ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ৫ জুলাই, ২০২২ ১১:৩১ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৪৮০ বার
আল্লাহতায়ালার কৃপায় আগামী ১০ জুলাই আমরা ঈদুল আজহা উদযাপন করব, ইনশাআল্লাহ। এক দিকে ঈদের আনন্দ অপর দিকে দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষ বন্যায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের দায়িত্ব অনেক বেড়ে যায়। আমাদেরকে কুরবানিও করতে হবে আবার অসহায়দের পাশেও দাঁড়াতে হবে।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে ইতোমধ্যে অনেক স্থানে কুরবানির পশু বেচা কেনা শুরু হয়েগেছে। যাদের সামর্থ্য আছে তাদেরকে অবশ্যই কুরবানি দিতে হবে। এটাই ইসলামের শিক্ষা।
হজরত নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘হে লোক সকল (জেনে রাখ)! প্রত্যেক পরিবারের পক্ষে প্রত্যেক বছরই কুরবানি করা আবশ্যক’ (আবু দাউদ ও নাসাঈ)।
মহানবী (সা.) আরো বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সামর্থ্য লাভ করে অথচ কুরবানির আয়োজন করেনি, সে যেন আমাদের ইদগাহের নিকট না আসে’ (ইবনে মাজাহ)।
তাই কেউ যদি মনে করে যে, প্রতি বছরই তো কুরবানি করছি এবার না করলে কী এমন ক্ষতি। যারা এমনটি ভাবছেন তাদের জন্য এ হাদিসটিই যথেষ্ট।
হজরত নবী করিম (সা.) প্রতি বছর কুরবানি করতেন। হজরত আনাস (রা.) বলেন, মহানবী (সা.) এক ঈদে ধুসর রঙ্গের শিংওয়ালা দু’টি দুম্বা কুরবানি করলেন। তিনি এদেরকে আপন হাতে জবাই করলেন এবং (যবাহ করার সময়) ‘বিসমিল্লাহি ওয়াল্লাহু আকবর’ বললেন।
হজরত আনাস (রা.) বলেন, আমি তাকে (যবাহ করার সময়ে) উহাদের পাঁজরের ওপর নিজের পা রাখতে দেখেছি এবং ‘বিসমিল্লাহি ওয়াল্লাহু আকবর’ বলতে শুনেছি’ (মুত্তাফিক আলায়হে)।
হজরত উকবা ইবনে আমের (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, একবার নবী করিম (সা.) তার সাহাবিদের মধ্যে কুরবানির নিমিত্তে বণ্টনের জন্য তাকে (উকবাকে) কতগুলি ছাগল-ভেড়া দিলেন। বণ্টনের পর একটি এক বছরে বাচ্চা-ছাগল বাকী থাকল। তিনি তা মহানবীর (সা.) কাছে উল্লেখ করলেন।
হুজুর বললেন, তা দ্বারা তুমি নিজে কোরবানি কর। অপর বর্ণনা মতে, আমি বল্লাম হে আল্লাহর রসুল! আমার ভাগে তো মাত্র একটি বাচ্চা-ছাগল থাকল। হুজুর (সা.) বললেন, তুমি তা দ্বারাই কুরবানি কর (মুত্তাফিকুন আলায়হে)।
হজরত ইবনে ওমর (রা.) বলেন, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদগাহেই যবাহ বা নহর করতেন (বোখারি)।
হজরত যাবের (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: যখন যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশক আসে আর তোমাদের কেউ কোরবানি করার ইচ্ছা রাখে, সে যেন নিজের কেশ ও চর্মের কোন কিছু স্পর্শ না করে (না কাটে)।
অপর বর্ণনায় আছে, সে যেন কোন কেশ না ছাঁটে এবং কোন নখ না কাঁটে। আরেক বর্ণনায় রয়েছে, যে ব্যক্তি যিলহজ্জ মাসের চাঁদ দেখবে এবং কুরবানির ইচ্ছা রাখবে সে যেন নিজের চুল ও নিজের নখসমূহের কিছু না কাঁটে (মুসলিম)।
হজরত আলি (রা.) বলেন, মহানবী (সা.) আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন, আমরা যেন (কুরবানির পশুর) চোখ ও কান উত্তমরূপে দেখে নেই এবং ওই পশু আমরা যেন কুরবানি না করি, যে পশুর কানের শেষ ভাগ কাটা গেছে অথবা যার কান গোলাকারে ছিদ্রিত হয়েছে এবং সে কারণে যার কান পাছের দিকে ফিরে গেছে (তিরমিজি, আবু দাউদ, নাসাঈ ও দারেমি)।
আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে কেবলমাত্র তার সন্তুষ্টির লক্ষ্যেই কুরবানি করার তাওফিক দান করুন, আমিন।