আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১ নভেম্বর, ২০২৫ ০৯:৫০ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৬৫ বার
আগামী নভেম্বরে বাংলাদেশে আসছেন ভারতীয় ধর্মপ্রচারক, লেখক ও বক্তা ডা. জাকির নায়েক। বর্তমানে মালয়েশিয়ায় থাকা জাকির নায়েক ভারতে ‘পলাতক’ ঘোষিত এবং তার বিরুদ্ধে ‘গ্রেপ্তারি পরোয়ানা’ জারি আছে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার আসামি শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার বিষয়ে দিল্লি চুপ থাকলেও তারা চায়, বাংলাদেশ যেন মালয়েশিয়া থেকে ঢাকায় পা রাখলেই জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
গত বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রনধীর জয়সওয়াল ভারতের এ প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেন।
তাকে প্রশ্ন করা হয়, জাকির নায়েকের বাংলাদেশ সফরের বিষয়ে ভারত ঢাকার কাছে কোনো আহ্বান-অনুরোধ করেছে কি না।
জবাবে জয়সওয়াল বলেন, “জাকির নায়েক ‘পলাতক; তিনি ভারতে ‘ওয়ান্টেড’। তাই আমরা আশা করি, তিনি যেখানেই যান না কেন, সংশ্লিষ্ট দেশ তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে এবং আমাদের নিরাপত্তা উদ্বেগের বিষয়গুলো খেয়াল রাখবে।”
২০১৬ সালের আগ পর্যন্ত জন্মভূমি ভারতেই অবস্থান করছিলেন ডা. জাকির নায়েক। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইসলামিক সম্মেলন ও আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি বিশ্বজুড়ে খ্যাতি অর্জন করেন। কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর তার বিরুদ্ধে ‘ঘৃণামূলক বক্তব্য প্রচার’ ও অর্থপাচারের অভিযোগে একাধিক মামলা করা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় তার প্রতিষ্ঠিত ‘পিস টিভি’র সম্প্রচারও।
এই পরিস্থিতিতে ২০১৬ সালে ভারত ছেড়ে মালয়েশিয়ায় আশ্রয় নেন ৬০ বছর বয়সী এই ধর্মপ্রচারক। সেখানেই তিনি স্থায়ীভাবে থাকার অনুমতি পান।
ভারতে ফেরার বিষয়ে জাকির নায়েক একাধিকবার বলেছেন, ‘ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত আমি দেশে ফিরব না।’ ফলে বর্তমানে তিনি ভারতের বিচারিক আওতার বাইরে রয়েছেন।
২০১৬ সালে ঢাকার হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর অন্তত দুই হামলাকারী জাকির নায়েকের বক্তব্য থেকে অনুপ্রাণিত ছিল—বলে সেসময় তথ্য প্রকাশের পর তৎকালীন হাসিনার সরকার বাংলাদেশেও তার প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। কিন্তু জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর অনেক নীতিমালার মতো সেই নিষেধাজ্ঞাও শিথিল হয়েছে।
আগামী ২৮ ও ২৯ নভেম্বর জাকির নায়েক বাংলাদেশের একটি দাতব্য অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ঢাকায় আসছেন। স্পার্ক ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের আয়োজনে অনুষ্ঠানটি আগারগাঁও এলাকায় হওয়ার কথা। জাকির নায়েকের এই সফর ঘিরে নতুন করে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে প্রায় ১৪শ’ ছাত্র-জনতা হত্যাকাণ্ডে সমন্বয়কের ভূমিকায় থাকা শেখ হাসিনার বিচার শুরু হয়েছে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। তাকে বিচারের মুখোমুখি করতে ফেরত আনার জন্য ঢাকা নানাভাবে দিল্লির সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। কিন্তু এ বিষয়ে বরাবরই নীরবতা দেখিয়ে আসছে ভারত।
ফলে হাসিনা ইস্যুতে মুখে কুলুপ আঁটা ভারত জাকির নায়েক ইস্যুতে বাংলাদেশের পদক্ষেপ প্রত্যাশা করা নিয়েও নানা মুখরোচক আলোচনা তৈরি হয়েছে।