ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের অর্জনকে ব্যর্থ করার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে - এস এম আকাশ

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০৯:৫৮ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ২৩০ বার


ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের অর্জনকে ব্যর্থ করার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে - এস এম আকাশ

ছাত্রজনতার রক্তক্ষয়ী মরণপণ আন্দোলনে লজ্জাজনক পতন ঘটেছে  স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের। জনতার রুদ্ররোষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু পদত্যাগই করেননি, রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে বঙ্গভবন থেকেই সামরিক হেলিকপ্টারে দেশ ছাড়েন। এসময় তার ছোট বোন শেখ রেহানাও তার সঙ্গে ছিলেন। সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট মতে, শেষ সময়েও অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ এবং আরো রক্তপাতের মাধ্যমে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার চেষ্টা করেন তিনি। এর জন্য প্রায় এক ঘণ্টা ধরে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের চাপ প্রয়োগ করেন। পরিস্থিতি যে একেবারেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে তা তিনি কিছুতেই মানতে চাননি। তার দৃঢ় অবস্থান ছিল, যাই ঘটুক ক্ষমতা তিনি ছাড়বেন না। এমন অবস্থায় পরিবারের সদস্যরাসহ বোঝানোর পর পদত্যাগে তিনি রাজি হন। এরপর খুব দ্রæত পদত্যাগ করে গোপনে দেশ ছাড়েন।  
গণঅভ্যুত্থানের মুখে কোনো শাসকের এভাবে পদত্যাগ ও পলায়ন বাংলাদেশের ইতিহাসে যেমন নজিরবিহীন, তেমনি এই ঘটনায় এটাও স্পষ্ট যে, শেখ হাসিনা ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার জন্য পুলিশ, আনসার,  র‌্যাব, বিজিবির পাশাপাশি সামরিক বাহিনীর শক্তিকেও ছাত্রজনতার বিরুদ্ধে অপপ্রয়োগের কম চেষ্টা করেননি। কিন্তু সত্য হচ্ছে, এরপরও তার শেষ রক্ষা হয়নি। এমনকি তার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে গত সাড়ে পনের বছর যারা এই দেশটাকে যথেচ্ছ লুটপাট করেছেন, সম্পদের পাহাড় গড়েছেন, সব সংকটে পাশে থাকার চটকদার প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন, তারা কেউই এই বিপদের সময় তার পাশে এসে দাঁড়াননি, বরং “চাচা আপন প্রাণ বাঁচা” বলে  পরিবার পরিজন নিয়ে তারা আগেই শটকে পড়েছেন। 
বস্তুত, স্বৈরাচারের পরিণতি এরকমই হয়। ইতিহাসে দেখা যায়, কোনো স্বৈরশাসকই গণধিক্কৃত না হয়ে ক্ষমতার মোহ ত্যাগ করতে পারে  না। শেখ হাসিনার ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম কিছু ঘটেনি। ১৯৭১ সালে বর্বর পাক বাহিনী আত্মসমর্পণের আগে যেমন নৃশংসভাবে বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ড চালায়, তেমনি  শেখ হাসিনা পদত্যাগ ও পলায়নের আগ মুহূর্তে দেশের সবচেয়ে মেধাবী তরুণদের ওপর জনগণের কষ্টার্জিত অর্থে লালিত রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বাহিনী ও দলীয় সশস্ত্র ক্যাডারদের লেলিয়ে দিয়ে গোটা দেশকে পরিণত করেন ভয়ঙ্কর এক মৃত্যু-উপত্যকায়। গত পয়লা  জুলাই শিক্ষার্থীরা যখন সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটার অবসানের দাবি জানিয়ে আন্দোলন শুরু করেন, তখন তা ছিল সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ বা অহিংস। সকলেই লক্ষ্য করেন, তখন শেখ হাসিনা নিজেই এ আন্দোলনে ঘি ঢালেন। দম্ভোক্তি করে তিনি  আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর লেলিয়ে দেন সশস্ত্র দলীয় ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বাহিনী। তার দলের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের হুঙ্কার ছাড়েন, আন্দোলনকারীদের শায়েস্তা করার জন্য ছাত্রলীগই যথেষ্ট। এরপর পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ছাত্রলীগ নিরীহ ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর নৃশংস যে বর্বরতা চালায় তা ১৯৭১ সালে হানাদার বাহিনীর হত্যা-নিপীড়নকেও যেন হার মানায়। স্বাভাবিকভাবেই এমন পরিস্থিতিতে নব্য হানাদারদের বিরুদ্ধে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে গোটা দেশ, এমনকি বহির্বিশ্বও। বিশ্বের বহু দেশেই বিক্ষোভ-মিছিল-সমাবেশ হয় স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের হত্যা-নির্যাতন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে। ১৬ জুলাই রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদ শহীদ হলে তার উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে।  শেখ হাসিনা একদিকে মুখে আলোচনার কথা বলেন, অন্যদিকে তার বিভিন্ন পেটোয়া বাহিনী দিয়ে ছাত্রজনতার ওপর চালান নিষ্ঠুর আক্রমণ। সংবাদমাধ্যমে গত ১৩ আগস্ট  পর্যন্ত ৮৭৫ জন শহীদ হওয়ার তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। আহতের  সংখ্যা হাজার হাজার। আটক করা হয় প্রায় ১২ হাজার মানুষকে। মামলা করা হয় প্রায় ৮০০, যার উল্লেখযোগ্য অংশই গণমামলা। হতাহত ও গুমের প্রকৃত সংখ্যাটা জানতে আরো সময় লাগবে। স্বৈরাচারী সরকারের ভয়ঙ্কর দমন-পীড়নের একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেন দল-মত ধর্মবর্ণ-শ্রেণিপেশা নির্বিশেষে দেশের সর্বস্তরের মানুষ। দেখা যায়, কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী, শিক্ষক, আইনজীবী, অভিভাবক, নারীসমাজ, শিল্পী, শ্রমিক, সামরিক ও বেসামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ কোনো শ্রেণি-পেশার সচেতন বিবেকবান মানুষ ঘরে বসে থাকেননি। 
 সবকিছু মিলিয়ে অভ‚তপূর্ব এক গণজাগরণের ঘটনা ঘটে। সরকারের লেলিয়ে দেয়া বিভিন্ন বাহিনী কর্তৃক হত্যা, গুম, গ্রেফতার, নির্যাতন-নিপীড়ন এবং দাবি মেনে নেয়া প্রশ্নে প্রতারণা-প্রহসনমূলক আচরণের কারণে শিক্ষার্থীদের ৯ দফার আন্দোলন শেষ পর্যন্ত  প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফার আন্দোলনে পরিণত হয়।
 বলার অপেক্ষা রাখে না, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর সরকার শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেয়ার ঘোষণা দেয়। শিক্ষামন্ত্রী ঘোষণা দেন তাদের কোনো ধরনের প্রশাসনিক হয়রানি করা হবে না। কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে, বাস্তবে এর কোনো প্রতিফলন ঘটতে দেখা যায়নি। বরং বাস্তবে চলে ভয়াবহ দলন-পীড়ন। শুধু বাড়িঘর থেকে নয়, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায়ও অসংখ্য শিক্ষার্থীকে তুলে নেয়া হয়। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ নিরাপত্তা দানের নামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে হাসপাতালসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে তুলে নিয়ে নানা ধরনের নাটক করে।
কথায় আছে, ‘ঠেলার নাম বাবাজি’। শিক্ষার্থীরা সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন শুরুর পর প্রধানমন্ত্রী আটক সাধারণ শিক্ষার্থীদের মুক্তির নির্দেশ দেন। প্রতিটি হত্যাকান্ডের বিচার হবে বলেও আশ্বাস দেন। গণভবনে পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘গণভবনের দরজা খোলা। কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আমি বসতে চাই। তাদের কথা শুনতে চাই। আমি সংঘাত চাই না।’ কিন্তু ততক্ষণে বড় দেরি হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীরা প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান  করে। তারা বুঝতে পারে এটা একটা ফাঁদ, ‘একপাশে দরজা খোলা অন্যপাশে গুলি’। শিক্ষার্থীরা তার ওই ফাঁদে পা দেননি। তাদের অবস্থান, যারা খুনি তারা আবার কী বিচার করবে! খুনিদের কাছে আমরা বিচার চাইতে পারি না। তাই সবার আগে চাই স্বৈরাচারী সরকারের পদত্যাগ। এরপর আর বেশি সময় লাগেনি শিক্ষার্থীদের। সারাদেশে জেগে ওঠে সর্বস্তরের মানুষ। রাজধানী ঢাকা রূপ নেয় মহাজনসমুদ্রে। কোনো স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ছাত্রজনতার এত বড় ঢল ও রুদ্ররোষ বাংলাদেশ, পাকিস্তান, বৃটিশ কোনো আমলেই আর দেখা যায়নি। সেক্ষেত্রে ইতিহাসে স্বৈরাচার হিসেবে শেখ হাসিনার নাম সবার উপরে জায়গা করে নেবে বলে মনে করা যায়। 
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, শিক্ষার্থীদের এক দফা আন্দোলনের পটভ‚মি নিছক এক মাস বা ৩৬ দিনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বরং এটা স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের দীর্ঘ সাড়ে পনের বছরের দুঃশাসন-অপশাসন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর শেখ হাসিনা দেশের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠিত নির্বাচন ব্যবস্থাকে কুক্ষিগত করে তাঁর একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার জন্য আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে তত্ত¡াবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধান থেকে বিলুপ্ত করেন। বিডিআর হত্যা, শেয়ারবাজার লুণ্ঠন, ব্যাংক ডাকাতি, রিজার্ভ চুরি, বিদেশে অর্থপাচার, বিরোধীদের গুম-খুন, গ্রেফতার-মামলা-রিমান্ডে নির্যাতন, তিনবার নির্বাচিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সাজানো মামলায় কারারুদ্ধ করা, তাঁকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে না দেয়া, তারেক রহমানকেও সাজানো মামলায় ফাঁসানো এবং নির্বাসিত জীবনযাপনে বাধ্য করা, দেশের একমাত্র নোবেলজয়ী ড. মুহম্মদ ইউনূসকে নানাভাবে অপমান ও হেনস্তা করা, উন্নয়নের নামে যথেচ্ছ লুটপাট, সীমিত আয়ের সাধারণ মানুষের ওপর দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়া দাবড়ে দেয়াসহ হেন নির্যাতন-নিপীড়ন-নিষ্পেষণ নেই যা তার শাসনকালে ঘটেনি। লুটেরা বাহিনী তৈরি করে দেশের অর্থনীতিকে ফোকলা করে দেয়া হয়েছে। বিশ্বের কোনো কোনো দেশে গণতন্ত্র না থাকলেও অন্তত গণমাধ্যমের স্বাধীনতা থাকে। কিন্তু বাংলাদেশে কোনোটাই ছিল না। বিরোধীদলকে দমনের মত গণমাধ্যমকে কঠোরহাতে দমন করা হয়। মোটকথা, নানা কারণে অনেক আগে থেকেই শেখ হাসিনা সরকারের ওপর ক্ষুব্ধ দেশের বেশিরভাগ মানুষ। 
বলা যায় সেই পুঞ্জীভ‚ত ক্ষোভেরই বিস্ফোরণ ঘটে শিক্ষার্থীদের অসহযোগ আন্দোলনে। এই বিষয়টি একপ্রকার প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছিল যে, শেখ হাসিনা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ধ্বংস করে যেভাবে দেশ ও জাতির কাঁধে চেপে বসেছেন তাকে বোধহয় কোনোদিন আর সরানো যাবে না। কিন্তু ছাত্র-জনতা সেটা ভুল প্রমাণ করেছেন গণআন্দোলনের মাধ্যমে। তারা দেখিয়ে দিয়েছেন কোনোকিছুই অসম্ভব নয়। দরকার মেধা, প্রজ্ঞা, সৎসাহস ও যোগ্য নেতৃত্ব। আমরা আন্দোলনকারী সকল শিক্ষার্থীকে অভিবাদন জানাই। সেই সঙ্গে অভিনন্দন জানাই তাদের অভিভাবক ও সর্বস্তরের সাধারণ মানুষকে যারা শিক্ষার্থীদের পাশে এসে আন্দোলনকে অতি অল্পসময়েই বিস্ফোরণে রূপ দেন। অভিনন্দন বিএনপিসহ অপরাপর সকল রাজনৈতিক দলকে, নেপথ্যে থেকে যাদের অংশগ্রহণ আন্দোলনের বিজয়কে অনিবার্য করে তোলে। আন্দোলনের শেষ মুহূর্তে অনিবার্য রক্তপাত এড়াতে সেনাবাহিনী যে বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতার পরিচয় দেয় তাও ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। একটি নতুন যুগের উন্মেষ ঘটাতে এই আন্দোলনে যাঁরা প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন তাঁদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা, তাঁদের ঋণ কোনোদিন কোনোভাবেই শোধ করা যাবে না। দেশ ও জাতি তাঁদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকবে। 
স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর লক্ষ্য করা যাচ্ছে মহলবিশেষের নানা চক্রান্ত। পরিষ্কার হয়ে উঠেছে পতিত স্বৈরাচার ও তার দোসররা ছাত্র-জনতার এই গণঅভ্যুত্থান কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। তারা জুডিশিয়াল ক্যু , আনসার পরিচয়ে সচিবালয় ঘেরাও, সংখ্যালঘু নির্যাতনের নামে প্রোপাগান্ডা, দাবি আদায়ের নামে রাস্তা দখল করে রাখা, চোরাগোপ্তা হামলা, ডাকাতিসহ নানা বেশ ধারণ করে অঘটন ঘটানোর একের পর এক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এর বাইরে আছে আন্দোলনে অংশ নেয়া বিভিন্ন দলের মধ্যে বিভেদ বা দূরত্ব সৃষ্টির চক্রান্ত। ফলে এসব চক্রান্তের ব্যাপারে দেশের জনগণের সতর্ক থাকা সময়ের দাবি। মনে রাখা প্রয়োজন, ‘স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে তা রক্ষা কঠিন’। তাই সতর্ক থেকে যেকোনো ধরনের চক্রান্ত দেশের জনগণকেই ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দিতে হবে। এছাড়া যারা এই চক্রান্তে লিপ্ত হয়ে ছাত্রজনতার অর্জনকে ব্যর্থ করে দিতে চায় তাদের দ্রæত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।  
লেখক : সম্পাদক ও প্রকাশক, অপরাধ চোখ ২৪ ডটকম


   আরও সংবাদ