ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১১ মে, ২০২৩ ১০:০১ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৯২৩ বার
আমাদের দেশে গ্রীস্মকাল কাঁঠাল, লিচু, আম, জামের মতো বাহারি ফলমূলে ভরে ওঠে। ফলমূল শরীরে ভিটামিট বাড়াতে সহায়তা করার পাশাপাশি দেহমনে প্রশান্তি আনে। ফলমূলকে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ জান্নাতি খাবার হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
আল্লাহ বলেন, আমি তাদের দেব ফলমূল এবং মাংস, যা তারা চাইবে। (সুরা : তুর, আয়াত : ২১)
অন্য আর একটি আয়াতে আল্লাহ বলেন, সেখানে (জান্নাতে) আছে ফলফলাদি, খেজুর ও আনার। (সুরা : আর রহমান, আয়াত : ৬৮)
আমাদের দেশে নানা রকম ফলে ফরামালিন মেশানোর মতো গর্হিত কাজ করতে দেখা যায় অনেক ব্যবসায়ীকে। চিকিৎসকরা বলছেন, ফরমালিনযুক্ত ফলফলাদি মারাত্মক স্বাস্থ্যহানির কারণ হয়। ফরমালিন যুক্ত খাবার পরিপাকে বাধা দেয়, পাকস্থলীর ক্ষতি করে, যকৃতের অ্যানজাইম নষ্ট করে এবং কিডনির কোষ ধ্বংস করে। ফলে গ্যাস্ট্রিক-আলসার বাড়ে, লিভার ও কিডনি রোগেরে মতো জটিল রোগ দেখা দেয়।
ইসলামের দৃষ্টিতে খাদ্যে ভেজাল দেওয়া ক্রেতার সঙ্গে প্রতারণার শামিল। যা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এমন গর্হিত কাজে জড়িতদের জন্য কঠিন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন হজরত মুহাম্মদ (সা.)।
যারা খাদ্যে ভেজাল দেয় এবং খাদ্যের গুণাগুণ নষ্ট করে তারা নামে মুসলমান হলেও কোনো ইবাদত কবুল হবে না। কারণ তাদের উপার্জিত অর্থ হারাম। আর রুজি-রুটি হালাল হওয়া ইবাদত কবুলের পূর্বশর্ত।
হাদিসে বলা হয়েছে, হারাম খাদ্যের মাধ্যমে যে রক্ত-মাংস তৈরি হবে, ওই রক্ত-মাংসের শরীর দিয়ে যে ইবাদত করা হবে তা কবুল হবে না।
যেসব ব্যবসায়ী খাদ্যে ভেজাল দেয়, ভেজালে সমর্থন করে, ভেজাল থেকে উপকৃত হয় তারা পাপী।
নবী কারিম (সা.) বলেছেন, নিশ্চয় কেয়ামতের দিন ব্যবসায়ীদের মহাপাপীরূপে ওঠানো হবে, তবে যারা সততার সঙ্গে ব্যবসা করেছে তারা ছাড়া। (তিরমিজি: ১২১০)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন হজরত মুহাম্মদ (সা.) বাজারে খাদ্যস্তূপের ভেতরে হাত প্রবেশ করে দেখলেন, ওপরের খাদ্যের চেয়ে ভেতরেরগুলো ভেজা। তিনি বিক্রেতার কাছে জানতে চাইলেন, এমনটা করা হলো কেন? বিক্রেতা বললেন, বৃষ্টিতে ভিজে গেছে, হে আল্লাহর রাসুল। নবী করিম (সা.) বললেন, তাহলে তুমি খাদ্যগুলো ওপরে রাখনি কেন, যাতে মানুষ দেখতে পেত? লোকটি চুপ করে রইল। হজরত মুহাম্মদ (সা.) বললেন, যে ব্যক্তি প্রতারণা করে সে আমার উম্মত নয়। (সহিহ মুসলিম : ১০২)
ভেজাল বা ফরমালিন মিশ্রিত ফল খেয়ে কেউ মারা গেলে তার দায় প্রতারক ব্যবসায়ীর। ইসলামে এটিকে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। যার জন্য পরকালীন শাস্তি হচ্ছে জাহান্নাম।
আল্লাহ বলেন, যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় কোনো মুমিনকে হত্যা করে তার শাস্তি জাহান্নাম। যাতে সে দীর্ঘকাল থাকবে, তার ওপর আল্লাহর ক্রোধ ও অভিসম্পাত। আল্লাহ তার জন্য মহাশাস্তি নির্দিষ্ট করে রাখা হয়েছে। (সুরা নিসা: ৯৩)
আল্লাহ আমাদের ব্যসসায়ীদের সঠিকভাবে ব্যবসা পরিচালনার তাওফিক দিন। আমিন
_s.jpg)
