ঢাকা, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুতে রেকর্ডের বছর ছিল ২০২৩

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ১ জানুয়ারী, ২০২৪ ১১:৩৪ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ১৭১ বার


ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুতে রেকর্ডের বছর ছিল ২০২৩

২০২৩ সালে রাজধানীসহ সারাদেশেই ডেঙ্গু রোগের অপ্রতিরোধ্য সংক্রমণ ছিল। বছরটিতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়। পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০০০ সালে দেশে সাড়ে ৫ হাজার জন ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে ৯৩ জনের মৃত্যু হয়। ২০০১ সালে আড়াই হাজার লোক ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় এবং ৪৪ জনের মৃত্যু হয়। ২০০২ সালে ৬ হাজার রোগীর মধ্যে ৫৮ জন মারা যান। ২০০৩ সালে ৪৮৬ জনের মধ্যে ১০ জন, ২০০৪ সালে ৪ হাজারের মধ্যে ১৩ জন, ২০০৫ সালে ১ হাজারের মধ্যে ৪ জন, ২০০৬ সালে ২ হাজারের মধ্যে মৃত্যু হয় ১১ জনের। ২০০৭ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত আড়াই হাজার ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলেও কারও মৃত্যু হয়নি।

২০১১ দেড় হাজার ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর মধ্যে ৬ জনের মৃত্যু হয়। ২০১২ সালে ৬৭১ জনের মধ্যে ১ জন, ২০১৩ সালে প্রায় ২ হাজারের মধ্যে ২ রোগী মারা যান। ২০১৪ সালে ৩৭৫ জন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে কেউ মারা যাননি। ২০১৫ সালে ৩ হাজারের মধ্যে ৬ জন, ২০১৬ সালে ৬ হাজারের মধ্যে ১৪ জন, ২০১৭ সালে ৩ হাজারের মধ্যে ৮ জন, ২০১৮ সালে ১০ হাজার ১৪৮ জনের মধ্যে ২৬ জন, ২০১৯ সালে ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জনের মধ্যে ১৭৯ জন মারা যান। ২০২০ সালে দেড় হাজার মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হলেও মৃত্যু হয় ৪ জনের। আর ২০২১ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় সাড়ে ২৮ হাজার, মারা যান ১০৫ জন। ২০২২ সালে সর্বমোট ৬২ হাজার ৩৮২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হন এবং মোট ২৮১ জন মারা যান। ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে ২৮১ জনের মৃত্যু ছিল দেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গু বিষয়ক তথ্য থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে ৫৬৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৬ জন মারা গেছেন। ফেব্রুয়ারিতে আক্রান্ত ১৬৬ এবং মৃত্যু ৩ জন, মার্চে আক্রান্ত ১১১ জন এবং কেউ মারা যায়নি। এপ্রিলে আক্রান্ত ১৪৩ এবং মৃত্যু ২ জন, মে মাসে আক্রান্ত ১ হাজার ৩৬ জন এবং মৃত্যু ২ জনের, জুন মাসে আক্রান্ত ৫ হাজার ৯৫৬ জন, মৃত্যু ৩৪ জন।

২০২৩ সালের জুলাই মাসে আক্রান্ত ৪৩ হাজার ৮৫৪ জন এবং ২০৪ জনের মৃত্যু হয়। আগস্ট মাসে আক্রান্ত ৭১ হাজার ৯৭৬ জন এবং মৃত্যু ৩৪২ জন, সেপ্টেম্বরে আক্রান্ত ৭৯ হাজার ৫৯৮ জন ও মৃত্যু ৩৯৬ জন। অক্টোবর মাসে আক্রান্ত ৬৭ হাজার ৭৬৯ জন এবং মৃত্যু ৩৫৯ জন, নভেম্বরে আক্রান্ত ৪০ হাজার ৭১৬ জন এবং ২৭৪ জনের মৃত্যু হয়। ডিসেম্বর মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৯ হাজার ২৮৮ জন এবং ৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসের ১ তারিখ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। এর মধ্যে ঢাকাতে ১ লাখ ১০ হাজার ৮ জন ও সারাদেশে (ঢাকা সিটি ব্যতীত) ২ লাখ ১১ হাজার ১৭১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন।

একই বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকাতে ৯৮০ জন এবং সারাদেশে (ঢাকা সিটি ব্যতীত) ৭২৫ জন মারা যান। ২০২৩ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দেশের ইতিহাসে অতীতের সকল বছরের রেকর্ড ছাড়িয়েছে।

সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত গ্রীষ্মকালে ডেঙ্গু রোগের মৌসুম হলেও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বর্তমানে সারাবছর জুড়েই ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ দেখা গেছে। অতীতের বছরগুলোতে শহরের বাসা বাড়িতে আবাসিক ধরনের মশা (এডিস ইজিপটাই) ডেঙ্গুর সংক্রমণ ঘটালেও, বর্তমানে গ্রামাঞ্চলের বুনো মশাও (এডিস এলবোপিকটাস) ডেঙ্গুর বাহক হিসেবে কাজ করছে।


   আরও সংবাদ