ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর, ২০২২ ০৯:২৯ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৪১৬ বার
তাওবা করলে, আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে জীবন নতুনভাবে নবায়িত হয়। তাওবা শব্দটিই যেন একটি মহান শব্দ। যার অর্থ ফিরে আসা। তাওবার দহনেই পাপে কলুষিত আত্মা মনিবের সাথে নবরূপে মিলিত হয়। মহান আল্লাহ চান তাঁর বান্দারাও যেন গুনাহ করার সাথে সাথে তাওবা করে নেয়।
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। সুন্দর অবয়বে সৃষ্টি করে মানুষকে দিয়েছেন শ্রেষ্ঠ সৃষ্টির মর্যাদা। দিয়েছেন মহামূল্যবান বিবেক। আসমান-জমিনের সমস্ত মাখলুকাতের ওপর দিয়েছেন শ্রেষ্ঠত্ব।
যদিও ফেরেশতারা সর্বদা আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন রয়েছেন। তাদের যাকে যে কাজের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে তারা প্রতিনিয়ত সে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। ফেরেশতাদের আল্লাহ তায়ালা অবাধ্য হওয়ার ক্ষমতাই দেননি। আর আল্লাহ মানুষকে বিবেক দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। নবী-রাসূল প্রেরণ করেছেন। তাদের প্রতি ওহি নাজিল করে সঠিক পথের দিশা দিয়েছেন। ভালো-মন্দ দু’টি পথের মধ্যে যেকোনো একটি পথ বেছে নেয়ার এখতিয়ার দিয়েছেন। এখানেই ফেরেশতাসহ সব মাখলুকাতের ওপর মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব। মানুষকে ভুল করার এখতিয়ার দিয়ে আবার তাওবা করার সুযোগ দেয়া হয়েছে।
বান্দার তাওবা আল্লাহর কাছে অনেক প্রিয়। কেননা তাওবা শব্দের অর্থ হলো- ফিরে আসা। কখনো কখনো আমরা হেদায়াতের আলোর পথ থেকে দূরে সরে গিয়ে পাপাচারের অন্ধকারে নিজেদের নিমজ্জিত করি। কোনো কোনো পাপে সাময়িক সুখ অনুভূত হলেও পাপের পীড়া কামড় দেয় বারবার। ফলে মানসিক বিষাদ অনুভব হতে থাকে।
অতঃপর আমরা তাওবা করে আল্লাহর কাছে ফিরে আসতে চাই। কিন্তু আমাদের জীবনে এমন কিছু পাপ থাকে, যে কারণে আমরা ভীষণ লজ্জিত, অনুতপ্ত। অনেক পাপ এমনও রয়েছে যা আমাদের জীবনচর্চায় পরিণত হয়েছে।
সব কিছু সত্ত্বেও আমরা যদি আল্লাহর দিকে এক বিঘত অগ্রসর হই, তবে আল্লাহ আমাদের দিকে এক হাত অগ্রসর হবেন।
আর আমরা যদি আল্লাহর দিকে এক হাত অগ্রসর হই, তবে আল্লাহ আপনার দিকে দুই হাত অগ্রসর হবেন। অর্থাৎ বান্দা আল্লাহর দিকে ফিরে এলে আল্লাহ বান্দার দিকে ফিরে আসেন।
রাসূল সা: বলেন, ‘ইয়া আইয়্যুহান নাসু তুবু ইলাল্লাহ’ অর্থাৎ- হে মানবজাতি! তোমরা আল্লাহর নিকট তাওবা করো। এর অর্থ হলো- আল্লাহর নিকট ফিরে আসো, প্রত্যাবর্তন করো’ (মুসলিম-৭০৩৪)।
রব্বে কারিম ইরশাদ করছেন, ‘আল্লাহ অবশ্যই সেই সব লোকের তাওবা কবুল করেন যারা অজ্ঞতাবশত কোনো গুনাহ করে ফেলে, তারপর জলদি তাওবা করে নেয়। সুতরাং আল্লাহ তাদের তাওবা কবুল করেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে জ্ঞাত, প্রজ্ঞাময়’ (সূরা নিসা-১৭)।
ওই আয়াতে ‘সু’ দিয়ে অত্যন্ত কুৎসিত ঘৃণ্য জঘন্য মন্দকাজকে বোঝানো হয়েছে।
আর, ‘বি জাহালাতিন’ অর্থাৎ- অপ্রতিরোধ্য আবেগের বশবর্তী হয়ে যে পাপকাজ করা হয়। যেমন- কুকর্মে প্ররোচনায়, রাগের বশবর্তী হয়ে, হতাশার আগুনে পুড়ে অথবা এমন কোনো মানবিক অনুভূতি ওই মুহূর্তে আপনার ওপর বিজয় হয়েছিল, তারপর আপনি ওই কাজে লিপ্ত হয়েছিলেন এটি হচ্ছে ‘জাহালাত’। আমাদের অলসতাও এক ধরনের ‘জাহালাত’ যখন আমরা ফজর সালাত ছেড়ে দিচ্ছি, শুধু অলসতার কারণে। আমাদের ক্রোধ এক ধরনের জাহালাত যখন আমরা অকারণে কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করি অথবা ক্রোধের বশবর্তী হয়ে অযথাই কারো ওপর জুলুম করি।