ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২০ জুন, ২০২২ ০৮:৩৫ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ১৬৪১ বার
এক খ্রিষ্টান বন্ধু আমাকে প্রশ্ন করল : তুমি কি একজন ৫০ বছর বয়স্ক লোকের সাথে তোমার সাত বছরের কন্যাকে বিয়ে দেবে? আমি তৎক্ষণাত এর কোনো উত্তর না দিয়ে নীরব থাকলাম। বন্ধুটি বলল, যদি তা সমর্থন না করো, তাহলে তোমরা তোমাদের নবী সা:-এর সাথে কিভাবে সাত বছরের নিষ্পাপ নিরপরাধ আয়েশার রা:-এর বিয়েকে মেনে নাও?
আমি তাকে বললাম : আমার কাছে এ মুহূর্তে এর কোনো উত্তর নেই। বন্ধুটি হেসে আমার বিশ্বাসের মূলে নিরন্তর জ্বালা সৃষ্টি করে চলে গেল। আমি জানি, অধিকাংশ মুসলমান এ প্রশ্নের উত্তর দেবে এই বলে যে, এ ধরনের বিয়ে তখনকার সময়ে গ্রহণযোগ্য ছিল। তা না হলে জনগণ নবীর সাথে আয়েশার বিয়েকে মেনে নিত না, বিরোধিতা করত।
আসলে এ ধরনের ব্যাখ্যা মূলত সহজ-সরল অর্বাচীন লোকের সাথে এক ধরনের প্রতারণার শামিল, যারা তা অন্ধের মতো বিশ্বাস করে। আমার মন সন্তুষ্টচিত্তে এ উত্তর মেনে নিতে অস্বীকার করে।
নবী মুহাম্মদ সা: হলেন অনুকরণীয় চরিত্র। তাঁর সব কাজ পূত-পবিত্র। আমরা মুসলমানরা তাই তাঁর সব কাজ অনুসরণ করার চেষ্টা করি। তা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত কোনো লোক চিন্তা করে না যে, সে তার সাত বছরের কন্যাকে একজন ৫০ বছরের বয়স্ক লোকের সাথে বাগদান করবে। যদি কোনো পিতা এ রকম বিয়েতে রাজি হয়, তাহলে বেশির ভাগ লোক স্বাভাবিকভাবেই এ কন্যার পিতাকে ঘৃণার চোখে দেখবে।
১৯২৩ সালে মিসরে ম্যারেজ রেজিস্ট্রারদের নির্দেশ দেয়া হয়, কনেদের ক্ষেত্রে ১৬ বছরের কম হলে এবং বরদের ক্ষেত্রে ১৮ বছরের কম হলে বিয়ে রেজিস্ট্রি না করার জন্য এবং একই সাথে আদেশ দেয়া হয় আনুষ্ঠানিক বিয়ের কোনো সনদপত্র না দেয়ার জন্য। এর আট বছর পর, ১৯৩১ সালে শরিয়াহ আদালত কনেদের ক্ষেত্রে ১৬ বছরের কম এবং বরদের ক্ষেত্রে ১৮ বছরের কম বিয়ে সংক্রান্ত শুনানি করতে অস্বীকার করার মাধ্যমে এ আইনকে আরো সংহত ও শক্তিশালী করে।
এটাই প্রমাণ করে যে, মিসরের মতো একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশেও বাল্যবিয়ে গ্রহণযোগ্য নয়। নির্ভরযোগ্য সাক্ষ্য প্রমাণ ব্যতিরেকে সাত বছরের আয়েশার সাথে ৫০ বছর বয়স্ক নবীর বিয়ের কাহিনী নিছকই অলিক কল্পকাহিনী বৈ কিছু নয়। এ বিষয়ে সত্য উদঘাটন করার জন্য দীর্ঘ অনুসন্ধিৎসা আমার ধারণাকেই সঠিক বলে প্রমাণ করে। নবী হলেন একজন সজ্জন অমায়িক ব্যক্তি। তাই তিনি সাত-নয় বছর বয়সের একজন নিষ্পাপ বালিকাকে বিয়ে করেননি। হাদিস গ্রন্থে আয়েশার বয়স ভুলভাবে লিপিবদ্ধ হয়েছে। আমার দৃষ্টিতে বিয়ের বয়স নিয়ে যে ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। নবীর সাথে আয়েশার বিয়ের সময়কার বয়স সম্পর্কিত কিছু কিছু হাদিস ত্রুটিপূর্ণ। এ পর্যায়ে আমি হিশাম ইবনে উরওয়াহ কর্তৃক বর্ণিত অলিক কাহিনীর বিষয়ে কিছু সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করব। নবী একজন নিষ্পাপ বালিকাকে তার যৌন লালসার শিকারে পরিণত করেননি (নাউজুবিল্লাহ)। বরং দায়িত্বপূর্ণ বয়স্ক প্রাজ্ঞ ব্যক্তি হিসেবে আচরণ করেছেন। তার বিরুদ্ধে আনীত অমূলক অভিযোগের অপনোদন করাই এ প্রবন্ধের লক্ষ্য।