ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

ইসলামের সোনালি যুগে নারীদের বিভিন্ন পেশা

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ৮ জুন, ২০২২ ০৮:৫৭ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৪৬৮ বার


ইসলামের সোনালি যুগে নারীদের বিভিন্ন পেশা

  •  

 


ইসলাম শান্তি ও মানবতার ধর্ম। সমাজে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে হলে নারী-পুরুষ উভয়কেই ভূমিকা পালন করতে হয়। জ্ঞান-বিজ্ঞান, ব্যবসায়-বাণিজ্য, শিল্পোন্নয়নে, অন্যান্য পেশায় নারী-পুরুষ উভয়ের ভূমিকা থাকলে রাষ্ট্র উন্নতির উচ্চ শিখরে আরোহণ করতে পারে। ইসলাম ও ইসলামী সমাজে নারীর অবস্থান ও মর্যাদাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করেন অনেকেই। কিন্তু ইসলামের সোনালি যুগের ইতিহাসে নারীর ধর্মীয়, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থান বিশ্লেষণ করলে তাদের এই দাবির সত্যতা মেলে না। রাসূলুল্লাহ সা:-এর যুগ থেকে সহস্র বছরের ইসলামী খিলাফতের যুগে নারী জ্ঞানচর্চা থেকে শুরু করে যে আর্থ-সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ভোগ করেছে তা আধুনিক যুগেও অপ্রতুল। এই সময় তারা বিভিন্ন পেশায় পুরুষের মতো যোগ্যতা ও দক্ষতার পরিচয় দেন। তবে হ্যাঁ, পর্দা-শালীনতা ও ইসলামের ধর্মীয় ও সামাজিক বিধান-রীতি মান্য করেই তারা তা করেছেন।

 

জ্ঞানচর্চায় নারী : মহানবী সা: নানাভাবে নারী শিক্ষাকে উৎসাহিত করেছেন। তিনি মদিনার আনসারি নারীদের প্রশংসা করে বলেন, ‘আনসারি নারীরা কতই না উত্তম! লজ্জা কখনোই তাদের ধর্মের বিষয়ে জ্ঞানান্বেষণে বিরত রাখতে পারে না’ (সহিহ মুসলিম-৭৭২)।

মুসলিম নারীদের আবেদনের প্রেক্ষাপটে রাসূলুল্লাহ সা: তাদের দ্বীন শেখানোর জন্য পৃথক দিন নির্ধারণ করেন। আবু সাঈদ খুদরি রা: থেকে বর্ণিত- নারীরা একবার নবী সা:কে বললেন, ‘পুরুষরা আপনার কাছে আমাদের চেয়ে প্রাধান্য বিস্তার করে আছে। তাই আপনি আমাদের জন্য একটি দিন নির্ধারণ করে দিন। তিনি তাদের বিশেষ একটি দিনের অঙ্গীকার করেন; সে দিন তিনি তাঁদের সাথে সাক্ষাৎ করলেন এবং তাদের নসিহত করলেন ও নির্দেশ দিলেন’ (সহিহ বুখারি-১০১)।
রাসূল সা: ও খোলাফায়ে রাশেদার যুগে নারীরা জ্ঞান-বিজ্ঞানে বিশেষ অবদান রাখেন। তাদের মধ্যে অন্তত ২২ জন নারী সাহাবি মুহাদ্দিস, ফকিহ (আইনজ্ঞ) ও মুফতি হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন।

 

ব্যবসায়-বাণিজ্যে নারী : রাসূলুল্লাহ সা:-এর যুগে নারীরা ব্যবসায়-বাণিজ্যও করত। কায়লা রা: থেকে বর্ণিত, ‘রাসূলুল্লাহ সা:-এর কোনো ওমরাহ আদায়কালে মারওয়া পাহাড়ের পাদদেশে আমি তাঁর কাছে উপস্থিত হয়ে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি একজন নারী (ব্যবসায়ী)। আমি বেচাকেনা করি। আমি কোনো জিনিস কিনতে চাইলে আমার ঈপ্সিত মূল্যের চেয়ে কম দাম বলি। এরপর দাম বাড়িয়ে বলতে বলতে আমার কাক্সিক্ষত মূল্যে গিয়ে পৌঁছি। আবার আমি কোনো জিনিস বিক্রি করতে চাইলে কাক্সিক্ষত মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্য চাই। এরপর দাম কমাতে কমাতে অবশেষে আমার কাক্সিক্ষত মূল্যে নেমে আসি। রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, হে কায়লা! এরূপ করো না। তুমি কিছু কিনতে চাইলে তোমার কাক্সিক্ষত মূল্যই বলো, হয় তোমাকে দেয়া হবে, নয় দেয়া হবে না। তিনি আরো বলেন, তুমি কোনো কিছু বিক্রি করতে চাইলে তোমার কাক্সিক্ষত দামই চাও, হয় তুমি দেবে অথবা না দেবে’ (সুনানে ইবনে মাজাহ-২২০৪)।

রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্বে নারী : ইসলামের সোনালি যুগে নারীরা রাজনীতির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে না থাকলেও তারা বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব করেছেন এবং রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। আয়েশা রা: মুয়াবিয়া ও আলী রা:-এর মধ্যকার সঙ্কট নিরসনে এগিয়ে আসেন। তেমনি সাওদা বিনতে আম্মারা বিন আশতার হামদানি তার গোত্রের প্রতিনিধি হয়ে মুয়াবিয়া রা:-এর কাছে যান এবং দাবি ও প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেন। মুয়াবিয়া রা: তাদের দাবি মেনে নেন এবং ইবনে আরতাকে বরখাস্ত করেন (আকদুল ফারিদ, পৃষ্ঠা-৩৪৪-৪৬)।


   আরও সংবাদ