ঢাকা, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

রোযার (সিয়ামের) সাহরী খাওয়া

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ১৩ মার্চ, ২০২৪ ০৯:৪৮ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ১২০ বার


রোযার (সিয়ামের) সাহরী খাওয়া

  আল্লাহ গাফুরুন শাকুর বলেন : আর তোমরা পানাহার কর যতক্ষণ রাতের কৃষ্ণরেখা হতে উষার শুভ্ররেখা   স্পষ্টরূপে তোমাদের নিকট প্রতিভাত না হয়। [সূরা ২, আল বাকারা-১৮৭]
১। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: তোমরা সাহরী খাও। কেননা সাহরীতে বারাকাত রয়েছে। [বুখারী/১৭৯৬-আনাস ইব্ন মালিক (রাঃ), মুসলিম/২৪১৬, নাসাঈ/২১৫২, তিরমিযী/৭০৬, ইব্ন মাজাহ/১৬৯২]
২। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: আমাদের সিয়াম এবং আহলে কিতাবধারীদের সিয়ামের মধ্যে পার্থক্য হল সাহরী খাওয়া (আমরা সাহরী খাই কিন্তু ইয়াহুদী ও খৃস্টানরা সাহরী খায়না)। [মুসলিম/২৪১৭-আমর ইব্ন আস (রাঃ), নাসাঈ/২১৭০, আবূ দাউদ/২৩৩৬]
৩। আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: তোমাদের কেহ যখন ফাজরের আযান শুনতে পায়, আর এ সময় তার হাতে খাদ্যের পাত্র থাকে, সে যেন আযানের কারণে আহার বন্ধ না করে, যতক্ষণ না সে তা দ্বারা স্বীয় প্রয়োজন পূর্ণ করে। [আবূ দাউদ/২৩৪২]
৪। সাহল ইব্ন সা‘দ (রাঃ) বলেছেন : আমি বাড়িতে পরিবার-পরিজনের সাথে সাহরী খেতাম। সাহরী খাওয়ার পর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে ফাজরের সালাত আদায় করার জন্য তাড়াহুড়া করে যেতাম। [বুখারী/১৭৯৩]
৫। যায়িদ ইব্ন সাবিত (রাঃ) বলেছেন : আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে সাহরী খেয়েছি। তারপর তিনি সালাতে দাঁড়িয়েছেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি যায়িদ ইব্ন সাবিতকে (রাঃ) জিজ্ঞেস করলাম : সাহরী ও আযানের মাঝখানে কত সময়ের ব্যবধান ছিল? তিনি বললেন : পঞ্চাশ আয়াত পাঠ করার মতো। [বুখারী/১৭৯৪, নাসাঈ/২১৫৯, তিরমিযী/৭০১]
৬। আবদুল্লাহ ইব্ন উমার (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি : বিলাল রাত থাকতে আযান দেয়। তাই তোমরা ইব্ন মাকতূমের আযান না শুনা পর্যন্ত পানাহার করতে থাক। [মুসলিম/২৪০৪, বুখারী/১৭৯২] (বিলাল (রাঃ) সাহরীর ওয়াক্ত শুরুর সময় আযান দিতেন এবং ইব্ন মাকতূম (রাঃ) ফাজর ওয়াক্ত শুরুর আযান দিতেন)
৭। যে ব্যক্তি ফাজরের পূর্বেই রাত্রে সিয়ামের (রোযার) নিয়াত না করে তার সিয়াম পালন হবেনা। [নাসাঈ/২৩৪৩]
৮। আবূ বাকার ইব্ন আবদুর রাহমান ইব্ন হারিস ইব্ন হিশাম (রঃ) বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের সহধর্মিনী আয়িশা (রাঃ) ও উম্মে সালামা (রাঃ) আমাকে অবহিত করছেন : (কোন কোন সময়) জুনূবী (অপবিত্র) অবস্থায় নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের ফাজর হয়ে যেত। এরপর তিনি গোসল করতেন এবং সিয়াম পালন করতেন। [তিরমিযী/৭৭৭, মুসলিম/২৪৬১, বুখারী/১৭৯৮]
৯। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্ত্রী আয়িশা (রাঃ) ও উম্মে সালামা (রাঃ) বলেছেন : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের নাপাক অবস্থায় ভোর হত। রাবী আবদুল্লাহ আল আযরামী তার বর্ণিত হাদীসে বলেন : রামাযানের মাসে রাতে স্বপ্ন দোষের কারণে নয় বরং স্ত্রীর সঙ্গে মিলনের কারণে তিনি সকালে নাপাক অবস্থায় থেকে সিয়াম পালন করতেন (অবশ্য পরে গোসল করে পবিত্র হতেন)। [আবূ দাউদ/২৩৮০] 

রোযা (সিয়াম) পালনকারীদের তাড়াতাড়ি ইফতার করা
===============================
১০। নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : যখন রাত সে দিক থেকে ঘনিয়ে আসে ও দিন এ দিক থেকে চলে যায় এবং সূর্য ডুবে যায় তখন সিয়াম পালনকারী (রোযাদার) ইফ্তার করবে। [বুখারী/১৮২৫]
১১। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : লোকেরা যতদিন ত্বরায় (সময় হওয়া মাত্র) ইফ্তার করবে ততদিন তারা কল্যাণের উপর থাকবে। [বুখারী/১৮২৮-সাহল ইব্ন সাদ (রাঃ), ইব্ন মাজাহ/১৬৯৭, মুসলিম/২৪২১, তিরমিযী/৬৯৭, আবূ দাউদ/২৩৪৫]
১২। তোমাদের কেহ যদি ইফ্তার করে তাহলে সে যেন খেজুর দিয়ে ইফ্তার করে। কেহ যদি তা না পায় তাহলে যেন পানি দিয়ে ইফতার করে। কেননা পানি পবিত্র। [তিরমিযী/৬৯৩, ইব্ন মাজাহ/১৬৯৯]
১৩। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাগরিবের সালাত আদায়ের পূর্বে পাকা খেজুর দ্বারা ইফতার করতেন। আর যদি পাকা খেজুর না পেতেন, তখন তিনি শুকনা খেজুর দ্বারা ইফতার করতেন। আর যদি তাও না হত, তখন তিনি কয়েক ঢোক পানি দ্বারা ইফতার করতেন। [আবূ দাউদ/২৩৪৮]
১৪। কেহ যদি কোন সিয়াম পালনকারীকে (রোযাদারকে) ইফতার করায়, তাহলে তার জন্যও অনুরূপ (সিয়ামের) সাওয়াব হবে। কিন্তু এতে সিয়াম পালনকারীর সাওয়াবে কোন ঘাটতি হবেনা। [তিরমিযী/৮০৫-যায়িদ ইব্ন খালিদ জুহানী (রাঃ), ইব্ন মাজাহ/১৭৪৬] 
১৫। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাদ ইবনে মু‘আয (রাঃ)-এর এখানে ইফতার করেন, অতঃপর বলেন : তোমাদের এখানে রোযাদারগণ ইফতার করেছেন, নেককারগন তোমাদের খাদ্যদ্রব্য আহার করেছেন এবং ফিরিশতাগণ তোমাদের জন্য রাহমাত কামনা করেছেন। [ইব্ন মাজাহ/১৭৪৭]
১৬। ইফতারের পরে দু‘আ:-
ذَهَبَ الظَّمَأُ وَابْتَلَّتِ الْعُرُوقُ وَثَبَتَ الْأَجْرُ إِنْ شَاءَ اللهُ.
 উচ্চারণ : যাহাবায যামাউ ওয়াবতাল্লাতিল ‘উরূকু, ওয়া ছাবাতাল আজরু ইন্শাআল্লাহ। 
 অর্থ : পিপাসা মিটে গেল, শিরাগুলি সিক্ত হল এবং সিয়ামের সাওয়াবও আল্লাহ চান তো নির্ধারিত হয়ে গেল। [আবূ দাউদ/২৩৪৯]
  ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ কর্তৃক প্রকাশিত আল কুরআন ও হাদীস গ্রন্থ হতে সংকলিত।


   আরও সংবাদ