ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর, ২০২৫ ১১:৫৩ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৬৫ বার
সুদানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে আরএসএফ গত তিনদিনে বেসামরিক নাগরিকদের শহর থেকে পালানোর সময় কমপক্ষে দেড় হাজার মানুষকে হত্যা করেছে।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) এ তথ্য জানিয়েছে সুদান ডক্টরস নেটওয়ার্ক।
ওই মেডিকেল গ্রুপ এবং গবেষকদের মতে, সুদানের পশ্চিম দারফুর অঞ্চলের এল-ফাশার শহর দখলের সময় র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) এর আক্রমণে তারা নিহত হন।
দেশটির গৃহযুদ্ধের ওপর নজরদারিকারী সুদান ডক্টরস নেটওয়ার্ক এ পরিস্থিতিকে ‘সত্যিকারের গণহত্যা’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
গ্রুপটি বলেছে, আজ বিশ্ব যে গণহত্যা প্রত্যক্ষ করছে তা দেড় বছরের আগে থেকে চলা এল-ফাশারে ঘটে যাওয়া ঘটনা তারই ধারাবাহিকতা। গত দেড় বছরে বোমা হামলা, অনাহার এবং বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ডের মাধ্যমে ১৪ হাজারেরও বেশি বেসামরিক লোক নিহত হয়।
আরও বলা হয়েছে ‘হত্যা ও নির্মূলের একটি ইচ্ছাকৃত এবং পদ্ধতিগত অভিযানের’ অংশ হিসেবে এসব আক্রমণ চালানো হচ্ছে।
ইয়েলের হিউম্যানিটেরিয়ান রিসার্চ ল্যাব (এইচআরএল) থেকে গণহত্যার নতুন প্রমাণ উঠে আসার পর এই বিবৃতিটি এসেছে। এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে আরএসএফ প্রবেশের পর নেওয়া এল-ফাশারের স্যাটেলাইট ছবিতে মানবদেহের আকারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বস্তুর খণ্ড, পাশাপাশি মাটিতে রক্তের মতো লাল রঙের দাগ বিশাল অংশ জুড়ে দেখা গেছে।
আরএসএফ ২০২৩ সাল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়েছে, এ সংঘাতে কয়েক হাজার মানুষ নিহত এবং ১ কোটি ২০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
১৭ মাস ধরে অবরোধের পর রোববার দারফুরের এল-ফাশার শহরে সেনাবাহিনীর শেষ শক্ত ঘাঁটি দখল করে নেয় আরএসএফ।
বুধবার সুদান সরকার জানিয়েছে, শহরে কমপক্ষে ২ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে, অন্যদিকে সাহায্য সংস্থাগুলো বলছে তারা নৃশংসতার বিশ্বাসযোগ্য প্রতিবেদন পেয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে মৃত্যুদণ্ড, পালানোর পথে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর আক্রমণ এবং বাড়ি বাড়ি অভিযান।
সরকার আরও জানিয়েছে, শহরে যৌন সহিংসতা করা হচ্ছে, বিশেষ করে নারী ও কিশোরীদের ওপর।
এল-ফাশার দখলের ফলে দারফুরের বিশাল অঞ্চলের ওপর আরএসএফের প্রায় পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চলে আসে এবং দক্ষিণ সুদান সৃষ্টির এক দশকেরও বেশি সময় পর আরেকটি বিভক্তির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
সুদানের সেনাবাহিনী-সমর্থিত সরকার বুধবার আরও জানায়, আরএসএফ শহরটি দখলের সময় মসজিদে থাকা বেসামরিক নাগরিকদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে।
সুদান সরকারের মানবিক সহায়তা কর্মকর্তা মোনা নুর আল-দাইম বলেছেন, এল-ফাশারে আরএসএফের আক্রমণের সময় মসজিদ এবং রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবকদের লক্ষ্য করেও হামলা চালানো হয়। এতে ২ হাজারেরও বেশি বেসামরিক লোক নিহত হয়।
সূত্র: আল-জাজিরা