলকাআদ’; বাংলায় ‘জিলকদ’ রূপ ধারণ করেছে। ‘জুলকাআদাহ’ বা ‘জিলকদ’ অর্থ হলো বসা বা স্থিত হওয়া, বিশ্রাম নেয়া। জিলকদ মাসের আগের চার মাস (রজব, শাবান, রমজান, শাওয়াল) ধারাবাহিক নির্ধারিত ইবাদতে ব্যস্ততম মাস। যেমন- রজব হলো আল্লাহর মাস, ইবাদতের ভূমি কর্ষণের মাস, বেশি বেশি নফল ইবাদতের মাস। শাবান হলো রাসূলুল্লাহ সা:-এর মাস, ইবাদতের বীজ বপনের মাস; নিসফ শাবান বা শবেবরাত এবং সর্বাধিক নফল রোজা ও নফল ইবাদতের মাস। রমজান হলো উম্মতের মাস, ফসল তোলার মাস, ফরজ রোজা, তারাবির নামাজ, কিয়ামুললাইল; কুরআন নাজিলের মাস এবং ইবাদত–তিলাওয়াতে মশগুল থাকার মাস। শাওয়াল মাস হলো ঈদুল ফিতর, সদকাতুল ফিতর ও নির্ধারিত সুন্নত ছয় রোজার মাস। অনুরূপ জিলকদ মাসের পরের দুই মাস জিলহজ ও মহররম মাস) ইবাদতে ব্যস্ততর মাস। যেমন- জিলহজ মাস হজ, ঈদুল আজহা ও কোরবানির মাস; মহররম মাস আশুরার মাস। অর্থাৎ জিলকদ মাসের আগের চার মাস যেমন ইবাদতে ব্যস্ততায় মশগুল থাকতে হয়, তেমনি জিলকদ মাসের পরের দুই মাসও ইবাদতে আকুল থাকতে হবে। মাঝের একটি মাস জিলকদ, যেহেতু মুমিন সামান্য বিশ্রামের ফুরসত পেয়ে থাকেন, তাই এ মাসের নাম জুলকাআদাহ (জিলকদ) বা বিশ্রামের মাস।

জিলকদ মাসের স্মরণীয় ঘটনা
এটি যেকোনো যুদ্ধ-বিগ্রহ নিষিদ্ধের মাস। ১ জিলকদ হুদায়বিয়ার সন্ধি সংঘটিত হয়। এ মাসেই বাইয়াতে রেদওয়ান অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ৮ জিলকদ মুসলমানদের জন্য জীবনে একবার হজ পালনকে ফরজ করা হয়েছে। ২৫ জিলকদ হজরত ইবরাহিম আ: ও হজরত ঈসা সা:-এর জন্ম এবং এ তারিখে পবিত্র কাবা শরিফ পৃথিবীতে প্রথম ভিত্তি স্থাপিত হয় বলে জানা যায়। সপ্তম হিজরির জিলকদ মাসে প্রিয় নবী সা: প্রথম ওমরাহ পালন করেছিলেন। এ মাসেই প্রিয় নবী সা: তাঁর জীবনের সব ওমরাহ পালন করেন।
জিলকদ মাসের আমল
প্রতি মাসের মতো এই জিলকদ মাসের ১, ১০, ২০, ২৯ ও ৩০ তারিখে নফল রোজা পালন করা। চাঁদের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে আইয়ামে বিজের আদি পিতা প্রথম নবী হজরত বাবা আদম আ:-এর সুন্নত রোজা রাখা। প্রতি সপ্তাহের প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার সুন্নতে নববী রোজা পালন করা। প্রতি শুক্রবার নফল রোজা রাখা। সালাতুত তাসবিহ এবং প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নফল নামাজ (তাহাজ্জুদ, ইশরাক, চাশত বা দুহা, জাওয়াল ও আউওয়াবিন) পড়া। বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত করা এবং বেশি বেশি নফল নামাজ পড়া। দান-খয়রাত বেশি বেশি করা। জিলহজ মাসের ৯টি সুন্নত রোজা ও মহররম মাসের ১০টি রোজার প্রস্তুতি হিসেবে এই মাসে কিছু হলেও নফল রোজা রাখা আর যাদের সামর্থ্য ও সুযোগ রয়েছে, অর্থাৎ যাদের ওপর হজ ফরজ তাদের হজের প্রস্তুতি গ্রহণ করা এবং কোরবানির প্রস্তুতি গ্রহণ করা।


   আরও সংবাদ