ঢাকা, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

পুরুষদের জন্য যেসব সাজ-সজ্জা নিষেধ

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর, ২০২২ ০৭:০৪ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৬১৭ বার


পুরুষদের জন্য যেসব সাজ-সজ্জা নিষেধ

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সাজসজ্জা ইসলামী জীবনরীতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ (জামিল) সুন্দর। তিনি সৌন্দর্যকে ভালোবাসেন। -(সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৯১)
 
রাসূলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘তোমরা (হালাল) যা ইচ্ছা খাও, পান করো ও পরিধান করো। তবে যেন তাতে দু’টি জিনিস না থাকে- অপচয় ও গর্ব।’ –(সহিহ বোখারি: ১০/১৫২)

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে বনী আদম! অবশ্যই আমি তোমাদের জন্য পোশাক নাজিল করেছি, তোমাদের লজ্জাস্থান ঢাকা ও বেশ-ভূষার জন্য। আর তাকওয়ার পোশাক, এটাই সর্বোত্তম। এটা আল্লাহ্‌র নিদর্শনসমূহের অন্যতম, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে। -( সুরা আরাফ, আয়াত, ২৬)
রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজেও সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি থাকতেন। তিনি নিজের মাথার চুল চিরুনি দিয়ে পরিপাটি করে রাখতেন। এ সম্পর্কে এক হাদিসে তিনি বলেছেন, আল্লাহতায়ালা চান তার বান্দারা বা ঈমানদার লোকেরা যখন আরেক মুমিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তখন তারা যেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও পরিপাটি অবস্থায় থাকে।

অনেকের অনুকরণে এমনভাবে নিজেকে সাজান যা আদৌ কাম্য নয়। যে বিষয়গুলোতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পক্ষ থেকে। অথচ তা খেয়াল করেন না কেউ। 
পুরুষের জন্য সাজ-সজ্জায় নারীর অনুকরণ

বিশেষত তরুনদের মাঝে এমন অনেক সাজ-সজ্জার প্রবণতা দেখা যায় যা শরীয়ত সমর্থিত নয়। বর্তমানে তরুনদের অনেকেই হাতে ব্রেসলেট পরেন, কেউ চুল লম্বা রাখেন, যা বাবরির পরিবর্তে মেয়েদের মতো হয়ে যায়। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরিপাটি থাকার প্রতি গুরুত্ব দিলেও বিপরীত লিঙ্গ বা পুরুষদের এমন সাজ গ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন যা নারীদের সঙ্গে মিলে যায়।

এ বিষয়ে হজরত ইবনে আব্বাস রা . হতে বর্ণিত। তিনি বলেন:
لَعَنَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمُخَنَّثِينَ مِنْ الرِّجَالِ وَالْمُتَرَجِّلَاتِ مِنْ النِّسَاءِ وَقَالَ أَخْرِجُوهُمْ مِنْ بُيُوتِكُمْ قَالَ فَأَخْرَجَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فُلَانًا وَأَخْرَجَ عُمَرُ فُلَانًا

‘নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম পুরুষ হিজড়াদের উপর এবং পুরুষের বেশধারী মহিলাদের উপর লানত করেছেন।’- (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৫৮৮৬)

হাদিসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, যে সকল পুরুষ কৃত্রিমভাবে নারীর বেশ-ভুষা অবলম্বন করে হিজড়া সাজে অর্থাৎ যারা পোশাক-পরিচ্ছদ, কণ্ঠস্বর, কথা বলার ধরণ, চলাফেরা, রূপসজ্জা ইত্যাদি দিক দিয়ে নারীদের সাথে সাদৃশ্য অবলম্বন করে তাদের প্রতি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অভিসম্পাত করেছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে হিজড়া হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন। কিন্তু সৃষ্টিগতভাবে হিজড়াদের কোন দোষ নেই। কারণ এ ক্ষেত্রে তাদের নিজস্ব কোন হাত নেই। বরং মহান আল্লাহ তাদেরকে সেভাবেই সৃষ্টি করেছেন।

 

অনুরূপভাবে যে সকল মহিলা পোশাক-পরিচ্ছদ, চাল-চলন, চুলের স্টাইল, সাজসজ্জা, কথা বলা ইত্যাদি ক্ষেত্রে কৃত্রিমভাবে পুরুষদের সাদৃশ্য ধারণ করে তাদের প্রতিও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লানত করেছেন।

 

 রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন,
لَيسَ منَّا مَن تشبَّهَ بالرِّجالِ منَ النِّساءِ ولا من تَشبَّهَ بالنِّساءِ منَ الرِّجالِ

 

‘যে সব নারী পুরুষদের সাদৃশ্য অবলম্বন করে এবং যে সব পুরুষ নারীদের সাদৃশ্য অবলম্বন করে, তারা আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।’ (আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. হতে বর্ণিত, সহীহুল জামে হা/৪৫৩৩, সহীহ)

 


   আরও সংবাদ