ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০৮:২৭ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৩২৭ বার
পবিত্র কুরআনুল কারিম হিফজকারী তথা হাফেজরা দুনিয়াতে সম্মানিত আখিরাতেও সম্মানিত। মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা তাদেরকে অনেক সম্মানিত করেছেন। হাদিস শরিফে রয়েছে তাদের ব্যাপারে অনেক খোশখবর! কিন্তু আফসোসের বিষয় হচ্ছে- আমরা তাদেরকে যথাযথ সম্মান দিচ্ছি না। অথচ রাসূলে আকরাম সা: হাফেজদের শ্রেষ্ঠ মানুষ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। সহিহ বুখারিতে রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ওই ব্যক্তি যে নিজে কুরআন শিখে ও অন্যকে শিক্ষা দেয়’ (বুখারি-৫০২৮)।
কুরআন কিয়ামতের দিন সুপারিশ করবে : রাসূলুল্লাহ সা: ব্যতীত যারা আল্লাহর হুকুমে কিয়ামতের দিন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে তা হচ্ছে কুরআন ও সিয়াম।
রাসূলে আকরাম সা: বলেছেন, ‘সিয়াম ও কুরআন বান্দার জন্য সুপারিশ করবে। সিয়াম (রোজা) বলবে, হে রব, আমি তাকে দিনের বেলায় খাবার গ্রহণ করতে ও প্রবৃত্তির তাড়না মেটাতে বাধা দিয়েছি। অতএব তার সপক্ষে আমার সুপারিশ কবুল করুন। কুরআন বলবে, হে রব, আমি তাকে রাতে ঘুম থেকে বিরত রেখেছি। অতএব তার সপক্ষে এখন আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। অতঃপর উভয়ের সুপারিশই কবুল করা হবে’ (মুসতাদরাক হাকিম-১/৭৪০, মুসনাদে আহমাদ-২/১৭৪)।
কুরআন পাঠকারীর পিতা-মাতার বিশেষ সম্মাননা : সাহল ইবনু মুআজ আল-জুহানি রহ: থেকে তার পিতা থেকে বর্ণিত- রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, যে ব্যক্তি কুরআন পাঠ করে ও তদানুযায়ী আমল করে কিয়ামতের দিন তার পিতা-মাতাকে এমন মুকুট পরানো হবে যার আলো সূর্যের আলোর চেয়েও উজ্জ্বল হবে। ধরে নাও, যদি সূর্য তোমাদের ঘরে বিদ্যমান থাকে (তাহলে তার আলো কিরূপ হবে?)। তাহলে যে ব্যক্তি কুরআন অনুযায়ী আমল করে তার ব্যাপারটি কেমন হবে, তোমরা ধারণা করো তো’ (আবু দাউদ-১৪৫৩)!
কুরআন চর্চাকারীর জন্য বিশেষ সংবর্ধনা : যারা দুনিয়াতে কুরআন শিখবে ও তদানুযায়ী আমল করবে ও কুরআন হিফজ করবে কিয়ামতের দিন তাদের বিশেষ সংবর্ধনা দেয়া হবে। আবু হোরায়রা রা: থেকে বর্ণিত- রাসূলে আকরাম সা: বলেছেন, ‘কুরআন কিয়ামত দিবসে হাজির হয়ে বলবে, হে আমার প্রভু, একে (কুরআনের বাহককে) অলঙ্কার পরিয়ে দিন। তারপর তাকে সম্মান ও মর্যাদার মুকুট পরানো হবে। সে আবার বলবে, হে আমার প্রভু, তাকে আরো পোশাক পরিয়ে দিন। সুতরাং তাকে মর্যাদার পোশাক পরানো হবে। সে আবার বলবে, হে আমার প্রভু, তার প্রতি সন্তুষ্ট হোন। কাজেই তিনি তার ওপর সন্তুষ্ট হবেন। তারপর তাকে বলা হবে, তুমি একেক আয়াত পাঠ করতে থাকো ও ওপরের দিকে উঠতে থাকো। এমনিভাবে প্রতি আয়াতের বিনিময়ে তার একটি করে সওয়াব (মর্যাদা) বাড়ানো হবে’ (তিরমিজি-২৯১৫)।
কুরআন তিলাওয়াতকারী আল্লাহর আহাল : কুরআনুল কারিম তিলাওয়াতকারীদের রাসূলে আকরাম সা: আল্লাহর আহাল তথা পরিবারস্থ লোকজন বলে আখ্যায়িত করেছেন।
হজরত আনাস বিন মালিক রা: থেকে বর্ণিত- রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘কিছু মানুষ আল্লাহর পরিজন। সাহাবিরা জিজ্ঞেস করেন, হে আল্লাহর রাসূল, তারা কারা? তিনি বলেন, কুরআন তিলাওয়াতকারীরা আল্লাহর আহাল তথা পরিজন এবং তাঁর বিশেষ বান্দা’ (ইবনে মাজাহ-২১৫)।
একজন হাফেজ ১০ জনের জন্য সুপারিশ করবে : হজরত আলী ইবনে আবি তালিব রা: থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কুরআন পাঠ করেছে এবং তাকে সংরক্ষণ করেছে ও হিফজ রেখেছে, আর তার হালালকে হালাল ও হারামকে হারাম জেনেছে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন এবং তাকে তার বংশধর থেকে এমন ১০ জনকে সুপারিশ করার সুযোগ দান করবেন যাদের ওপর জাহান্নাম অবধারিত হয়ে গিয়েছিল’ (বাইহাকি শুয়াবুল ঈমান-১৯৪৭, তিরমিজি-১১৪)। তাই আসুন আমরা কুরআনুল কারিম হিফজ ও যথাসাধ্য বুঝে তিলাওয়াত করে সেই অনুযায়ী নিজেদের জিন্দেগি গঠন করি।