ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর, ২০২২ ১২:৪৮ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৫৩২ বার
আল্লাহর পক্ষ থেকে দেওয়া ফরজ বিধান পালন করা আব্যশক। ফরজ বিধান পালন না করে উপায় নেই। তবে এর পাশাপাশি প্রত্যেকের জন্য নফল ইবাদত করারও জরুরি। কারণ, কেয়ামতের দিন যখন মানুষের ফরজ ইবাদতে কোনও ঘাটতি দেখা দিবে আল্লাহ তায়ালা এসময় বান্দার নফল ইবাদত আছে কিনা তার খোঁজ নেবেন।
হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘নিশ্চয় কেয়ামতের দিন বান্দার যে কাজের হিসাব সর্বপ্রথম নেওয়া হবে তা হচ্ছে নামাজ। সুতরাং যদি তা সঠিক হয়, তাহলে সে পরিত্রাণ পাবে। আর যদি (নামাজ) খারাপ হয়, তাহলে সে ব্যর্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
যদি তার ফরজের (ইবাদতের) মধ্যে কিছু কম পড়ে যায়, তাহলে আল্লাহ তায়ালা বলবেন, ‘দেখ তো! আমার বান্দার কিছু নফল (ইবাদত) আছে কি না, যা দিয়ে ফরজের ঘাটতি পূরণ করে দেওয়া হবে?’ অতঃপর তার অবশিষ্ট সমস্ত আমলের হিসাব ঐভাবে গৃহীত হবে। -(আবু দাউদ ৮৬৪, তিরমিজি ৪১৩, ইবনে মাজাহ ১৪২৫)
নামাজের নিষিদ্ধ সময়গুলো ছাড়া দিন-রাতে যেকোনও সময় নফল নামাজ পড়া যায়। তবে নফল নামাজে কেরাত পড়ার ক্ষেত্রে লক্ষণীয় হলো-
দিনের নফল নামাজে নিম্নস্বরে কেরাত পড়া ওয়াজিব। এজন্য ভুলে দিনের নফল নামাজে জোরে কেরাত পড়লে সাহু সিজদা ওয়াজিব হয়। আর ইচ্ছাকৃত উচ্চস্বরে কেরাত পড়লে ওয়াজিব তরকের গুনাহ হবে। এর বিপরীতে রাতের নফল নামাজে উচ্চস্বরে ও নিম্নস্বরে দু’ভাবেই কেরাত পড়া যায়।
তাবেয়ী হজরত হাকিম ইবন ইকাল রহ. দিনের নামাজে উচ্চস্বরে কেরাত পড়া থেকে নিষেধ করতেন এবং বলতেন, ( يَرْفَعُ بِاللَّيْلِ إِنْ شَاءَ) রাতের নামাজে ইচ্ছে হলে উচ্চস্বরে পড়বে। -(মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ৩৬৭১)
রাতের নফল নামাজে অন্তত এই পরিমাণ উচ্চস্বরে পড়া উত্তম, যাতে করে নিজে স্পষ্ট শুনতে পায়। হাসান বসরী রহ. বলেন,
صَلَاةُ النَّهَارِ عَجْمَاءُ، وَصَلَاةُ اللَّيْلِ تُسْمِعُ أُذُنَيْكَ
দিনের নামাজ নিম্নস্বরের এবং রাতের নামাজ তোমার কানকে শুনাবে। -(মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ৩৬৬৪)
আলেমদের মতে, যে সকল ফরজ নামাজে উচ্চস্বরে কেরাত পড়া হয় তা যদি একা আদায় করা হয় তাহলে তাতে নিম্নস্বরে ও উচ্চস্বরে দু’ভাবেই কেরাত পড়া যাবে। তবে উচ্চ স্বরে পড়া উত্তম। -(বাদায়েউস সনায়ে ১/৩৯৬; ফাতহুল কাদীর ১/২৮৫; রদ্দুল মুহতার ১/৫৩৩)
তাই আলেমদের মতে মনোযোগ বৃদ্ধির জন্য রাতের নফল নামাজে উচ্চস্বরে কেরাত পড়া যাবে। আর দিনের বেলা নফল নামাজ পড়লে অল্প আওয়াজে কেরাত পড়তে হবে।