ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

যেভাবে আল্লাহর নেয়ামতের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা উচিত

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ২ অক্টোবর, ২০২৩ ১২:০৩ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ২০৭ বার


যেভাবে আল্লাহর নেয়ামতের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা উচিত

বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে আছে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নেয়ামত। যে দিকে চোখ যায় সেদিকেই মহান আল্লাহর ভরপুর নেয়ামত। আমাদের চোখ, আমাদের নাক, কান, হাত, পা, সবকিছুই আল্লাহর অনন্য নেয়ামতগুলোর অন্তর্ভুক্ত। পৃথিবীতে যত রকমের জিনিস আছে, সবকিছুই একটি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলে। আল্লাহর নেয়ামত গাছ-গাছালি আমাদের অক্সিজেন দেয়। সূর্য আমাদের তাপ দেয়, ‎সেই তাপে গাছ বেড়ে ওঠে, ফল পাকে।

মহাগ্রন্থ আল কুরআনে মহান আল্লাহ মানুষকে তাঁর অনুগ্রহ সম্পর্কে সচেতন করেছেন বিভিন্নভাবে। মানুষের সুন্দর আকৃতি, রূপ-যৌবন, জ্ঞান-বুদ্ধি, সহায়-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি সব কিছুই আল্লাহর দান। এ গ্রহ-উপগ্রহ, পৃথিবী ও পৃথিবীর সব কিছুই মানুষের উপকারে সৃজিত। এসব নেয়ামতের দাবি হলো, আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করা। আর আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায়ের শ্রেষ্ঠতম পদ্ধতি হলো তাঁর ওপর ঈমান আনা। তাঁর নির্দেশিত পথে জীবন পরিচালিত করা। তাঁরই ইবাদত করা।

আল্লাহ বলেন, আমি জ্বিন ও মানবকে সৃষ্টি করেছি একমাত্র এ কারণে যে, তারা আমারই ইবাদাত করবে। (সুরা: আয-যারিয়াত, আয়াত: ৫৬)

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মানুষকে তাঁর নেয়ামতের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘আমি ভূমিকে বিস্তৃত করেছি ও পর্বতমালা স্থাপন করেছি এবং তাতে নয়নাভিরাম সর্বপ্রকার উদ্ভিদ উদ্গত করেছি। আর আমি আকাশ থেকে কল্যাণময় বৃষ্টি বর্ষণ করি এবং এর দ্বারা উদ্যান ও পরিপক্ব শস্যরাজি উদ্গত করি, যেগুলোর ফসল আহরণ করা হয়।’ (সুরা: কাফ, আয়াত: ৭-৯)

অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘তারা কি লক্ষ্য করে না, আমি ঊষর ভূমির ওপর পানি প্রবাহিত করে তার সাহায্যে উদ্গত করি শস্য, যা থেকে তাদের গবাদি পশু এবং তারা নিজেরা আহার গ্রহণ করে।’ (সুরা: সাজদা, আয়াত: ২৭)

এছাড়াও পৃথিবীতে চাঁদের প্রভাবে জোয়ার-ভাটা হয়, আর এর সাহায্যে সাগরে ‎উৎপন্ন হয় লবণ। গাছ ও সমুদ্র অক্সিজেন দেয়, আর এটাই আমাদের বেঁচে থাকার প্রধান উপকরণ। এমন অসংখ্য অগণিত নেয়ামত আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।

আল্লাহ বলেন,‘তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ গণনা করলে তার সংখ্যা নির্ণয় করতে পারবে না। আল্লাহ তো অবশ্যই ক্ষমাপরায়ণ, পরম দয়ালু। (সুরা: নাহল, আয়াত: ১৮)

তাইতো গুণে শেষ করা যাবে না মানুষের ওপর আল্লাহ তায়ালার নেয়ামত। মানুষের নিজের অস্তিত্বই একটি বড় বিস্ময়। একটি বিশাল জগৎ। চোখ, কান, নাক, হাত, পা ও দেহের প্রতিটি গ্রন্থি ও শিরা-উপশিরায় রয়েছে আল্লাহ তায়ালার অসংখ্য নেয়ামত। সূক্ষ্মতম ও বিস্ময়কর হাজারো উপাদানে সজ্জিত প্রতিটি মানবদেহ, প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। এসব নিয়ে চিন্তা করলে মহান আল্লাহর দরবারে সিজদায় মাথা নুয়ে আসা উচিত।

অগণন এ নেয়ামতের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা প্রতিটি মানুষের উপর ফরজ। নেয়ামতের কৃতজ্ঞতা আদায় করতে আল্লাহর হুকুম মানা আমাদের জন্য অপরিহার্য। যেমন, নামাজ আদায় করা, আল্লাহর রাস্তায় আল্লাহর দেয়া ধন-সম্পদ থেকে দান করা।

যত বেশি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা হবে, আল্লাহ ততবেশি নেয়ামত বৃদ্ধি করতে থাকেন। আল্লাহ বলেন, ‘আর যখন তোমাদের রব ঘোষণা দিলেন- ‘যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় কর, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের (নেয়ামত) বাড়িয়ে দেবো, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয়ই আমার আজাব বড় কঠিন।’ (সুরা ইবরাহিম: আয়াত: ০৭)

পৃথিবীতে কর্মব্যস্ততায় যেখানেই থাকি, যেভাবেই থাকি অবশ্যই আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করতেই হবে। তাঁর দেয়া বিধি-বিধান পালন করতে হবে। মূলত কর্মময় এ পৃথিবীতে আল্লাহ দেখতে চান তাঁকে কে মনে রাখে, তাঁর স্মরণে কে মাথা নত করে আর কে অবাধ্য হয়।

আল্লাহ কুরআনে বলেন, ‘তিনিই সৃষ্টি করেছেন মৃত্যু ও জীবনকে পরীক্ষা করার জন্য যে তোমাদের মধ্যে কে কর্মে উত্তম। তিনি সর্বশক্তিমান, ক্ষমাশীল।’ (সুরা: মুলক, আয়াত: ০২)
 


   আরও সংবাদ