স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ নভেম্বর, ২০২৫ ১০:৫২ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৫২ বার
দেশজুড়ে ক্রিকেটের মাঠ সংকট নিয়ে ক্ষোভ ঝাড়লেন বিসিবি পরিচালক ও বয়সভিত্তিক ক্রিকেট কমিটির চেয়ারম্যান আসিফ আকবর। তার দাবি, দেশের প্রায় সব জেলা স্টেডিয়ামই এখন ফুটবলের দখলে, এমনকি ফুটবলারদের অব্যবহারযোগ্য আচরণের কারণেও নিয়মিত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ক্রিকেটের উইকেট। পরিস্থিতি নিরসনে প্রয়োজনে বাফুফের সঙ্গে ‘মারপিট করেও’ মাঠ ফিরে আনার কথা বলেন তিনি।
আজ ঢাকার একটি হোটেলে শুরু হওয়া দুদিনব্যাপী বাংলাদেশ ক্রিকেট কনফারেন্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়েই এ বিস্ফোরক মন্তব্য করেন জনপ্রিয় এই সংগীতশিল্পী ও নতুন বিসিবি পরিচালক। দেশের জেলা ক্রিকেট প্রেসিডেন্ট, কোচ, কর্মকর্তা ও নারী উদ্যোক্তারা অংশ নিয়েছেন এই আয়োজন।
নিজ জেলা কুমিল্লার উদাহরণ টেনে আসিফ জানান, এবার সেখানে লিগ আয়োজন করতে হচ্ছে ম্যাটিং উইকেটে। কারণ, স্টেডিয়াম ফুটবলের দখলে। এখানেই ফুটবলার ও বাফুফের প্রতি তির ছুড়লেন তিনি। বলেন, ‘সারা দেশে ফুটবলারদের জন্য ক্রিকেট খেলা যাচ্ছে না। এরা উইকেট ভেঙে ফেলে। কুমিল্লার লিগ তো এখন ম্যাটে হবে। প্রাগৈতিহাসিক আমলের ক্রিকেট হবে। আমরা কখনও এমন পরিবেশে খেলিনি।’
আসিফ আরও অভিযোগ করেন, শুধু কুমিল্লাই নয়, প্রতিটি জেলা স্টেডিয়ামেই একই অবস্থা। তিনি বলেন, ‘আগামী ২৪ তারিখ আবাহনী-মোহামেডান ফুটবল ম্যাচ আছে কুমিল্লায়। যেখানে ফুটবলের দরকার নেই, সেখানেও স্টেডিয়াম অকুপাই করে রেখেছে। ফুটবলারদের ব্যবহার খুব খারাপ। ক্রিকেট কিন্তু ডিসিপ্লিনড, আভিজাত্যের খেলা। এখানে নিয়ম আছে, রেকর্ড আছে।’
বাফুফের সঙ্গে আলোচনায় বসতে বিসিবি সভাপতি ও সিনিয়র বোর্ড পরিচালকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি, ‘আমাদের বোর্ড সভাপতিকে অনুরোধ করব, বাফুফের সঙ্গে অনতিবিলম্বে বসেন। আমরা মারামারি করতে চাই না, কিন্তু প্রয়োজন হলে করব। বাচ্চাদের খেলতে দিতে হবে আমাদের।’
বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্ট, স্কুল ক্রিকেট, ট্যালেন্ট হান্টসহ সামনে বিসিবির কঠিন ব্যস্ত সূচি। মাঠ সংকটে এসব আয়োজনই বাধাগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা আসিফের, ‘আমরা লিগ শুরু করতে না পারলে তো সমস্যা। তার ভেতরে স্কুল ক্রিকেট, বয়সভিত্তিক ক্রিকেট, ট্যালেন্ট হান্ট, হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে সবই আছে। মাঠ না পেলে এগোবে কীভাবে?’
কুমিল্লায় ম্যাটিং উইকেটে খেলার বিষয়টি আবারও টেনে এনে তিনি বলেন, দেশের ক্রিকেটকে পেছনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জোর করে, ‘এভাবে ৩০ বছর পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে আমাদের। ফুটবলের সঙ্গে একটা হেস্তনেস্ত করা দরকার।’
নিজের স্বভাবের কথা উল্লেখ করে আরও বলেন, প্রয়োজনে তিনি মাঠে নেমে লড়াইতেও প্রস্তুত। তার ভাষায়, ‘ক্রিকেটের মানুষ একটু ভদ্র। আভিজাত্যের জায়গা আছে। কিন্তু আমি অত ভদ্র নই। ফুটবল যদি মারমিট করে, আমিও করব। আমরা তো চাঁদা চাইছি না, কিডনি চাইছি না। আমরা চাইছি খেলার অধিকার।’
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) প্রতিও তার দাবি, সব খেলাকে কেন্দ্র করে বছরে আলাদা সময় বরাদ্দ করে স্পষ্ট ক্যালেন্ডার করা জরুরি, ‘বাংলাদেশের তৃণমূল থেকে শুরু করে সারা দেশে ক্রিকেটের উন্মাদনা আছে। তাহলে ফুটবল এখন কেন সব দখলে রাখবে? আমরা এনএসসির কাছে বাৎসরিক ক্যালেন্ডার চাই। কোন খেলাটি কবে হবে, কতদিন হবে—এটার নীতিমালা তৈরি করার সময় এসেছে।’